দিল্লির নবনির্বাচিত মেয়র রাজা ইকবাল সিংহ আবর্জনা সংগ্রহের ব্যবহারকারী চার্জ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সুবিধা আবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, যার ফলে দিল্লিবাসীরা বার্ষিক ৬০০ থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবেন।
দিল্লি সংবাদ: দিল্লি পৌর নিগম (এমসিডি)-এর নবনির্বাচিত মেয়র রাজা ইকবাল সিংহ দিল্লিবাসীদের জন্য একটি বড় সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, আবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য নেওয়া ব্যবহারকারী চার্জ (User Charge) এখন থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দিল্লির লক্ষ লক্ষ পরিবার বার্ষিক ৬০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন দিল্লিতে প্রথমবারের মতো কেন্দ্র, রাজ্য এবং পৌর নিগম—তিনটিতেই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর ত্রিমুখী সরকার গঠিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উন্নয়নমূলক কাজে রাজনৈতিক সংঘাতের পরিবর্তে সমন্বয় দেখা যাবে।
কী ব্যবহারকারী চার্জ এবং কেন তা ছিল বিতর্কিত?
দিল্লি সরকারের ঠোস বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উপনিয়ম (Solid Waste Management Bye-laws)-এর অধীনে, ৫০ বর্গমিটার পর্যন্ত সম্পত্তির জন্য ৫০ টাকা, ৫০ থেকে ২০০ বর্গমিটার পর্যন্ত সম্পত্তির জন্য ১০০ টাকা এবং ২০০ বর্গমিটারের বেশি আবাসিক সম্পত্তির জন্য ২০০ টাকা মাসিক ব্যবহারকারী চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এই চার্জটি সম্পত্তি করের সাথে আদায় করা হচ্ছিল, যার ফলে প্রতি বছর ৬০০ থেকে ২৪০০ টাকা অতিরিক্ত বোঝা পড়ছিল। আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার ১ এপ্রিল থেকে এই চার্জ প্রয়োগ করেছিল, যা এখন মেয়র প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
মেয়রের অগ্রাধিকার: পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে জলাবদ্ধতা পর্যন্ত
রাজা ইকবাল সিংহ বলেছেন যে, তাঁর কাজ কেবলমাত্র দপ্তরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তিনি নিজেই রাস্তায় নেমে পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করবেন এবং মানুষের সমস্যা শুনবেন।
তাঁর প্রধান অগ্রাধিকার হবে:
দিল্লির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থা উন্নত করা
- বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সমস্যা রোধ করা
- নালার সময়মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা
- আবর্জনার পাহাড় (ল্যান্ডফিল) নির্মূল করা
- বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা
ত্রিমুখী সরকার থেকে কী সুবিধা হবে?
এখন দিল্লিতে কেন্দ্র সরকার, দিল্লি সরকার এবং পৌর নিগম—তিনটিতেই বিজেপি সরকার রয়েছে। এতে নীতি নির্ধারণ এবং উন্নয়নমূলক কাজে এই বিষয়গুলিতে সাহায্য পাওয়া যাবে:
- প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন নীতি সংঘাত হবে না
- কেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত তহবিল পাওয়া সহজ হবে
- উন্নয়ন কাজে ত্বরাণ্বিত হবে
- হাসপাতাল, ডিসপেন্সারি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি মৌলিক সুবিধায় উন্নতি হবে
বিজেপি সরকারের সামনে থাকবে এই বড় চ্যালেঞ্জগুলো
এমসিডির উপর ১৪,০০০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে, যা পরিশোধ করা জরুরি
- অস্থায়ী কর্মীদের নিয়মিতকরণ
- কর্মচারীদের সময়মতো বেতন প্রদান
- জীর্ণ ভবনের শনাক্তকরণ এবং পুনর্নির্মাণ
- জলাবদ্ধতা রোধের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন
- এমসিডি হাসপাতাল ও ডিসপেন্সারিতে সংস্থান বৃদ্ধি