সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) প্রয়াগরাজে ২০২১ সালে সংঘটিত বুলডোজার অ্যাকশন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছে। কোর্ট প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, তারা ৫ জন যাচিকাকর্তাকে ১০-১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রদান করতে হবে।
নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট আজ (১ এপ্রিল) প্রয়াগরাজে ২০২১ সালে সংঘটিত বুলডোজার অ্যাকশন নিয়ে রায় দিয়েছে। কোর্ট প্রয়াগরাজ ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, তারা ৫ জন যাচিকাকর্তাকে ১০-১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ৬ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। কোর্ট মনে করেছে যে, নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ভেঙে ফেলা ভুল ছিল এবং এটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে।
কোর্ট তাদের আদেশে বলেছে যে, এই ক্ষতিপূরণ এজন্যও প্রয়োজনীয় যাতে ভবিষ্যতে সরকারগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে মানুষের বাড়ি ভাঙতে না পারে। রায়ে বিচারপতিরা সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিওর উল্লেখ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘর থেকে একটা মেয়ে তার বই নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া কার্যক্রম অবৈধ: সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট বুলডোজার অ্যাকশনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে বলেছে যে, নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ভেঙে ফেলা আইনগত প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন। কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে যে, এ ধরণের কার্যক্রম গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে উত্তরপ্রদেশের আম্বেদকর নগরের এক মেয়ে বুলডোজার দিয়ে ভাঙা বাড়ি থেকে বই বের করে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। কোর্ট এই ভিডিওর উল্লেখ করে বলেছে যে, এই ক্ষতিপূরণ এজন্যও প্রয়োজনীয় যাতে ভবিষ্যতে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া বাড়ি ভাঙার থেকে সরকারগুলো বিরত থাকে।
আগেও সুপ্রিম কোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল
এর আগে ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বুলডোজার অ্যাকশন নিয়ে তীব্র ভৎসর্না করেছিল। ভুক্তভোগীদের দাবি ছিল যে, রাজ্য সরকার ভুল করে তাদের জমি দাঙ্গাবাজ আতিক আহমদের সম্পত্তি বলে মনে করেছিল। এর ফলে প্রয়াগরাজে একজন আইনজীবী, একজন অধ্যাপক এবং আরও তিনজনের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট আগেও বলেছিল যে, যে বাড়িগুলো ভুল করে ভাঙা হয়েছে, রাজ্য সরকার তাদের নিজস্ব খরচে আবার তৈরি করবে।
আদালত সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছিল যে, যদি তারা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তাহলে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হলফনামা দাখিল করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া কারও বাড়ি ভেঙে ফেলা শুধু অবৈধ নয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনও। এই আদেশ ভবিষ্যতে সরকারগুলোর জন্য একটা কঠোর সতর্কবার্তা যে, আইন ও নাগরিক অধিকারের সম্মান সর্বোচ্চ।