টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশকে ইনিংস ও ৭৮ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিল। প্রথম টেস্ট ম্যাচ ড্র হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের জয়ের সুযোগ ছিল, কিন্তু তারা তা কাজে লাগাতে পারেনি।
খেলাধুলার খবর: শ্রীলঙ্কা তাদের ঘরের মাঠে খেলা দ্বিতীয় এবং নির্ণায়ক টেস্টে বাংলাদেশকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রমাণ করে দিল কেন তাদের এশিয়াতে টেস্ট ক্রিকেটের শক্তিশালী দাবিদার হিসেবে গণ্য করা হয়। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে স্বাগতিক দল বাংলাদেশকে ইনিংস ও ৭৮ রানে পরাজিত করে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। প্রথম টেস্ট ড্র হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়রা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে বাংলাদেশের প্রতিরোধ ভেঙে দেয়।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যর্থতা
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনাররা বেশি সময় ক্রিজে টিকতে পারেনি এবং দল নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। সাদমান ইসলাম ৪৬ রান করে কিছুটা লড়াই দেখালেও, তার বাইরে আর কোনো খেলোয়াড় ক্রিজে থিতু হতে পারেনি। লিটন দাস ৩৪, মুশফিকুর রহিম ৩৫ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ৩১ রান করেন। পুরো দল প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে অলআউট হয়ে যায়।
শ্রীলঙ্কার হয়ে অ্যাসিথা ফার্নান্দো এবং সোনল দিনুশা তিনটি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন। বিশ্ব ফার্নান্দো দুটি উইকেট শিকার করেন, যেখানে অধিনায়ক ধনঞ্জয় ডি সিলভা এবং স্পিনার থারিিন্দু রত্নায়েকে একটি করে উইকেট পান।
নিসাঙ্কার সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার বিশাল সংগ্রহ
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের জবাবে শ্রীলঙ্কা খুবই শক্তিশালী ব্যাটিং করে। ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা দুর্দান্ত ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশি বোলারদের মনোবল ভেঙে দেন। নিসাঙ্কার ইনিংসে ১৯টি চার ছিল এবং তিনি তার কৌশল ও ধৈর্য্যের চমৎকার পরিচয় দেন। এছাড়াও, দিনেশ চান্দিমাল ৯৩ রানের একটি শক্তিশালী ইনিংস খেলেন এবং অল্পের জন্য তার সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয়।
কুশল মেন্ডিসও ৮৪ রান করেন, যেখানে লাহিরু উদারা (৪০) এবং কামিন্দু মেন্ডিস (৩৩) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। পুরো দল ৪৫৮ রান করে অলআউট হয় এবং প্রথম ইনিংসে ২১১ রানের বিশাল লিড নেয়। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ইসলাম পাঁচটি উইকেট শিকার করেন, তবে বাকি বোলাররা তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি।
ফলোঅনেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ
২১১ রানে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পুরো দল মাত্র ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় এবং ম্যাচ চতুর্থ দিনেই শেষ হয়ে যায়। মুশফিকুর রহিম ২৬ রান করে কিছুটা চেষ্টা করলেও, কোনো ব্যাটসম্যান ২০ রানের গণ্ডি পার করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার হয়ে এই ইনিংসে স্পিনার প্রভাত জয়সুরিয়া পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পরাজয় নিশ্চিত করেন। ধনঞ্জয় ডি সিলভা এবং থারিিন্দু রত্নায়েকে দুটি করে উইকেট নেন, যেখানে অ্যাসিথা ফার্নান্দো একটি উইকেট পান।
পাথুম নিসাঙ্কাকে তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ইনিংসের জন্য 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য 'প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ' পুরস্কার দেওয়া হয়। নিসাঙ্কা টানা দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি করে নিজেকে শ্রীলঙ্কার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রমাণ করেছেন।
