আহমেদাবাদ-লন্ডন ফ্লাইট দুর্ঘটনা: একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী

আহমেদাবাদ-লন্ডন ফ্লাইট দুর্ঘটনা: একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী
সর্বশেষ আপডেট: 13-06-2025

আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়া বোয়িং 787 ফ্লাইট উড়ালের সাথে সাথেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ২৪১ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু বিজনেস ক্লাসের ১১A নম্বর সিটে বসা বিশ্বাস রমেশ একমাত্র জীবিত যাত্রী হিসেবে বেঁচে গেছেন।

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা: আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI171, যা একটি বোয়িং 787 ড্রিমলাইনার বিমান ছিল, ১০ জুন ২০২৫ তারিখে ভোর ৪:১৭ মিনিটে উড়ালের সাথে সাথেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে যখন বিমানটি টেকঅফের ৪০ সেকেন্ড পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতাল চত্বরের একটি ভবনের সাথে ধাক্কা খায়। এই বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, যার মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রীর পরিচয়

দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রীর নাম বিশ্বাস কুমার রমেশ, যিনি বিহারের বাসিন্দা এবং তার ভাইয়ের সাথে লন্ডন যাচ্ছিলেন। বিশ্বাস বিজনেস ক্লাসের ১১A নম্বর সিটে বসে ছিলেন। এই সিটে বসার কারণেই সম্ভবত তিনি গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। বর্তমানে তাকে আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালের ট্রমা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে তার অবস্থা স্থির রয়েছে।

কেন ১১A নম্বর সিট বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে

বোয়িং 787-8 ড্রিমলাইনারে ১১A নম্বর সিট সাধারণত ইকোনমি ক্লাসের প্রথম অংশে জানালার পাশে অবস্থিত। এই সিট বিমানের জরুরি প্রস্থান দরজার কাছে থাকার কারণে অতিরিক্ত স্থান এবং দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার সুবিধা প্রদান করে। মনে করা হচ্ছে এই বিশেষ অবস্থান এবং গঠনের কারণেই রমেশ দুর্ঘটনার পরপরই নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

দুর্ঘটনার সম্পূর্ণ তথ্য

ফ্লাইটটি টেকঅফ করার সময় দ্রুত গতিতে উপরে উঠছিল, কিন্তু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বিমানটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই এটি ২.৫ কিমি দূরের বিজে মেডিকেল ও সিভিল হাসপাতালের একটি উঁচু ভবনের সাথে ধাক্কা খায়। ওই ভবনে তখন ৫০ জনেরও বেশি চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন, যাদের অনেকে আহত হয়েছেন এবং কয়েকজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।

বিমানে কতজন যাত্রী ছিলেন এবং তাদের জাতীয়তা

বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, যার মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। এই ফ্লাইট লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সকল যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং মৃতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা কীভাবে প্রভাবিত হয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমান দুর্ঘটনায় সিটের অবস্থান, বিমানের গতি, ধাক্কার কোণ এবং প্রস্থান পথের সুবিধা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিজনেস ক্লাসের সিটগুলি সাধারণত সামনের দিকে থাকে এবং তাদের গঠন বেশি শক্তিশালী হয়। পাশাপাশি, ১১A এর মতো দরজার কাছাকাছি সিটগুলি দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

দুর্ঘটনার পর প্রতিক্রিয়া

দুর্ঘটনার পরপরই NDRF, ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ বাহিনী এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ধ্বংসাবশেষ থেকে লাশ উদ্ধার করে সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং বোয়িং কোম্পানির কাছেও প্রযুক্তিগত তথ্য চাওয়া হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া যাত্রীদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a comment