বিহার রাজনীতিতে নতুন মোড়: মুকেশ সাহনীর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা

বিহার রাজনীতিতে নতুন মোড়: মুকেশ সাহনীর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা
সর্বশেষ আপডেট: 16-04-2025

বিহারের রাজনীতিতে আবারও তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিহারের উন্নয়নশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-এর প্রধান ও প্রাক্তন মন্ত্রী মুকেশ সাহনীর ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগদানের গুঞ্জন জোরালো হয়ে উঠেছে।

পাটনা: বিহারের রাজনীতি আবারও নতুন মোড় নিতে চলেছে। আসন্ন ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে উন্নয়নশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-এর প্রধান মুকেশ সাহনীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন অনুমানের জোয়ার উঠেছে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে যে, সাহনি মহাজোট ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাথে যোগ দিতে পারেন, যার ফলে তেজস্বী যাদব এবং আরজেডি-কে বড় ধাক্কা লাগতে পারে।

সম্প্রতি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ জয়সওয়াল এক বিবৃতি দিয়ে এই সম্ভাবনাকে আরও জোরদার করেছেন। যদিও তিনি কোনও দল বা নেতার নাম নেননি, তবে তার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, মহাজোটের একজন "শক্তিশালী সহযোগী" বিজেপির সাথে জোট গঠনের চেষ্টা করছে।

দিলীপ জয়সওয়ালের বিবৃতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু

১৬ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় দিলীপ জয়সওয়াল বলেছিলেন, 'আমাদের জোটে এখন পাঁচ পান্ডব আছেন (বিজেপি, জেডিইউ, এলজেপি রামবিলাস, এইচএএম, আরএলএম)। কিন্তু মহাজোটের একজন শক্তিশালী অংশীদার রাতে লুকোচুরি খেলছে এবং আমাদের সাথে যোগদানের চেষ্টা করছে। যদি সে সম্মানের সাথে কথা বলে তাহলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।' যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, তিনি কি মুকেশ সাহনীর দিকে ইঙ্গিত করছেন, তখন তিনি চুপ করে থাকেন এবং বলেন, 'আমি কারও নাম নেব না।'

পরিবর্তিত কৌশল? মহাজোটে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ চেয়েছিলেন সাহনি

উল্লেখ্য, মুকেশ সাহনি সম্প্রতি বিহারের বিভিন্ন জেলায় জনসভা করছেন, যেখানে তিনি খোলাখুলিভাবে বলেছেন যে, যদি মহাজোট ক্ষমতায় আসে, তাহলে তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী এবং তিনি নিজে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হবেন। যদিও আরজেডি বা তেজস্বী যাদবের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।

সম্প্রতি এক দলীয় বৈঠকে মুকেশ সাহনি বলেছিলেন যে, ভিআইপি পার্টি ৬০ টি আসনে নির্বাচন করবে যাতে অন্তত ৪০ টি আসনে জয়ী হতে পারে। তাঁর বিশ্বাস, নিষাদ সমাজের জন্য সংরক্ষণ এবং সবলীকরণ তখনই সম্ভব যখন তাঁর দল বিধানসভায় নির্ণায়ক সংখ্যক আসনে উপস্থিত থাকবে।

রাজনৈতিক সমীকরণে পরিবর্তন

যদি মুকেশ সাহনি বিজেপির সাথে হাত মেলান, তাহলে এটি মহাজোটের কৌশলের জন্য বড় ধাক্কা হবে। বিশেষ করে নিষাদ সমাজের ভোটারদের উপর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে, যারা সাহনীর সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত বলে মনে করা হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে:

ভিআইপি এবং বিজেপির সম্ভাব্য ঘনিষ্ঠতা নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের সৃষ্টি করতে পারে।
সাহনীর শক্তি জাতিগত সমীকরণে রয়েছে, যা বিজেপি ২০২৫ সালের নির্বাচনে কাজে লাগাতে পারে।
উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে তেজস্বী যাদবের নীরবতা সাহনিকে অসুরক্ষিত বোধ করিয়েছে।

বিজেপির বিবৃতির পর এখন মুকেশ সাহনি এবং তার দলের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা। তারা কি মহাজোটে থাকবেন নাকি আবার রাজনৈতিক দল বদলাবেন, এর উত্তর আগামী কয়েকদিনের মধ্যে স্পষ্ট হতে পারে।

Leave a comment