দিল্লি উন্নয়ন প্রাধিকরণ (ডিডিএ) কাদিপুর গ্রামস্থিত শ্রীশ্যাম কলোনিতে ১০০-এরও বেশি বাড়ির মালিকদের নোটিস জারি করে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। নোটিসে বাড়ির মালিকদের ১৫ দিনের মধ্যে ঘর খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নতুন দিল্লি: দিল্লির উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের কাদিপুর গ্রামের শ্রীশ্যাম কলোনিতে বসবাসকারী শত শত পরিবারের ঘুম ৩ জুন দিল্লি উন্নয়ন প্রাধিকরণ (ডিডিএ)-এর একটি নোটিস জারির পরে উড়ে গেছে, যেখানে ১০০-এরও বেশি বাড়ি ১৫ দিনের মধ্যে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিডিএ-র দাবি, এই নির্মাণ অবৈধ এবং পি-২ উন্নয়ন এলাকায় অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছে।
ডিডিএ-র দাবি: অবৈধ নির্মাণ, অনুমতি ছাড়া গড়ে ওঠা কলোনি
ডিডিএ কর্তৃক জারি করা নোটিসে বলা হয়েছে যে শ্রীশ্যাম কলোনি উন্নয়ন এলাকা 'জোন পি-২'-এ অবস্থিত, যেখানে কোনও নির্মাণের জন্য আইনসম্মত অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু কোনও অনুমতি ছাড়াই এখানে নির্মাণ করা হয়েছে, যা দিল্লি উন্নয়ন আইন ১৯৫৭-এর ধারা ১২(১)-এর লঙ্ঘন। নোটিসে স্পষ্ট সতর্কতা দেওয়া হয়েছে যে নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যে যদি ঘর খালি না করা হয়, তাহলে ডিডিএ বাড়ির তালা ভেঙে বুলডোজার অভিযান চালাবে।
শ্রীশ্যাম কলোনিতে বসবাসকারী অধিকাংশ লোকই শ্রমিক শ্রেণীর। এই লোকেরা জীবনের সম্পূর্ণ উপার্জন দিয়ে এই বাড়িগুলি তৈরি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুধীর শ্রীবাস্তব বলেন, আমি ছয় বছর ধরে এখানে বাস করছি। যখন প্লট করা হচ্ছিল এবং বাড়ি তৈরি করা হচ্ছিল, তখন ডিডিএ কোথায় ছিল? আজ হঠাৎ অবৈধ বলে উচ্ছেদ করতে চলেছে।
আরেকজন বাসিন্দা, সোনু, যিনি পেশায় ড্রাইভার, বলেন, তিন বছর আগে আমি একজন ডিলারের কাছ থেকে একশ গজ জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেছি। সেই সময় কেউ বাধা দেয়নি, কেউ বলেনি যে এটি সরকারি জমি। এখন ঘর ভাঙার নোটিস এসেছে। আমরা কী অপরাধ করেছি?
প্রশাসনিক গাফিলতিতে প্রশ্ন উঠলো
স্থানীয়দের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, যখন কলোনি বসানো হচ্ছিল, প্লট বিক্রি হচ্ছিল, নির্মাণ কাজ উন্মুক্তভাবে চলছিল—তখন ডিডিএ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা কেন চুপ ছিলেন? লোকেরা এটাও জানতে চায় যে, যারা তাদের দায়িত্ব পালন করেননি, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না। অখিলেশ, যিনি গত পাঁচ বছর ধরে এখানে বাস করছেন, বলেন, যদি এটি সরকারি জমি হয়, তাহলে ডিডিএ আগে বোর্ড কেন লাগায়নি? যখন পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছিল, তখন কর্মকর্তাদের চোখ কেন বন্ধ ছিল?
ডিলারদের ভূমিকাও সন্দেহজনক
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিলাররা তাদের বিশ্বাস দিয়েছিল যে এটি বৈধ জমি এবং এখানে নির্মাণের অনুমতি আছে। তারা লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে প্লট কিনেছে এবং এখন তারা নিজেদেরকে প্রতারিত বলে মনে করছে। এমন পরিস্থিতিতে এই প্রশ্নও উঠছে যে, ডিডিএ কি এই ডিলারদের বিরুদ্ধে কোনও আইনগত ব্যবস্থা নেবে? শ্রীশ্যাম কলোনির বাসিন্দারা ডিডিএ-র কাছে আবেদন করেছে যাতে তাদের জন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়।
তাদের দাবি, হঠাৎ করে ঘর উচ্ছেদ করা কেবল অমানবিক নয়, এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলাফলও। এখনও পর্যন্ত ডিডিএ-র পক্ষ থেকে পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি।