রাহুল গান্ধীর ‘সারেন্ডার’ বক্তব্য: বিজেপি সাংসদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

রাহুল গান্ধীর ‘সারেন্ডার’ বক্তব্য: বিজেপি সাংসদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
সর্বশেষ আপডেট: 04-06-2025

লোকসভায় বিরোধী দলনেতা এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ‘সারেন্ডার’ সংক্রান্ত বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিজেপি সাংসদ সুধানশু ত্রিবেদী। সুধানশু ত্রিবেদীর অভিযোগ, বিরোধী দলনেতাকে উচিত ছিল নিজের কথা বলায় আরও সতর্কতা অবলম্বন করা।

নয়াদিল্লি: লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ‘সারেন্ডার’ সংক্রান্ত বক্তব্যের জোরালো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ সুধানশু ত্রিবেদী। রাহুল গান্ধীর ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ত্রিবেদী বলেন, কংগ্রেসকেই তাদের সমগ্র ইতিহাসে ঘটা ‘সারেন্ডার’গুলির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি কংগ্রেসের উপর দেশের সেনাবাহিনী ও আত্মসম্মানের অপমান করার অভিযোগ আনেন। সুধানশু ত্রিবেদী তাঁর আক্রমণে শুধু রাহুল গান্ধীকেই নয়, তাঁর দলের অতীত ইতিহাস ও কীর্তিকেও লক্ষ্যবস্তু করেছেন।

রাহুল গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন: ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর কেন সারেন্ডার করা হয়েছিল?’

রাহুল গান্ধীর ‘সারেন্ডার’ বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুধানশু ত্রিবেদী বলেন, “রাহুল গান্ধী, আপনি নিজেই বলুন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর কেন সারেন্ডার করা হয়েছিল?” তিনি কংগ্রেস পার্টির সেই কালো ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দেন যেখানে তারা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার সাথে লড়াই করেছিল। ত্রিবেদী বলেন, রাহুল গান্ধী এবং তাঁর দলের ইতিহাসে ‘সারেন্ডার’ এর অনেক কালো অধ্যায় রয়েছে, যা তারা ভুলতে পারে না।

সেনাবাহিনী ও দেশের বীরত্বের অপমান

সুধানশু রাহুল গান্ধীর উপর সরাসরি অভিযোগ আনেন যে, তিনি দেশের সেনাবাহিনী এবং দেশের আত্মসম্মানের অপমান করেছেন। তিনি বলেন, “হিন্দিতে একটি প্রবাদ আছে – নয়া মুল্লা জ্যাদা পিয়াজ খাতা হ্যা। ইহা তো ঐসা লাগ রহা হ্যা কি এক গায়র মুল্লা (রাহুল গান্ধী) ইতনা পিয়াজ খা রহা হ্যা কি উসে পাতা হী নহি চাল রহা কি ওহ ভারত কি সেনা ওর দেশ কি শৌর্য কা কিটনা বড়া অপমান কর রহা হ্যা।” এই প্রবাদটির মাধ্যমে ত্রিবেদী রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের তীব্রতা এবং দেশবিরোধী প্রবণতার উপর কটাক্ষ করেছেন।

পাকিস্তানের নেতাদেরও ছাড়িয়ে গেলেন রাহুল গান্ধী?

সুধানশু ত্রিবেদী বলেন, কংগ্রেসের নেতাদের নাম পাকিস্তানি মিডিয়া ও পাকিস্তানের সংসদে প্রায়শই উঠে আসে, কিন্তু রাহুল গান্ধী এমন বক্তব্য দিয়েছেন যা পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বা কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের প্রধানও দেননি। তিনি বলেন, “মাসুদ আজহার বা হাফিজ সঈদ-এর মতো সন্ত্রাসবাদীরাও এটা বলতে পারেনি যে ভারত ‘সারেন্ডার’ করেছে। রাহুল গান্ধী এই বিষয়ে তাদেরও ছাড়িয়ে যেতে চান কি? কি তিনি এখন পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন?”

সুধানশু ত্রিবেদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী একজন সিংহের মতো, যিনি ভারত মাতার গৌরব ও নিরাপত্তার রক্ষা করেন। এমন পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর মতো নেতার ‘সারেন্ডার’ বক্তব্য কেবল ভুল নয়, দেশের বিরুদ্ধেও।” তিনি বলেন, মোদীর নেতৃত্বের ক্ষমতা ও দেশপ্রেমের সামনে কংগ্রেসের সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে তীব্র কটাক্ষ

সুধানশু ত্রিবেদী রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক বোধগম্যতার উপরও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “যে নেতা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও তাকে পরাজয় মনে করেন এবং নিজের নির্বাচনের ফলাফলকে তিন অঙ্কের কম আসন পেয়েও সাফল্য মনে করেন না, তার বুদ্ধিমত্তার উপর প্রশ্ন তোলা জরুরী।” তিনি কংগ্রেসের উপর কটাক্ষ করে বলেন, রাহুল গান্ধী এবং তাঁর দলকে উচিত তাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা স্বীকার করা, দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিবর্তে।

প্রকৃতপক্ষে, রাহুল গান্ধী ভোপালে একটি রাজনৈতিক সভায় বলেছিলেন যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যা যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, সেখানে আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোন আসার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী অবিলম্বে ‘সারেন্ডার’ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে বিজেপি-আরএসএস-এর স্বভাব সর্বদা নতিস্থান। এই বক্তব্য দেশে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল এটিকে সেনাবাহিনী ও দেশের বিরুদ্ধে অপমানজনক বলে অভিহিত করেছে।

কংগ্রেসকে তাদের ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া

সুধানশু ত্রিবেদী এই সুযোগে কংগ্রেস পার্টির পুরানো কাজের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস স্বাধীনতার পর অনেকবার দেশের আত্মসম্মান ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করেছে। তিনি বলেন, আপনার দলের ইতিহাসে যা সারেন্ডার এবং পরাজয়ের অধ্যায় রয়েছে, তা ভুলে যাওয়া যায় না। তাই রাহুল গান্ধীর কাছে অনুরোধ, দেশের প্রতি সম্মান দেখান এবং এমন বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করুন যা দেশের সেনাবাহিনী ও জনতার অনুভূতিকে আঘাত করে।

Leave a comment