ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে সম্মতি স্থাপিত হয়েছে। পরবর্তী সপ্তাহে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি সংসদীয় কমিটিকে পালঘাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সামরিক সংঘর্ষের তথ্য প্রদান করবেন।
Indo-Pak Conflict: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এখন একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। উভয় দেশ ১০ মে যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) সম্পর্কে সম্মতি প্রকাশ করেছে। এদিকে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি পরবর্তী সপ্তাহে সংসদের স্থায়ী কমিটিকে ভারত-পাক সংঘর্ষ এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করবেন।
পালঘাম সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারতের তীব্র প্রতিক্রিয়া
২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পালঘামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। এই হামলায় গোটা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরপর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সৌদি আরব ভ্রমণ মাঝপথে ছেড়ে দিল্লিতে ফিরে এসে কেবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (CCS)-এর জরুরি বৈঠক করেন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
অপারেশন সিন্দুর: ভারতের কঠোর সামরিক অভিযান
৭ মে ভারতীয় সেনাবাহিনী অপারেশন সিন্দুরের আওতায় পাকিস্তান ও পিওকে-তে ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে নির্ভুল আঘাত হানে। এটি ছিল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ড্রোন ও গোলাগুলির মাধ্যমে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী সকল চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়।
ভারতের স্পষ্ট বার্তা: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা
প্রধানমন্ত্রী মোদী ১২ মে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেছেন, "পাকিস্তানের সাথে আলোচনা কেবল সন্ত্রাসবাদ (Terrorism) নিয়েই হবে। সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা একসাথে চলতে পারে না।"
তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে সন্ত্রাসবাদ ও বাণিজ্য (Trade) একসাথে চলতে পারে না এবং ভারত আর কোনো ধরণের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাছে নতি স্বীকার করবে না।
১০ মে যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে সম্মতি
ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে, ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান সকল সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ করার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করে। আমেরিকার মধ্যস্থতার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উভয় দেশের DGMO (Director General of Military Operations)-এর মধ্যে হটলাইনে আলোচনার পর এই ঘোষণা করা হয়।
সংসদীয় কমিটিকে দেওয়া হবে সম্পূর্ণ তথ্য
পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি ১৯ মে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে ভারত-পাক সংঘর্ষ, অপারেশন সিন্দুর, যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং ভবিষ্যতের কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী তিনটি স্পষ্ট শর্ত দিয়েছেন
তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী পাকিস্তানকে তিনটি কঠোর শর্ত দিয়েছেন:
- সন্ত্রাসবাদ ও আলোচনা একসাথে চলতে পারে না।
- সন্ত্রাসবাদ ও বাণিজ্য একসাথে চলতে পারে না।
- জল ও রক্ত একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না।
এর অর্থ হল, যতক্ষণ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করবে, ততক্ষণ ভারত তার সাথে কোনও ধরণের যোগাযোগ বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে না।