ভগবদ্গীতায় হাত রেখে কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শপথ গ্রহণ

ভগবদ্গীতায় হাত রেখে কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শপথ গ্রহণ
সর্বশেষ আপডেট: 14-05-2025

কানাডার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ পবিত্র ভগবদ্গীতায় হাত রেখে শপথ গ্রহণ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি-র সাথে একত্রে একটি উন্নত ও নিরাপদ বিশ্ব গঠনের জন্য কাজ করার প্রতিজ্ঞা করেছেন এবং নিজেকে গর্বিত বলে অভিহিত করেছেন।

কানাডার রাজনীতি: কানাডার রাজনীতিতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ আরও একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি পবিত্র হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ‘ভগবদ্গীতা’তে হাত রেখে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেছেন। অনিতা জানিয়েছেন, এই দায়িত্ব পেয়ে তিনি গর্বিত বোধ করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি-র সাথে मिलकर একটি উন্নত ও নিরাপদ বিশ্ব গঠনের জন্য কাজ করবেন।

কানাডায় ব্যাপক মন্ত্রিসভা পরিবর্তন

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সম্প্রতি তার মন্ত্রিসভায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। এই পরিবর্তনের ফলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি মেলোনি জোলির স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। জোলি এখন শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

মার্ক কার্নির মন্ত্রিসভায় নারীদের অংশগ্রহণ ৫০%। তিনি বলেছেন, তার মন্ত্রিসভা কানাডার জনগণের ইচ্ছা ও প্রয়োজন মাথায় রেখে পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করবে।

অনিতা আনন্দের ভারতের সাথে গভীর সম্পর্ক

অনিতা আনন্দের পরিবারের শিকড় ভারতে। তার পিতা তামিলনাড়ু থেকে এবং মা পাঞ্জাব থেকে। তবে পরে তারা কানাডায় গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। অনিতার জন্ম ১৯৬৭ সালে নোভা স্কটিয়ায়। তার বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক ছিলেন।

তিনি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। অনিতা সবসময়ই তার ভারতীয় ঐতিহ্যকে গর্বের সাথে স্বীকার করেছেন এবং প্রবাসী ভারতীয় দিবস, গণতন্ত্র দিবস ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ভারতের সাথে তার সম্পর্ক তুলে ধরেছেন।

রাজনীতিতে যাত্রা: ২০২৯ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়া পর্যন্ত

অনিতা আনন্দের রাজনীতিতে যাত্রা শুরু হয় ২০২৯ সালে, যখন তিনি প্রথমবারের জন্য ওকভিল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং ২০২৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ট্রেজারি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

২০২৫ সালের নির্বাচনে তিনি আবারও তার আসন ধরে রাখেন এবং মার্ক কার্নির সংখ্যালঘু সরকারে মন্ত্রিসভার সদস্য হন। অনিতা পেশায় আইনজীবী এবং অধ্যাপক এবং আইনের ক্ষেত্রে তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার অর্থ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অনিতা আনন্দের নিয়োগের ফলে ভারত-কানাডা সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হওয়ার আশা করা হচ্ছে। যখন তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা উন্নত করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে তিনি অর্থনৈতিক, কৌশলগত এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে নতুন দিক দান করবেন।

কানাডায় লিবারেল পার্টির সরকার

সম্প্রতি কানাডায় অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে লিবারেল পার্টি ৩৪৩টি আসনের মধ্যে ১৬৯টি আসন জিতেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ১৭২টি আসনের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু দলটি তিনটি আসনে পিছিয়ে ছিল। তারপরও, লিবারেল পার্টি সংখ্যালঘু সরকার গঠন করে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। এটি কানাডায় লিবারেল পার্টির ধারাবাহিকভাবে চতুর্থ সরকার।

অনিতা আনন্দের বিবৃতি

শপথ গ্রহণের পর অনিতা আনন্দ বলেছেন, "কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে একটি উন্নত ও নিরাপদ বিশ্ব গঠনের জন্য আমাদের দল সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সকলেই বিশ্ব মঞ্চে কানাডার ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করব।

Leave a comment