গণিতবিদ এবং পরিমাণগত ট্রেডিংয়ের অগ্রদূত জিম সিমন্স তার কোম্পানি রেনেসাঁ টেকনোলজিসের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে বিপ্লব এনেছিলেন এবং তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছিলেন।
শেয়ার ট্রেডিং: গত কয়েক বছরে শেয়ার বাজারে ট্রেন্ড এবং বিনিয়োগের পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেকেই এটাকে তাদের কর্মজীবন হিসেবে গ্রহণ করতে চান, কিন্তু ব্যবসায়ের জগতে অধিকাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীই ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে, কিছু ব্যক্তি তাদের দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং গণিতের জ্ঞানের মাধ্যমে চমৎকার লাভ অর্জন করছেন, যার মধ্যে একজন হলেন জিম সিমন্স।
জিম সিমন্সের ঐতিহ্যবাহী ট্রেডিং থেকে পরিমাণগত ট্রেডিং পর্যন্ত যাত্রা
‘কোয়ান্ট কিং’ নামে পরিচিত জিম সিমন্স শেয়ার বাজারের জগতে নতুন মোড় এনেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ট্রেডিংকে গাণিতিক এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। তার গণিতের জ্ঞান এবং তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি আমেরিকায় পরিমাণগত ট্রেডিং চালু করেন এবং ধীরে ধীরে এটাকে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করে তোলেন।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
জিম সিমন্সের জন্ম ১৯৩৮ সালে হয়েছিল এবং তিনি শুরু থেকেই গণিতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MIT) থেকে গণিতে বিএস ডিগ্রি এবং পরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বিশেষ মনোযোগ ছিল জ্যামিতিতে এবং ২৩ বছর বয়সে তার কাজ গণিতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে শুরু করে।
ট্রেডিংয়ের আগে কর্মজীবন
ট্রেডিংয়ের আগে সিমন্সের কর্মজীবন ছিল একজন গণিতবিদ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তিনি হার্ভার্ড এবং MIT-তে গণিত পড়িয়েছেন এবং আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্যও কাজ করেছেন। এখানে তিনি প্যাটার্ন রিকগনিশন এবং তথ্য বিশ্লেষণের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন, যা পরে তার ট্রেডিং কৌশলের ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে ট্রেডিংয়ের সূচনা
জিম সিমন্স ৪০ বছর বয়সে ট্রেডিংয়ের জগতে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথমে ঐতিহ্যবাহী ট্রেডিং পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন, কিন্তু দ্রুত বুঝতে পেরেছিলেন যে আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাজারে সাফল্য অর্জন করা কঠিন। এর পর, ১৯৮২ সালে তিনি তার কোম্পানি রেনেসাঁ টেকনোলজিস প্রতিষ্ঠা করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল গণিত এবং তথ্যের মাধ্যমে ট্রেডিংকে আরও ব্যবস্থাপ্রণালী এবং সংগঠিত করা।
রেনেসাঁ টেকনোলজিস এবং মেডেলিয়ান ফান্ড
রেনেসাঁ টেকনোলজিস প্রতিষ্ঠার পর, সিমন্স ১৯৮৮ সালে মেডেলিয়ান ফান্ড চালু করেন, যাতে কেবলমাত্র কোম্পানির কর্মচারী এবং কিছু নির্বাচিত বিনিয়োগকারী যোগদান করতে পারতেন। এই ফান্ড সিমন্সের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল এবং এর মাধ্যমে তিনি অপরিমিত সম্পত্তি অর্জন করেন।
পরিমাণগত ট্রেডিং এবং গাণিতিক মডেলের ব্যবহার
সিমন্সের ট্রেডিং কৌশল পরিমাণগত ট্রেডিং-এর উপর ভিত্তি করে ছিল, যেখানে তিনি গাণিতিক মডেল এবং তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবহার করতেন। তিনি বাজারের ঐতিহাসিক তথ্য বিশ্লেষণ করেছিলেন এবং দেখেছিলেন যে আবহাওয়া, অর্থনৈতিক তথ্য এবং ট্রেডিং ভলিউমের মতো অস্বাভাবিক তথ্য উৎসও বাজারের দামকে প্রভাবিত করতে পারে।