বিদেশ সফরে সালমান খুরশিদের ৩৭০ ধারা ও কাশ্মীর উন্নয়ন বিষয়ক বক্তব্য

বিদেশ সফরে সালমান খুরশিদের ৩৭০ ধারা ও কাশ্মীর উন্নয়ন বিষয়ক বক্তব্য
সর্বশেষ আপডেট: 03-06-2025

সালমান খুরশিদ বিদেশ সফরকালে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরে উন্নয়নের কথা বলেছেন। তিনি ভারতের সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন, কিন্তু রাজনীতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

নয়াদিল্লি: কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা সালমান খুরশিদ সম্প্রতি বিদেশ সফরকালে ৩৭০ ধারা ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর সেখানে গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি দেখা গেছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের প্রচেষ্টাকেও তিনি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছেন। তবে, তার এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেক রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

দেশপ্রেমিক হওয়া কি কঠিন? সালমান খুরশিদের বেদনা

সালমান খুরশিদ তার এক্স (পূর্বের টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, "যখন আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক অভিযানে রত আছি, তখন দেখে দুঃখ হয় যে দেশে বসে মানুষ আমাদের রাজনৈতিক অনুগত্যের মূল্যায়ন করছে। দেশপ্রেমিক হওয়া কি এত কঠিন?" তার এই বক্তব্য ভারতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর প্রশ্ন তোলার বিরুদ্ধে ছিল। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কোনও একটা দলের নয়, বরং সমগ্র দেশের লড়াই।

৩৭০ ধারা নিয়ে সালমান খুরশিদের অবস্থান

জাকার্তায় এক অনুষ্ঠানে সালমান খুরশিদ বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর রাজ্যে উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেছেন, "৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর এই ধারণা ভেঙে গেছে যে জম্মু ও কাশ্মীর ভারত থেকে আলাদা। এখন এখানে গণতান্ত্রিক সরকার আছে। মানুষ ভোটে অংশগ্রহণ করছে এবং উন্নয়নও হচ্ছে।"

তার মতে, কিছু মানুষ কাশ্মীরকে পুরোনো যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু দেশকে আবার সেই অবস্থায় ফিরে যেতে দেওয়া হবে না। তার মতে, দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে, পুরোনো বিতর্কে জড়িয়ে থাকা যাবে না।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধতার আহ্বান

খুরশিদ বলেছেন যে ভারত সমগ্র বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হতে চায়। তিনি বলেছেন, "ভারত একস্বরে বলছে, আর সন্ত্রাসবাদ নয়। আমরা বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত কণ্ঠস্বরের আশা করি।" তার এই বক্তব্য ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের প্রসঙ্গে ছিল।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং বিতর্ক

সালমান খুরশিদের বক্তব্যের পর ভারতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিছু নেতা তার বক্তব্যকে দেশহিতকর বলে মনে করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ এটাকে কংগ্রেস দলের নীতির বিরুদ্ধে বলে মনে করছেন। অনেক নেতা প্রশ্ন তুলেছেন যে কংগ্রেস নেতা বিদেশে গিয়ে সরকারের নীতি সমর্থন করছেন, কিন্তু দেশে দলের অবস্থান আলাদা। এই বিষয়ে কংগ্রেস এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর কি সত্যিই পরিবর্তন এসেছে?

৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরে অনেক বড় বড় পরিবর্তন হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে, নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং নিরাপত্তার পরিস্থিতিতেও উন্নতি দেখা গেছে। তবে, অনেক স্থানীয় রাজনৈতিক দল এখনও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে এবং এটাকে জম্মু ও কাশ্মীরের অধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করছে। সালমান খুরশিদ তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি মনে করেন উন্নয়নের দিকে নেওয়া পদক্ষেপগুলি সঠিক এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে পুরোনো যুগে ফিরে যেতে দেওয়া উচিত নয়।

Leave a comment