পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম रहीম সিংহের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলায় সাজার স্থগিতাদেশের শুনানি আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছে। কোর্ট স্পষ্ট করেছে যে, পরবর্তী শুনানিতে তারা এই মামলায় সাজা স্থগিতাদেশের বিষয়ে তাদের রায় ঘোষণা করবে।
চণ্ডীগড়: ডেরা মুখী গুরমিত সিংহের সাজার বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট ২১ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত স্থগিত করেছে। কোর্ট এই মামলার শুনানির সময় স্পষ্ট করেছে যে, পরবর্তী শুনানিতে তারা সাজা স্থগিতাদেশের বিষয়ে তাদের রায় ঘোষণা করবে। গুরমিত সিংহকে ২০০৭ সালের আগস্টে পঞ্চকুলায় সিবিআই কোর্ট দুই সাধ্বীর যৌন নির্যাতনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ১০-১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। প্রথম মামলার সাজা তিনি শেষ করেছেন এবং এখন দ্বিতীয় মামলার সাজা শুরু হতে চলেছে।
গুরমিত রাম रहीমের সাজার মামলা
২০১৭ সালের আগস্টে পঞ্চকুলায় সিবিআই কোর্ট দুই সাধ্বীর যৌন নির্যাতনের মামলায় গুরমিত রাম रहीমকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০-১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। এই সাজার পর গুরমিত রাম रहीম পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছিলেন, যেখানে তিনি তার সাজার বিরুদ্ধে ন্যায়ের দাবি জানিয়েছিলেন।
হাইকোর্টে শুনানির সময় গুরমিত রাম रहीমের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, সিবিআই আদালত যথাযথ প্রমাণ ও সাক্ষীর অভাবে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে, যা সম্পূর্ণ ভুল। তারা অভিযোগ করেছিলেন যে, এই মামলায় এফআইআর দায়েরে অনেক দেরি হয়েছিল এবং এফআইআর একটি বেনামী অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়াও, তারা বলেছিলেন যে, যৌন নির্যাতনের বিবরণ ছয় বছর পরে রেকর্ড করা হয়েছিল, যখন তার আগে কোন অভিযোগকারী ছিলেন না। এই পুরো মামলার উপর হাইকোর্টে আগামী শুনানি হবে, যা ২১ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।
পীড়িতার আপিল
অন্যদিকে, দুই পীড়িতাও গুরমিত রাম रहीমের সাজার বিরুদ্ধে তাদের আপিল দায়ের করেছিলেন। এই পীড়িতারা হাইকোর্টের কাছে অনুরোধ করেছিলেন যে, ডেরা মুখীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হোক, যাতে তাদের সাথে ঘটা নির্যাতনের কঠোর প্রতিরোধ করা যায়। এই বিষয়ে হাইকোর্ট এই আপিল গ্রহণ করে পরবর্তী শুনানির জন্য বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল।
২০১৭ সালের অক্টোবরে হাইকোর্ট জরিমানার বিষয়ে রায় দিয়েছিল
হাইকোর্ট ২০০৭ সালের অক্টোবরে ডেরা মুখীর উপর আরোপিত জরিমানার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কোর্ট ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে গুরমিত রাম रहीমকে নির্দেশ দিয়েছিল যে, তিনি দুই মাসের মধ্যে এই টাকা সিবিআই কোর্টে জমা করবেন। এছাড়াও কোর্ট এই টাকা একটি জাতীয়কৃত ব্যাংকে এফডি হিসেবে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।
গুরমিত রাম रहीমের জেলের অবস্থা
গুরমিত রাম रहीমকে সুনারিয়া জেলে হত্যা ও ধর্ষণের মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ৯ই এপ্রিল তাকে ২১ দিনের ফারলো (অস্থায়ী ছুটি) দেওয়া হয়েছিল, যার পর তিনি সিরসায় অবস্থিত তার ডেরায় গিয়েছিলেন। এই সময় তিনি তার অনুসারীদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং ডেরার প্রতিষ্ঠা দিবসও পালন করেছিলেন। এরপর ২১ দিনের ফারলো শেষ হওয়ার পর ৩০ এপ্রিল তিনি সুনারিয়া জেলে ফিরে এসেছিলেন।
এর আগে গুরমিত রাম रहीমকে ২০২৫ সালের জানুয়ারীতে ৩০ দিনের প্যারোল দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে তিনি ১০ দিন সিরসা ডেরায় এবং ২০ দিন উত্তরপ্রদেশের বারনাওয়ায় কাটিয়েছিলেন। এখন ২১ দিনের ফারলোর সময় তিনি সিরসায় থেকে তার অনুসারীদের সাথে দেখা করে তার সংগঠনের কাজকর্ম দেখেছেন এবং ডেরার ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
সাজার উপর হাইকোর্টের আগামী রায়
এখন, গুরমিত রাম रहीমের সাজার উপর পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টের পরবর্তী রায় ২১ জুলাই ঘোষণা করা হবে। এই সময় কোর্ট সাজা স্থগিতাদেশের বিষয়ে তাদের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবে। হাইকোর্টের এই রায় এই মামলার দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, কারণ যদি সাজা স্থগিত করা হয়, তাহলে গুরমিত রাম रहीম জেল থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অন্যদিকে, যদি কোর্ট সাজা স্থগিতাদেশে অনুমোদন না দেয়, তাহলে গুরমিত রাম रहीমকে তার সাজা পুরো করতে হবে।
গুরমিত রাম रहीমের সমর্থক ও সমালোচক উভয়ই এই রায়ের প্রতি বেশ উৎসুক, কারণ ডেরা সচ্চা সৌদা প্রধানের সমর্থনে লাখ লাখ অনুসারী আছেন এবং তাঁর এই মামলা জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে আছে। এখন, ২১ জুলাইয়ের শুনানির পরেই স্পষ্ট হবে যে, গুরমিত রাম रहीমের সাজার উপর পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের কী সিদ্ধান্ত আসে।