সুপ্রিম কোর্ট আলী খানের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। তদন্ত কেবলমাত্র দুটি FIR পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। কোর্ট সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মন্তব্য নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে, কিন্তু বাক্স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
নয়াদিল্লি: হরিয়ানার অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান আলী খান মহম্মদাবাদকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন জামিন জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি কোর্ট তদন্তের পরিধি সীমিত করে বলেছে যে, SIT (Special Investigation Team) কে কেবলমাত্র দুটি FIR এর তদন্ত করার অনুমতি দেওয়া হবে।
কী ঘটেছে?
আলী খান ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। ‘অপারেশন সিন্দুর’ জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগাম হামলার পর পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের মোকাবেলা করার জন্য পরিচালিত একটি অভিযান ছিল। তাঁর এই পোস্টের পর হরিয়ানায় তাঁর বিরুদ্ধে দুটি FIR দায়ের করা হয়, যার মধ্যে প্রথমটি যোগেশ জাঠেরির অভিযোগে এবং দ্বিতীয়টি হরিয়ানা মহিলা কমিশনের অধ্যক্ষ রেনু ভাটিয়ার অভিযোগে দায়ের করা হয়।
এখনও পর্যন্ত হরিয়ানা পুলিশ আলী খানকে গ্রেফতার করেছিল, কিন্তু পরে সুপ্রিম কোর্ট তাঁর গ্রেফতারি চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দিয়েছে?
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে ন্যায়াধীশ সূর্যকান্ত এবং ন্যায়াধীশ দীপঙ্কর দত্ত উপস্থিত ছিলেন। কোর্ট আলী খানের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে যে, আলী খানের বাক্স্বাধীনতা রয়েছে, অর্থাৎ তিনি লিখতে পারবেন, বলতে পারবেন, কিন্তু এই মামলার সাথে সম্পর্কিত কোনও মন্তব্য বা অনলাইন পোস্ট করবেন না।
পাশাপাশি কোর্ট SIT কে নির্দেশ দিয়েছে যে, তারা তাদের তদন্ত কেবলমাত্র দুটি FIR পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখবে, তদন্তের পরিধি বাড়ানো হবে না।
তদন্তের পরিধি কেন সীমাবদ্ধ করা হয়েছে?
শুনানির সময় আলী খানের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বল SIT এর তদন্তের পরিধি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন, কিন্তু কোর্ট বলেছে যে, এতে ডানে-বামে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র এই দুটি FIR এর উপর ফোকাস করতে হবে। কোর্ট SIT কে পরবর্তী শুনানির আগে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোর্ট কী বলেছে?
কপিল সিব্বল কোর্টের কাছে আলী খানের উপর আরোপিত সেই শর্তে শিথিলতার দাবি জানিয়েছিলেন, যাতে বলা হয়েছিল যে, তিনি এই মামলায় কোনও মন্তব্য বা অনলাইন পোস্ট করবেন না। যদিও কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে যে, তাঁর বাক্স্বাধীনতার উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, কেবলমাত্র FIR এর বিষয় নিয়ে আলোচনা বা পোস্ট করা যাবে না।
কোর্ট এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কোনও নতুন আদেশ দেয়নি এবং বলেছে যে, পরবর্তী শুনানিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পুলিশ জবাব দিয়েছে, পরবর্তী শুনানি কবে হবে?
কোর্ট হরিয়ানা পুলিশের কাছে আলী খানের গ্রেফতারি সম্পর্কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নোটিশের জবাবে দেওয়া জবাব চেয়েছে। পরবর্তী শুনানিতে পুলিশ এই বিষয়ে কোর্টকে বিস্তারিত তথ্য দেবে।