লখনউয়ের লোকবন্ধু হাসপাতালে সোমবার রাতে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে, হঠাৎ করে হাসপাতালে আগুন লেগে যায়। আগুনের খবর পেলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কর্মীরা দ্রুত রোগীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা শুরু করে।
লখনউ: সোমবার রাতে শহরের লোকবন্ধু হাসপাতালে ভয়াবহ আগুনে হাসপাতালের আইসিইউ এবং মহিলা ওয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শর্ট সার্কিটের কারণে লাগা আগুনে হাসপাতালের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের শিখা এত তীব্র ছিল যে চারিদিকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এ সময় চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল কর্মীরা সকলেই রোগীদের বাইরে বের করে আনার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন, এবং মোট ২৫০ জন রোগীকে নিরাপদে অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এক রোগীর মৃত্যু এবং আতঙ্কের মধ্যে উদ্ধার কাজ
আগুনের খবর পেয়ে রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে অনেক আত্মীয়স্বজন তাদের পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে সাহায্যের আকুতি জানায়। এ সময় হাসপাতাল কর্মী এবং অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের নিরাপদে বের করে আনে। তবে, আগুনের কারণে এক রোগীর মৃত্যু হয়, যার নাম রাজকুমার প্রজাপতি (৬১)। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়।
শর্ট সার্কিটে আগুন, অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর পৌঁছাতে দেরি
আগুন লাগার পর হাসপাতালের প্রধান ফটক পর্যন্ত অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর গাড়ি পৌঁছাতে পারেনি, কারণ ফটকটি ছিল সংকীর্ণ। এক ঘন্টার চেষ্টার পর ছোট গাড়িগুলোকে হাসপাতালের ভেতরে পাঠানো হয়। ততক্ষণে আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। হাসপাতাল থেকে রোগীদের নিরাপদে বের করে আনার জন্য পুলিশ, হাসপাতাল কর্মী এবং অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা মোবাইলের আলোর সাহায্য নিয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ কাজের নির্দেশ দিয়েছেন
লখনউয়ের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক ঘটনার পর হাসপাতাল পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও ফোনে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ত্রাণ কাজের অবস্থা সম্পর্কে জেনেছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এসডিআরএফকে অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
যদিও আগুনের কারণে হাসপাতাল সম্পূর্ণ খালি করা হয়েছে, তবে উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জানিয়েছেন, স্থানান্তরিত সকল রোগীকে লোকবন্ধু হাসপাতালে যেমন চিকিৎসা দেওয়া হতো, তেমনই বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এছাড়াও, রোগীদের সিভিল, বলরামপুর, কেজিএমইউ এবং অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পর লখনউয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে এ ধরণের দুর্ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।