সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সমীরা রেড্ডি নিজের ফিটনেস যাত্রা সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। ৪৬ বছর বয়সেও নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি অকুণ্ঠ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন ওয়ার্কআউট করেন।
সমীরা রেড্ডি ফিটনেস: বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সমীরা রেড্ডি তার ফিটনেস যাত্রা নিয়ে আবারও সকলকে অবাক করে দিয়েছেন। ৪৬ বছর বয়সে যেখানে অনেকেই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন, সেখানে সমীরা তার ফিটনেসকে এক নতুন দিক দিয়েছেন। দুই সন্তানের মা এবং বিবাহিতা সমীরা তার ওজনের ওঠানামা এবং গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরে থাকার পরও নিজের শরীরকে ফিট এবং শক্তিশালী করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে সমীরা তার ওজন কমানোর যাত্রা এবং ফিটনেস রুটিন সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং প্রকাশ করেছেন যে কিভাবে তিনি এই বয়সে তার শরীরকে ফিট এবং সুস্থ রেখেছেন।
ওজন কমানোর যাত্রার সূচনা
সমীরা রেড্ডি বলেন, তার ফিটনেস যাত্রা শুরু হয় ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, যখন তিনি তার জন্মদিনে নিজেকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তাকে তার ফিটনেসের দিকে নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমার ওজন ক্রমাগত বাড়ছে-কমছে, কিন্তু এটা আর স্থায়ী হচ্ছিল না।” সমীরা সিদ্ধান্ত নেন যে তাকে তার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রতিদিন চেষ্টা করতে হবে।
তার ফিটনেস রুটিন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে সমীরা বলেন, জীবন যতই ব্যস্ত হোক না কেন, তিনি সবসময় তার ওয়ার্কআউটকে অগ্রাধিকার দেন। তিনি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন ওয়ার্কআউট করেন, যা তার কাছে একটি অপরিহার্য অভ্যাস হয়ে উঠেছে। অভিনেত্রী এটাও জানান যে ওয়ার্কআউটের সময় তার লক্ষ্য শুধু ওজন কমানো নয়, বরং তার শরীরকে শক্তিশালী করা।
সমীরা মনে করেন বয়সের সাথে সাথে শরীরকে শক্তিশালী করা এবং দীর্ঘদিন ফিটনেস বজায় রাখা আরও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্বীকার করেন যে আগে তিনি অনেকবার ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু এখন তার নজর শুধু ওজন কমানোর উপর নয়, বরং তার শক্তি বাড়ানোর উপর। তিনি বলেন, “এখন আমার অগ্রাধিকার শুধু পাতলা হওয়া নয়, বরং শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ হওয়া।”
ডায়েট প্ল্যান
সমীরা রেড্ডি তার ডায়েট সম্পর্কেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার ডায়েটে কোন ধরণের কঠোর নিষেধাজ্ঞা নেই। আমি কার্বোহাইড্রেট বা কোন খাবার সম্পূর্ণ ত্যাগ করি না।” সমীরা'র ডায়েট প্ল্যান সুষম, যেখানে তিনি পোর্শন কন্ট্রোলকে অগ্রাধিকার দেন। তিনি মনে করেন খাওয়ার সাথে সাথে তার প্রশিক্ষণকেও মিলিয়ে চলা জরুরি।
তিনি দ্রুত ফলাফলের পরিবর্তে দীর্ঘদিন সুস্থ অভ্যাস বজায় রাখার উপর বিশ্বাস করেন। সমীরা এটাও বলেন যে তার ডায়েটে ফল, সবজি, প্রোটিন এবং সুস্থ চর্বি রয়েছে, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি যোগায়।
নিজেকে চিয়ারলিডার বানান - সমীরা
সমীরা তার ফিটনেস যাত্রা সম্পর্কে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা শেয়ার করেছেন, যা সবার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি বলেন, “আপনাকে নিজের সবচেয়ে বড় চিয়ারলিডার হতে হবে। সবাই আপনাকে উৎসাহ দেবে না, কিন্তু এটা ঠিক আছে। আপনার নিজের জন্য কিছু করতে হবে।” সমীরা নিজেকে অনুপ্রাণিত করার জন্য ভিশন বোর্ড তৈরি করা, লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং সেটিতে লেগে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এটা আপনার যাত্রা এবং আপনার সিদ্ধান্ত। অন্য কেউ এটা আপনার জন্য করতে পারবে না।”
সমীরা রেড্ডি মনে করেন ফিটনেসের যাত্রা শুধু শারীরিক পরিবর্তনের ব্যাপার নয়, মানসিক অবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “যখন আপনি নিজেকে ভালোবাসেন এবং নিজের শরীরের সম্মান করেন, তখনই আপনি মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারেন। আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ শরীর শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও শক্তিশালী হয়।”
পরিবারের সমর্থন
যদিও সমীরা নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তিনি তার পরিবারের সমর্থনকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তিনি বলেন, “আমি আমার পরিবারের কাছ থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি, কিন্তু সত্যিকারের পরিবর্তন ভেতর থেকে আসে। যদি আপনি নিজেকে বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আপনি যে কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন।”
সমীরা'র এই ফিটনেস যাত্রা থেকে আমরা শিখতে পারি যে বয়স শুধু একটি সংখ্যা, এবং যদি সঠিক দিকে পরিশ্রম করা যায়, তাহলে যে কোনো বয়সে ফিট এবং সুস্থ থাকা সম্ভব। তার যাত্রা শুধু অনুপ্রেরণাদায়ক নয়, এটি এটাও দেখায় যে আত্মবিশ্বাস এবং ইতিবাচক চিন্তাভাবনা দিয়ে যে কেউ তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।