পাকিস্তানের প্রধান ধর্মীয় নেতা ও সংসদ সদস্য মওলানা ফজলুর রহমান গুরুতর সতর্কতা জারি করেছেন যে, বেলুচিস্তানের ৫-৭টি জেলা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারে, যা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত হতে পারে। তিনি পাকিস্তানের সংসদে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, দেশের বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল এবং পাকিস্তান ১৯৭১ সালের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে, যখন পূর্ব পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হয়েছিল।
বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতা এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন
ফজলুর রহমান অভিযোগ করেছেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেসামরিক সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে, যার ফলে দেশে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে, কোনও সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হলে ভৌগোলিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। মওলানার এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন বেলুচিস্তানের কিছু জেলায় স্বাধীনতার আন্দোলন তীব্র হচ্ছে এবং এর ফলে পাকিস্তান আবারও বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হতে পারে।
কুর্রাম অঞ্চলে বর্ধমান হিংসা
মওলানা ফজলুর রহমান পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল কুর্রামে চলমান হিংসার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে এবং নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া নতুন সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুর্রাম অঞ্চল ভারী অস্ত্রধারী যোদ্ধাদের সংঘর্ষের কারণে প্রায় বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বারবার যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করা হলেও হিংসা থামছে না।
বেসামরিক সরকারের সমালোচনা
মওলানা ফজলুর রহমান পাকিস্তানের বেসামরিক সরকারের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেছেন যে, যদি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া এবং উপজাতীয় অঞ্চলে কি ঘটছে, তাহলে হয়তো প্রধানমন্ত্রী বলবেন যে তিনি এর কোনও তথ্য পাননি। সেনাবাহিনীর নাম না নিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, পাকিস্তানে কোনও বেসামরিক সরকারের আসল নিয়ন্ত্রণ নেই।
মওলানা বলেছেন যে, পাকিস্তানে একটি ‘প্রতিষ্ঠান’ রয়েছে, যা গোপন কক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় এবং বেসামরিক সরকারকে সেই সিদ্ধান্তগুলিতে সম্মতি দিতে হয়। এই বক্তব্য পাকিস্তানে বর্ধমান অস্থিরতা এবং বেসামরিক সরকারের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে।
সংঘর্ষের সমাধান সময়মতো না হলে পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ
পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান অস্থিরতা ও হিংসার প্রসঙ্গে মওলানা ফজলুর রহমান সকল পক্ষের কাছে সংকটের সমাধান খোঁজার আবেদন করেছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি এই পরিস্থিতির সমাধান সময়মতো না হয়, তাহলে এর গুরুতর ও দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি হতে পারে।