এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশজুড়ে তীব্র গরমের প্রকোপ চলছে। উত্তর ভারতের অনেক এলাকায় পারদ ৪৫ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে, যার ফলে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আবহাওয়া দপ্তর বেশ কয়েকটি এলাকায় পূর্ব-মৌসুমি কার্যকলাপ এবং পশ্চিমী বায়ুর প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে।
আবহাওয়ার খবর: দিল্লি-এনসিআর সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এখনও তীব্র গরমের প্রকোপ চলছে। এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) আজকের জন্য দেশজুড়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে। দপ্তরের মতে, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু এলাকায় গরম এবং লু-এর অবস্থা অব্যাহত থাকবে, যার ফলে মানুষকে সাবধান থাকার প্রয়োজন। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতের অনেক এলাকায় বৃষ্টি এবং বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে পশ্চিমী বায়ু এবং পূর্ব-মৌসুমি কার্যকলাপকে দায়ী করা হচ্ছে, যার ফলে কিছু রাজ্যে তাপমাত্রা কমতে পারে এবং মানুষ গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
দিল্লি-এনসিআর: গরমের পর সন্ধ্যায় বৃষ্টির আভাস
জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং তার সংলগ্ন এনসিআর অঞ্চল (গুড়গাঁও, নয়ডা, গাজিয়াাবাদ, ফরিদাবাদ) -এ মঙ্গলবার সারাদিন তীব্র রোদ এবং গরমের প্রকোপ ছিল। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে। তবে, সন্ধ্যার দিকে পশ্চিমী বায়ুর প্রভাবে হালকা বৃষ্টি এবং বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে রাতের সময় আবহাওয়া কিছুটা সুন্দর হতে পারে।
রাজস্থান: তপ্ত মরুভূমিতেও কিছুটা স্বস্তির আশা
রাজস্থানের পশ্চিম অংশ যেমন জয়সলমের, বারমের এবং বিকানেরে তাপমাত্রা ৪৪-৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। লু-এর অবস্থা অব্যাহত থাকবে, যার ফলে দুপুরের সময় বাড়ির বাইরে বেরোনো ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তবে, জয়পুর, কোটা, আজমেরের মতো শহরগুলিতে পশ্চিমী বায়ুর কারণে স্থানীয়ভাবে হালকা বৃষ্টি এবং ধুলোবালির ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি কমতে পারে।
পঞ্জাব এবং হরিয়ানা: দিনে লু, সন্ধ্যায় স্বস্তি
পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তীব্র গরম বাতাস বইবে। লুধিয়ানা, অমৃতসর, আম্বালা এবং রোহতকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত যেতে পারে। দুপুরের পর কিছু এলাকায় তীব্র বাতাস (৩০-৪০ কিমি/ঘন্টা) এবং হালকা বৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে কৃষক এবং অন্যান্য বহিরঙ্গন কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে তীব্র গরম
পূর্ব ইউপি (গোরখপুর, বালিয়া, আজমগড়) -এ তীব্র গরম এবং লু-এর প্রভাব দেখা যাবে, যেখানে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, পশ্চিম ইউপি (মেরঠ, মুরাদাবাদ, সাহারানপুর) -এ মেঘলা আকাশ থাকবে এবং হালকা বৃষ্টি বা ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। লখনউ এবং বারাণসীর মতো শহরগুলিতে দিন গরম থাকবে কিন্তু রাতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।
বিহার এবং ঝাড়খণ্ড: গরম বাতাস এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা
বিহার (পাটনা, গয়া, ভাগলপুর) এবং ঝাড়খণ্ড (রাঁচি, জামশেদপুর, ধানবাদ) -এ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া থাকবে। দুপুরের পর পূর্ব-মৌসুমি কার্যকলাপের ফলে তীব্র বাতাস (৪০-৫০ কিমি/ঘন্টা) সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে রাতে তাপমাত্রা কমতে পারে।
উত্তরাখণ্ড: পাহাড়ে স্বস্তি, সমভূমিতে ঘামের বৃষ্টি
উত্তরাখণ্ডের সমভূমি অঞ্চল যেমন দেহরাডুন, হরিদ্বার, উধম সিং নগরে গরম এবং আর্দ্রতার প্রভাব থাকবে, যেখানে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির উপরে যেতে পারে। কিন্তু পাহাড়ি এলাকা যেমন মাসুরি, নৈনিতাল এবং উত্তরকাশীতে হালকা বৃষ্টি এবং বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। উচ্চ হিমালয় অঞ্চলে হালকা তুষারপাতও সম্ভব।
মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিসগড়: গরমের তীব্রতা
মধ্যপ্রদেশে গোয়ালিয়র, ভোপাল, ইন্দোরের মতো শহরগুলিতে গরমের সাথে সাথে মেঘও মন্ডলায়িত থাকবে। কিছু এলাকায় ধুলোবালির ঝড় এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮-৪০ ডিগ্রির মধ্যে থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ছত্তিসগড়ে রায়পুর এবং বিলাসপুরে বজ্রঝড়ের সাথে তীব্র বাতাস এবং বৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে।
