হিমাচল প্রদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় আসছে বলে মনে হচ্ছে। প্রদেশ কংগ্রেস সংগঠনে ব্যাপক পরিবর্তনের আভাসের মধ্যে দল এখন দলিত নেতৃত্বকে এগিয়ে আনার কৌশলে কাজ করছে। সূত্র মতে, হিমাচল বিধানসভার উপাধ্যক্ষ ভীমরাজ সোলঙ্কী (কাল্পনিক নাম) কংগ্রেসের নতুন প্রদেশ সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্রমেই তিনি দিল্লী পৌঁছে গেছেন এবং আগামী দুই দিনের মধ্যে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের সাথে দেখা করবেন।
পরিবর্তিত সমীকরণে SC কার্ডের প্রবেশ
দলের সূত্রের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ার পর কংগ্রেস সংগঠনের পুনর্গঠনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এবার দলিত সম্প্রদায়কে সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়ে একটি শক্তিশালী সামাজিক বার্তা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
হিমাচলের রাজনীতিতে এখন পর্যন্ত নেতৃত্বে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চবর্ণের প্রভাব ছিল, কিন্তু এখন দল এই ভারসাম্য পরিবর্তন করতে চায়।
বিধানসভা উপাধ্যক্ষ কেন প্রতিযোগিতায়?
ভীমরাজ সোলঙ্কী গত তিনটি বিধানসভা অধিবেশনে দলিত শ্রেণীর একজন শক্তিশালী ও সক্রিয় নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন। বিধানসভায় তাঁর পরিচালন ক্ষমতা, সংগঠনে দখল এবং সামাজিক ভিত্তি তাঁকে শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টিতে আনয়ন করেছে। দলের একজন জ্যেষ্ঠ পদাধিকারীর মতে: আমাদের প্রচেষ্টা হল সংগঠনে সামাজিক বৈচিত্র্য দেখানো এবং সমাজের সকল শ্রেণীর সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
ভীমরাজ সোলঙ্কী গত দুই দিন ধরে দিল্লীতে আছেন এবং তিনি দলের সাধারণ সম্পাদকদের সাথে দেখা করে সম্ভাবনার উপর আলোচনা করেছেন। শনিবার তিনি দলের সভাপতি খড়গের সাথে দেখা করবেন, যেখানে তাঁর নামে আনুষ্ঠানিক মোহর পড়তে পারে। কংগ্রেসের প্রদেশ প্রভারী রাজীব শুক্লা এবং অন্যান্য নেতাদের সাথেও আলোচনা হয়েছে।
কেন পরিবর্তন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে?
লোকসভা নির্বাচনে হিমাচল কংগ্রেস মাত্র ১ টি আসনে সীমাবদ্ধ ছিল, যখন বিজেপি জয়ী হয়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে সংগঠনগত দুর্বলতা পরাজয়ের একটি বড় কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন কংগ্রেসের ফোকাস শক্তিশালী, সক্রিয় এবং জনসমর্থন সম্পন্ন নেতাকে কমান্ড সौंपার উপর – এবং সোলঙ্কী এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।
হিমাচলের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫% অনুসূচিত জাতির লোক, যারা যে কোন নির্বাচনেই নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এখন পর্যন্ত কংগ্রেস এই শ্রেণীকে কেবল প্রতীকী প্রতিনিধিত্ব দিয়ে এসেছে, কিন্তু এখন সংগঠনগত পর্যায়েও এই সম্প্রদায়কে কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিরোধীদের নজর
যদি ভীমরাজ সোলঙ্কীকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়, তাহলে এর প্রভাব কেবল কংগ্রেস সংগঠনে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বিজেপির দলিত নেতাদের উপরও চাপ বাড়বে, অন্যদিকে কংগ্রেসের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে পরিবর্তনের দাবি করে আসা যুবক এবং সমাজের অন্যান্য শ্রেণীর মধ্যেও ইতিবাচক বার্তা যাবে। বিজেপির একজন নেতার মতে: এটি কংগ্রেসের কৌশলগত পদক্ষেপ, কিন্তু কেবলমাত্র মুখ পরিবর্তন করে কাজ হবে না, নীতি এবং কার্যশৈলীতেও পরিবর্তন প্রয়োজন।