গুজরাট অধিবেশন: কংগ্রেসের ‘স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ’ ঘোষণা

গুজরাট অধিবেশন: কংগ্রেসের ‘স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ’ ঘোষণা
সর্বশেষ আপডেট: 12-04-2025

৮৪তম অধিবেশনে গুজরাট থেকে কংগ্রেস একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে, যেখানে তারা স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধের ঘোষণা করেছে। এটি কেবলমাত্র ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং বিজেপি ও সংঘের সাম্প্রদায়িক আদর্শের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের সংগ্রামকে নতুন দিক দানের প্রচেষ্টা। সাबरমতী তীরে থেকে উঠে আসা এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিল কংগ্রেসকে কেবলমাত্র তার পুরানো ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত করা নয়, বরং বিজেপির চিন্তাধারার বিরুদ্ধে নিজের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা।

নতুন দিল্লি: কংগ্রেস তার রাজনৈতিক লড়াইকে নতুন দিক দিয়েছে, এটিকে কেবলমাত্র ক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং এটিকে একটি আদর্শগত সংগ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করেছে। বিশেষ করে গুজরাটে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ৮৪তম অধিবেশনের সময়, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে বিজেপি ও সংঘের বিরুদ্ধে এই সংগ্রামকে একটি বৃহৎ আদর্শগত যুদ্ধ হিসেবে দেখেছেন।

তিনি তুলনা করে বলেছেন যে, যেমন কংগ্রেস স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশ ও সংঘের আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, তেমনি আজ কংগ্রেস বিজেপি-সংঘের সাম্প্রদায়িক ও বিভাজনমূলক আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

কংগ্রেস এই সংগ্রামকে কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা হিসেবে না দেখে এটিকে "স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ" নাম দিয়েছে, এটি ইঙ্গিত করে যে এটি কেবলমাত্র ক্ষমতা অর্জনের প্রচেষ্টা নয়, বরং দেশের ঐক্য, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার লড়াই। এভাবে কংগ্রেস তার লড়াইটিকে একটি উচ্চ ও নৈতিক উদ্দেশ্যের সাথে যুক্ত করেছে, যা স্পষ্ট করেছে যে দলের উদ্দেশ্য কেবলমাত্র নির্বাচন জেতা নয়, বরং সমাজে বিভাজন ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া।

রাহুল গান্ধী কী বলেছেন?

গান্ধী ও প্যাটেলের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়কদের ভূমি থেকে এই ঘোষণা রাজনীতির নতুন সমীকরণের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, কংগ্রেস আজও সেই আদর্শ নিয়ে লড়াই করছে, যার অধীনে তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি বিজেপি-সংঘের সাম্প্রদায়িক আদর্শের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের সংগ্রামকে স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

রাহুল গান্ধীও এই উপলক্ষে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন যে, যদি কোনও আদর্শগত যুদ্ধে বিজেপিকে পরাজিত করতে পারে, তবে তা কেবলমাত্র কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই কৌশলের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল গুজরাটে বিজেপির সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ ভেদ করা। গুজরাটের রাজনীতিতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে তার আধিপত্য বজায় রেখেছে, এবং কংগ্রেস এখন এটিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কৌশল তৈরি করছে।

কংগ্রেসের 'মিশন গুজরাট'

কংগ্রেস এই লড়াইটিকে আরও শক্তিশালীভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গান্ধী ও প্যাটেলের আদর্শের আশ্রয় নিয়েছে। পাশাপাশি, তারা গুজরাটে সামাজিক ন্যায়, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলিতে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা করেছে। কংগ্রেসের পরিকল্পনা হল গুজরাটের উন্নয়নে কংগ্রেস সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা এবং প্রমাণ করা যে বিজেপির শাসনামলে অনেক ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়নি।

তবে, কংগ্রেসের জন্য এই চ্যালেঞ্জ সহজ হবে না। বিজেপির শক্তিশালী দখল এবং গুজরাটের জনগণের মধ্যে মোদী ও শাহের জনপ্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা একটি কঠিন কাজ। এছাড়াও, কংগ্রেসকে এখানে তাদের নেতৃত্বের অভাবেরও সম্মুখীন হতে হতে পারে, কারণ দলে তরুণ নেতৃত্বের অভাব অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেসের এই নতুন মিশন থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

Leave a comment