অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেড ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC)-এর ইতিহাসে একটি বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। শুক্রবার, ২৭শে জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করে হেড একটি অনন্য রেকর্ড গড়েছেন।
Player of the Match Awards: বার্বাডোজের মাঠে খেলা প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫৯ রানে পরাজিত করে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এই ম্যাচে ফাস্ট বোলারদের প্রাধান্য ছিল, কিন্তু আসল হিরো ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেড, যিনি কোনো সেঞ্চুরি করেননি, কোনো বড় রেকর্ডও ভাঙেননি, তবুও ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC)-এর ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করেছেন।
২৭শে জুন সমাপ্ত হওয়া এই ম্যাচে ট্রাভিস হেড উভয় ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ অর্ধশত রান করেন। প্রথম ইনিংসে যখন অস্ট্রেলীয় দল ১৮০ রানে গুটিয়ে যাওয়ার উপক্রম ছিল, তখন হেড ৫৯ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও হেড ৬১ রান করে দলকে ৩০০-এর কাছাকাছি নিয়ে যেতে অবদান রাখেন। এই দুটি ইনিংসের সুবাদে তিনি ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ খেতাব জেতেন।
WTC-তে সবচেয়ে বেশি প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হওয়ার গৌরব
ট্রাভিস হেড এই সম্মান পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১০ বার প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন। বিশেষ বিষয় হল, তিনি এই কীর্তি গড়েছেন মাত্র ৫০টি টেস্ট ম্যাচে। হেডের এই অনন্য রেকর্ড ইংল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস (৫ বার) এবং জো রুট (৫ বার)-এর মতো কিংবদন্তিদেরও পিছনে ফেলেছে। এই তালিকায় ভারতের রবীন্দ্র জাদেজার নামও রয়েছে, যিনি চারবার প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ-এর পুরস্কার জিতেছেন।
- ১০ বার - ট্রাভিস হেড
- ৫ বার – বেন স্টোকস
- ৫ বার – জো রুট
- ৪ বার – হ্যারি ব্রুক
- ৪ বার – রবীন্দ্র জাদেজা
- ৪ বার – উসমান খাজা
- ৪ বার – স্টিভ স্মিথ
- ৪ বার – এম. লাবুশেন
ম্যাচের বিবরণ
বার্বাডোজ টেস্টের প্রথম দিন থেকেই ফাস্ট বোলারদের দাপট ছিল। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ১৮০ রানে শেষ হয়, কিন্তু অজি বোলাররা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯০ রানে আটকে দিয়ে ম্যাচে ফিরে আসে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ৩০০ রান করে, যেখানে হেডের ৬১ রানের ইনিংসটি উল্লেখযোগ্য ছিল। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ১৪১ রানে অলআউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলাররা শেষ সেশনে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করে।
যদিও হেডের ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি আসেনি, তবে তাঁর দুটি ইনিংসের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। প্রথম ইনিংসে দলের উইকেট পড়তে থাকে, এমন পরিস্থিতিতে হেড ৫৯ রান করে লড়াই দেখান। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ৬১ রান করে প্রতিপক্ষের সামনে একটি শক্তিশালী লক্ষ্য স্থাপন করেন। এই কারণেই তিনি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন এবং WTC-এর ইতিহাসে নিজের জায়গা চিরকালের জন্য সুনিশ্চিত করেন।
এই জয়ের সাথে, অস্ট্রেলিয়া তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেন, হেডের অবদান ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল, যা দলকে সংকট থেকে উদ্ধার করে জয় এনে দিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল উভয় ইনিংসেই দুর্বল প্রমাণিত হয়েছিল। প্রথম ইনিংসে ১৯০ এবং দ্বিতীয়টিতে ১৪১ রান করে পুরো দল ব্যাকফুটে ছিল। বোলাররা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা তাদের হাত থেকে ম্যাচটি ছিনিয়ে নেয়।