বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরস্থিত জেষোরেশ্বরী মন্দির থেকে মা কালীর মুকুট চুরি হয়েছে। এই মুকুটটি ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্দির ভ্রমণকালে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। শ্যামনগর থানার ইন্সপেক্টর তৈজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চোর শনাক্ত করার জন্য মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ঢাকা: বাংলাদেশে ৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সাতক্ষীরার শ্যামনগরস্থিত জেষোরেশ্বরী মন্দির থেকে মা কালীর মুকুট চুরি হয়েছে। এই মুকুটটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২১ সালের মার্চ মাসে তাঁর ভ্রমণকালে মন্দিরে এটি উপহার দিয়েছিলেন। পিএম মোদী তাঁর ভ্রমণকালীন মন্দিরটি পরিদর্শন করেছিলেন এবং একটি ভিডিওও শেয়ার করেছিলেন। কোভিড মহামারীর পর এটি ছিল কোনও দেশে তাঁর প্রথম ভ্রমণ, যা এই উপহারের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
কালী মা মুকুট হারিয়ে গেছে
বাংলাদেশের জেষোরেশ্বরী কালী মন্দির থেকে মা কালীর মুকুট চুরির ঘটনা বৃহস্পতিবার দুপুর ২:০০ টা থেকে ২:৩০ টার মধ্যে ঘটে। সেসময় মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ মুখার্জী দিনের পূজা শেষ করে বাড়ি গিয়েছিলেন। সাফাই কর্মীরা যখন মন্দিরে পৌঁছান, তখন তারা দেখতে পান মা কালীর মাথার মুকুটটি নেই। এই মুকুটটি রুপো ও সোনার পাত দিয়ে তৈরি, এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে এর গুরুত্ব অপরিসীম। জেষোরেশ্বরী মন্দির হিন্দু পুরাণে ৫১টি শক্তিপীঠের একটি হিসেবে বিবেচিত।
এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা ১২শ শতাব্দীর শেষভাগে একজন ব্রাহ্মণ, আনারী কর্তৃক করা হয়েছিল। শ্যামনগর থানার ইন্সপেক্টর তৈজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চোর শনাক্ত করার জন্য তারা মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করছে।
১৬শ শতাব্দীতে হয়েছিল মন্দিরের পুনর্নির্মাণ
জেষোরেশ্বরী কালী মন্দিরের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব অপরিসীম। ১২শ শতাব্দীর শেষভাগে আনারী নামক এক ব্রাহ্মণ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরের সময়ের সাথে সাথে সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ হয়েছে।
* মন্দিরের গঠন: বলা হয় জেষোরেশ্বরী পীঠের জন্য ১০০টি দরজা বিশিষ্ট একটি বিশাল মন্দির তৈরি করা হয়েছিল।
* সংস্কার: ১৩শ শতাব্দীতে লক্ষ্মণ সেন এর দ্বারা পুনরায় সংস্কার করা হয়। পরবর্তীতে ১৬শ শতাব্দীতে রাজা প্রতাপাদিত্য এর দ্বারা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
* ধর্মীয় পটভূমি: হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এই মন্দির ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। বিশ্বাস করা হয় যে, এই ঈশ্বরীপুর মন্দির সেই স্থানে অবস্থিত যেখানে দেবী সতীর হাত ও পায়ের তালু পড়েছিল। এখানে দেবী জশোরেশ্বরী রূপে বাস করেন, আর ভগবান শিব চন্ডা রূপে প্রকাশিত হন।
* অবস্থান: জেষোরেশ্বরী কালী মন্দির সাতক্ষীরা উপজেলার শ্যামনগরে অবস্থিত এবং দেবী কালীকে উৎসর্গীকৃত। এই মন্দির কেবলমাত্র ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক।