অভিযুক্ত (আরোপী) জানিয়েছে যে, সে মৃতার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, যেমন জিম ব্যাগ এবং মোবাইল ফেলে দিয়েছে, যা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। এছাড়াও, আরোপীর নির্দেশনা অনুযায়ী মৃতার মানব কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে, যা এই মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।
কানপুর: উত্তরপ্রদেশের কানপুরে ঘটাচ্ছিল এমন একতা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে পুলিশ বড় সাফল্য পেয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত জিম ট্রেনার বিমলকে ৪৮ ঘন্টার জন্য কাস্টডি রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে। এর ফলে পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করতে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারবে।
বিমলকে আজ জেল থেকে বের করে তদন্তকারীর কাছে হস্তান্তর করা হবে, এবং পুলিশ এখন মৃত একতার মোবাইল এবং জিম ব্যাগ উদ্ধারের চেষ্টা করবে। পুলিশ সাত দিনের কাস্টডি রিমান্ড চেয়েছিল, কিন্তু আদালত মাত্র দুই দিনের সময় দিয়েছে। এই মামলায় বিমলকে আদালতে তলব করা হয়েছিল, সেখান থেকে তাকে কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে।
আরোপী এখন পর্যন্ত যা স্বীকার করেছে
কানপুরের একতা হত্যাকাণ্ডে তদন্তকারী ধর্মেন্দ্র কুমার রাম আদালতে যে আবেদনপত্র দিয়েছেন, তাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন যা তদন্তের সময় উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন যে, বিমল পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে, সে মৃত একতা গুপ্তাকে কোথায় মাটিতে পুঁতেছে সে সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে এবং সেই স্থানে রাতের বেলা খনন করে মৃতার মানব কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে।
বিমল তার বক্তব্যে আরও বলেছে যে, সে একতার জিম ব্যাগ এবং মোবাইল ফেলে দিয়েছে, যা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। এই বক্তব্যের ভিত্তিতে পুলিশ সেই জিনিসগুলির খোঁজ করছে, যা হত্যার প্রমাণ হতে পারে। তদন্তকারী আরও বলেছেন যে, মৃতাকে পুঁতে দেওয়ার জন্য যে গর্ত খনন করা হয়েছিল, তা খুব অল্প সময়ে খনন করা সম্ভব ছিল না, যা এই প্রশ্ন তোলে যে, বিমল কতদিন ধরে এটি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং তার উদ্দেশ্য কী ছিল।
বিমলের বক্তব্য অনুযায়ী, মৃতার মোবাইল এবং জিম ব্যাগ আলাদা আলাদা স্থানে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, এবং পুলিশকে এই জিনিসগুলি উদ্ধার করার জন্য বিমলের সাথে ঘুরে ঘুরে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন ছিল, কারণ এগুলি মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে। তবে, সময়ের অভাবের কারণে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি এবং অবশেষে তাকে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে।
আদালত রিমান্ডের জন্য এই শর্তাবলী নির্ধারণ করেছে
* রিমান্ডের সময়কাল: ৬ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে শুরু করে ৮ নভেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত।
* চিকিৎসা পরীক্ষা: রিমান্ডে নেওয়ার এবং জেলে প্রবেশ করানোর আগে অভিযুক্তের চিকিৎসা পরীক্ষা করা হবে।
* শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন: রিমান্ডের সময়কালে অভিযুক্তকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হবে না এবং তৃতীয় শ্রেণীর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না।
* মানবাধিকার: রিমান্ডের সময় অভিযুক্তের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে না, এ বিষয়টিও খেয়াল রাখা হবে।
* আইনজীবীর উপস্থিতি: রিমান্ডের সময় অভিযুক্তের আইনজীবী যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে সাথে থাকতে পারবেন।
আদালত মৃতার মায়ের ডিএনএ নমুনা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে
তদন্তকারী সংজয় কুমার সিংহ সিজেএম আদালতে একটি আবেদনপত্র দাখিল করেছেন, যাতে তিনি মৃত একতা গুপ্তার মায়ের সুনীতা গুপ্তার ডিএনএ নমুনা নেওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। তদন্তকারী আদালতকে জানিয়েছেন যে, একতার উদ্ধারকৃত অবশেষের সনাক্তকরণের জন্য সুনীতা গুপ্তার ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন, যাতে মৃতদেহের অবশেষের সাথে মৃতার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়। আদালত তদন্তকারীর আবেদন মঞ্জুর করে সুনীতা গুপ্তার ডিএনএ নমুনা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এর পর, মৃতার দেহাবশেষের সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।