চিরাগ পাসওয়ানের পত্রে বিহার রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন

চিরাগ পাসওয়ানের পত্রে বিহার রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর প্রধান চিরাগ পাসওয়ানের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে লেখা পত্রটি বিহারের রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই পত্রে চিরাগ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন, যা জনতা দল (ইউনাইটেড) অর্থাৎ জেডিইউ-কে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

পাটনা: বিহারের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর সভাপতি চিরাগ পাসওয়ানের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে লেখা তীব্র সমালোচনামূলক পত্রটি এনডিএ-তে আলোড়ন তৈরি করেছে। চিরাগ তার পত্রে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নীতীশ সরকারের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই ঘটনাপ্রবাহ জনতা দল (ইউনাইটেড) অর্থাৎ জেডিইউ-কে সতর্ক করে তুলেছে, যারা এখন এই বিষয়টি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চিরাগের পত্রে উঠে এসেছে বহু প্রশ্ন

চিরাগ পাসওয়ান তার পত্রে বিহারে ক্রমবর্ধমান অপরাধ, নারী নির্যাতনের বৃদ্ধি এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করেছেন। বিশেষত, তিনি এই পত্রটি কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকেই পাঠিয়ে থাকেননি, বরং মাধ্যমের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছেও তা প্রকাশ করেছেন। জেডিইউ নেতাদের এ ব্যাপারে অস্বস্তি হয়েছে এবং তারা এটিকে এনডিএ-র অভ্যন্তরে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছেন।

জেডিইউ-এর অভিযোগ: বিরোধীদের ভাষা ব্যবহার করছেন চিরাগ

জেডিইউ নেতারা চিরাগের পত্রটিকে বিরোধী দলের ভাষা বলে অভিহিত করেছেন। তাদের দাবি, যদি চিরাগ সত্যিই গঠবন্ধন ধর্ম পালন করতেন, তাহলে তিনি প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলতেন, মাধ্যমের মাধ্যমে সরকারের ছবি নষ্ট করার চেষ্টা করতেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেডিইউ-এর একজন ঊর্ধ্বতন নেতা বলেছেন, যে বিষয় নিয়ে চিরাগ পাসওয়ান পত্র লিখেছেন, সে বিষয়ে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে। তাহলে জনসম্মুখে পত্র প্রকাশের উদ্দেশ্য কী?

বিজেপি থেকে প্রত্যাশা: চিরাগের উপর নিয়ন্ত্রণের দাবি

জেডিইউ এখন এই বিষয়টি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলটি আশঙ্কা করছে যে চিরাগ পাসওয়ানের এই ধরনের বক্তব্য এবং কার্যকলাপ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এটাও মনে রাখা উচিত যে ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে চিরাগ পাসওয়ান জেডিইউ-এর বিরুদ্ধে ১৪৩টি আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন।

তিনি খোলাখুলিভাবে নীতীশ কুমারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচারণা চালিয়েছিলেন, যার ফলে জেডিইউ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যদিও চিরাগের দল মাত্র একটি আসন পেয়েছিল, তবে তিনি জেডিইউ-এর ভোট ব্যাংকে অবশ্যই সেঁধা দিয়েছিলেন।

নীতীশের যেসব বিভাগে আক্রমণ, সেসবই চিরাগের লক্ষ্য

এইবারও চিরাগ যেসব বিভাগের সমালোচনা করেছেন, সেগুলি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছেই, বিশেষত গৃহ বিভাগ। এই ভাবে এই আক্রমণ সরাসরি নীতীশ কুমারের খ্যাতি এবং নেতৃত্বের উপর প্রশ্ন তোলে। জেডিইউ মনে করে এটি কেবলমাত্র প্রশাসনিক সমালোচনা নয়, বরং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হতে পারে। জেডিইউ ভয় করছে যে যদি চিরাগ এই ভাবেই এনডিএ-র অভ্যন্তরে বিরোধিতার সুর উঠিয়ে থাকেন, তাহলে গঠবন্ধনে পারস্পারিক বিশ্বাস কমে যাবে। এই ধরণের পরিস্থিতিতে ভোট ট্রান্সফারেও সমস্যা হবে, যা বিহার জাতীয় রাজ্যে গঠবন্ধনের সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a comment