সুইজারল্যান্ড এখন সেসব দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছে যেখানে হিজাব বা বুর্কা পরা নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা ২০২৫ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ধর্মীয় পোশাকের নামে নিরাপত্তা ও সামাজিক ঐক্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড: সুইজারল্যান্ড সম্প্রতি পুরো মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। ১লা জানুয়ারি ২০২৫ থেকে এই আইন কার্যকর হবে, যার ফলে বুর্কা ও হিজাবের মতো পোশাক জনসাধারণের স্থানে পরা অনুমোদিত হবে না। সরকারের যুক্তি হলো, জনসাধারণের নিরাপত্তা ও সমাজে ঐক্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুর্কা নিষেধাজ্ঞার কারণ ও উদ্দেশ্য
সুইজারল্যান্ড সরকারের বক্তব্য, মুখ ঢাকার ফলে মানুষের পরিচয় গোপন করা সম্ভব হয়, যার ফলে অপরাধের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়াও, মহিলাদের স্বাধীনতা প্রদানের জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সমাজে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং পুরোপুরি সবল হতে পারে। সরকার মনে করে, এভাবে মহিলারা নিজেদের পরিচয় গোপন করার পরিবর্তে খোলাখুলিভাবে সমাজে সক্রিয় হবে।
বুর্কা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগকারী প্রথম দেশ: ফ্রান্স
২০১০ সালে ফ্রান্স বুর্কা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগকারী প্রথম দেশ ছিল। এই আইনের অধীনে জনসাধারণের স্থানে মহিলাদের মুখ ঢাকা পোশাক পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ফ্রান্স সরকার এটাকে মহিলা সবলীকরণ ও সমতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছিল। তবে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অনেক ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংগঠন আপত্তি জানিয়েছিল, এটা ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে।
অন্যান্য দেশে বুর্কা নিষেধাজ্ঞা
ফ্রান্সের পরে বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশও বুর্কা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ করেছে। বেলজিয়াম ২০০১ সালে জনসাধারণের স্থানে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করেছিল, আর নেদারল্যান্ডস ২০১৫ সালে জনসাধারণের পরিবহন, সরকারি অফিস, স্কুল ও হাসপাতালে এটাকে নিষিদ্ধ করেছিল। এছাড়াও, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক ও নরওয়ের মতো দেশেও বুর্কা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হয়েছে। এই দেশগুলো বলছে, জনসাধারণের নিরাপত্তা ও সামাজিক ঐক্য নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ প্রয়োজন।
মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় বুর্কা নিষেধাজ্ঞা
এই বিষয়টি শুধুমাত্র ইউরোপে সীমাবদ্ধ নয়। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কিছু দেশেও বুর্কা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তুরস্ক ও টুনিসিয়ায়ও কিছু জনসাধারণের স্থানে এই পোশাক নিষিদ্ধ। এই দেশগুলোতেও নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।