আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত গুরুগ্রামে অনুষ্ঠিত তিন দিনের ‘বিবিভা: ২০২৪’ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এবং শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্বের উপর বিশেষ জোর দেন। তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার দিকে দৃঢ় প্রচেষ্টা ভারতকে সমৃদ্ধ ও সক্ষম রাষ্ট্রে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরসংঘচালক ডাঃ মোহন ভাগবত গুরুগ্রামের এসজিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত তিন দিনের সর্বভারতীয় গবেষক সম্মেলন ‘বিবিভা: ২০২৪’ এর উদ্বোধন করেন। এই সম্মেলনের প্রধান বিষয় ছিল ‘উন্নত ভারতের দর্শন’, যেখানে গবেষণা ও উন্নয়নের বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাঃ ভাগবত ভারতীয় শিক্ষামণ্ডলীর গবেষণা পত্রিকা ‘প্রজ্ঞানম’ উন্মোচন করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের বৈশিষ্ট্য তার সমগ্র দৃষ্টিভঙ্গিতে, এবং প্রতিটি ভারতীয়েরই একটি ‘উন্নত ও সামর্থ্যশালী ভারত’ প্রয়োজন।
ডাঃ ভাগবত আরও বলেন, ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে একটি আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করা উচিত, যেখানে উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষণ উভয়কে সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। তার বিশ্বাস, শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ভারত তার বৈশিষ্ট্য পুনঃস্থাপন করতে পারে এবং বিশ্বের জন্য একটি আদর্শ হতে পারে।
আরএসএস প্রধান শিক্ষার উদ্দেশ্য ও গবেষণার গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেন
সংঘ প্রধান ডাঃ মোহন ভাগবত তার বক্তব্যে উন্নয়ন ও পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, উভয়কে একসাথে নিয়ে এগোতে হবে, তবেই আমরা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে, তিনি নিষ্ঠুরতার পরিবর্তে মানবতার ও সংবেদনশীলতার উপর জোর দেন। তার বিশ্বাস, আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সুবিধা নিতে হবে, কিন্তু মানবতার সাথে আপোষ না করে।
ভাগবত শিক্ষার উদ্দেশ্যের উপরও আলোচনা করেন, যেখানে তিনি বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র পেট পুরণের চেয়ে বেশি হওয়া উচিত। শিক্ষার বাণিজ্যিকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য জ্ঞান বৃদ্ধি এবং সমাজকে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হওয়া উচিত। এছাড়াও, তিনি স্পষ্ট করেন যে, ভারতকে একটি সমৃদ্ধ ও সক্ষম রাষ্ট্রে গড়ে তুলতে অবিরাম শিক্ষা ও উদ্ভাবন অপরিহার্য।
মোহন ভাগবতের ‘দর্শন ২০৪৭’ কি?
ডাঃ মোহন ভাগবত ‘দর্শন ২০৪৭’ এর কথা বলেন, যেখানে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, যদি ভারত সঠিক পথে কাজ করে, তাহলে আগামী ২০ বছরে এই দেশ বিশ্বের নেতৃত্ব দিতে পারবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষা বিষয়ক বক্তব্যের উল্লেখ করে বলেন, শুধুমাত্র চিন্তাভাবনা করা যথেষ্ট নয়, দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমেই সত্যিকারের পরিবর্তন সম্ভব।
তার বক্তব্যের সমাপ্তিতে ভাগবত বলেন, "আমাদের নিজস্ব আদর্শ স্থাপন করতে হবে এবং ভারতকে নম্বর ১ করতে হবে।" তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতকে নিজের পথ নির্ধারণ করতে হবে, এবং অন্য কোনও দেশের অনুকরণ করা উচিত নয়। তার উদ্দেশ্য এমন একটি ভারত গঠন করা যেখানে প্রতিটি নাগরিকের সার্বিক উন্নয়ন হবে, এবং এই রাষ্ট্র বিশ্বে সর্বাগ্রে এগিয়ে যাবে।