সংগঠন সৃজন অভিযানের অধীনে, কংগ্রেস পার্টি মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই পর্যবেক্ষকরা উভয় রাজ্যেই জেলা স্তরে সংগঠনমূলক কার্যকলাপকে শক্তিশালী করার দায়িত্বে থাকবেন।
নয়াদিল্লি: সংগঠনমূলক শক্তিবৃদ্ধির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে, কংগ্রেস পার্টি মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় জেলাধ্যক্ষদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে। পার্টি উভয় রাজ্যেই সংগঠন সৃজন অভিযানের অধীনে জেলা কংগ্রেস কমিটিতে পরিবর্তনের জন্য ৭১ জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশের জন্য ৫০ জন এবং হরিয়ানার জন্য ২১ জন পর্যবেক্ষক রয়েছেন।
এই প্রচেষ্টা পার্টির একটি বৃহৎ কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ, যার অধীনে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য স্থানীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।
গুজরাট মডেলের আদলে হবে নির্বাচন
কংগ্রেস সূত্রের মতে, পুরো প্রক্রিয়াটি গুজরাটে গৃহীত মডেলের উপর ভিত্তি করে হবে, যেখানে পার্টি জেলা স্তরে ব্যাপক আলোচনার পর নতুন অধ্যক্ষদের নিয়োগ করেছিল। এখন এই একই ব্যবস্থা মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর অধীনে পর্যবেক্ষকরা সংশ্লিষ্ট জেলাগুলি পরিদর্শন করবেন, স্থানীয় নেতা, কর্মী এবং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নেবেন এবং তারপর সম্ভাব্য নামগুলি নিয়ে আলোচনা করে উচ্চ কমান্ডকে তাদের রিপোর্ট জমা দেবেন।
মধ্যপ্রদেশের জন্য ৫০ জন মনোনীত
মধ্যপ্রদেশে, পার্টি ৫০ জন জ্যেষ্ঠ নেতাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছে। এই তালিকায় বিভিন্ন রাজ্যের অভিজ্ঞ এবং তরুণ নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে সপ্তগিরি শংকর উলাকা, গুরদীপ সিং সপ্পল, গিদুগু রুদ্র রাজু, যশোমতী ঠাকুর, আরাধনা মিশ্রা ‘মোনা’, গুরজিৎ সিং অজলা, ভাই জগতাপ, অজয় কুমার, রঘু শর্মা, কৃষ্ণ তীর্থ, অনিল চৌধুরী, মুরারী লাল মীণা প্রমুখ নেতারা উল্লেখযোগ্য।
এই নেতাদের সেসব জেলায় পাঠানো হবে যেখানে সংগঠনমূলক পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বোধ করা হচ্ছে। পার্টি সূত্রের মতে, এই প্রক্রিয়াটি জুনের শেষের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে, যাতে নতুন দল সময়মতো কাজ শুরু করতে পারে।
হরিয়ানায়ও পরিবর্তনের বাতাস
হরিয়ানায়ও কংগ্রেস ২১ জন নেতার একটি দল গঠন করেছে, যারা জেলাধ্যক্ষ নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। এই তালিকায় মানিকম ট্যাগোর, বর্ষা গায়কওয়াদ, জি.সি. চন্দ্রশেখর, লালজি দেসাই, জয় সিং আগরওয়াল, রফিক খান, কুলজিৎ সিং নাগরা, বিজয় ইন্দর সিংলা, চল্লা বামশী চন্দ্র রেড্ডী প্রমুখ নেতা রয়েছেন। হরিয়ানা কংগ্রেস গত কয়েক সময় ধরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং নেতৃত্বের অসন্তোষের সম্মুখীন হচ্ছে। তাই নতুন জেলাধ্যক্ষদের নিয়োগকে সংগঠনকে সুষম এবং শক্তিশালী করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে। কংগ্রেস হাইকমান্ড চায় যে স্থানীয় কর্মীদের নেতৃত্বে আরও বেশি অংশগ্রহণ দেওয়া হোক।
খড়গের সরাসরি তত্ত্বাবধানে চলছে অভিযান
জানা গেছে, এই পুরো অভিযান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের সরাসরি তত্ত্বাবধানে চলছে। তিনি পার্টি মহাসচিব কে.সি. বেণুগোপাল এবং রাজ্য প্রভারী নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে নিয়োগে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। পার্টি নেতৃত্ব এবার কেবলমাত্র পুরোনো নেতাদের উপর নির্ভর করার পরিবর্তে, সক্রিয় এবং জনতার সাথে যুক্ত কর্মীদেরও জেলাধ্যক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে বিবেচনা করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের এই উদ্যোগ উভয় রাজ্যেই পার্টির কর্মক্ষমতায় নতুন দিক দিতে পারে। মধ্যপ্রদেশে, যেখানে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর পার্টি নতুন শক্তির সন্ধানে রয়েছে, সেখানে হরিয়ানায়ও বিজেপি-জেজেপি জোটের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য কংগ্রেসকে স্থানীয় স্তরে নতুন কৌশল এবং নেতাদের প্রয়োজন।
