নিয়মিত ব্যায়াম: সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি

নিয়মিত ব্যায়াম: সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি
সর্বশেষ আপডেট: 12-06-2025

নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ শুধুমাত্র শরীরকে সক্রিয় রাখে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্য, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং দীর্ঘায়ু ইত্যাদি অনেক দিকেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক গবেষণা এবং স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুযায়ী, সপ্তাহে নির্ধারিত সময় ধরে করা ব্যায়াম হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

নিয়মিত ব্যায়াম: পুরোপুরি স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি

নিয়মিত ব্যায়াম এবং শারীরিক কার্যকলাপকে জীবনশৈলীর অংশ করে তোলা আধুনিক জীবনের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং আমেরিকার স্বাস্থ্য বিভাগ (HHS) এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি অথবা ৭৫ মিনিট তীব্র অ্যারোবিক কার্যকলাপ করলে গুরুত্বপূর্ণ উপকার পাওয়া যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং মেটাবলিক স্বাস্থ্য

শারীরিক কার্যকলাপ শরীরের ক্যালোরি ব্যয় বৃদ্ধি করে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণা দেখায় যে, যারা সক্রিয় থাকে তাদের মধ্যে স্থূলতা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যার সম্ভাবনা কম থাকে। দ্রুত হাঁটা, সিঁড়ি চড়া অথবা গৃহস্থালী কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।

হৃদয় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি

ব্যায়ামের ফলে "ভালো" কোলেস্টেরল অর্থাৎ HDL স্তর বৃদ্ধি পায় এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের স্তর কমে যায়, যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি, ব্যায়াম মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নামক রাসায়নিক পদার্থকে সক্রিয় করে, যার ফলে মানসিক চাপ কমে এবং মেজাজ ভালো হয়। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিপ্রেশন এবং উদ্বেগের লক্ষণ কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম উপকারী হতে পারে।

শক্তি এবং ঘুমের বৃদ্ধি

নিয়মিত ব্যায়ামে পেশীর শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়, ফলে ব্যক্তি সারাদিন বেশি উর্জাবান অনুভব করে। এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত ব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করে। তবে, ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে অতিরিক্ত কার্যকলাপ এড়িয়ে চলা উচিত।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

নিয়মিত ব্যায়াম প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। গবেষণা দেখায় যে মাঝারি-স্তরের শারীরিক কার্যকলাপ শরীরে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়ায়। ব্যায়াম শরীরে সাদা রক্তকণিকার কার্যকারিতা উন্নত করে, যা রোগজীবাণু ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি স্ট্রেস হরমোন (যেমন কর্টিসল) এর স্তর নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

আপনি চাইলে আরও কিছু বিকল্প পেতে পারেন, যেমন:

  • হাড় এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্য
  • দীর্ঘায়ু এবং জীবনের মান
  • ডায়াবেটিস এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ
  • নির্দেশিকা এবং সতর্কতা

বেশিরভাগ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সপ্তাহে দুবার শক্তি প্রশিক্ষণ করারও পরামর্শ দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণ শরীরের প্রধান পেশী গ্রুপগুলিকে শক্তিশালী করে এবং সামগ্রিক ফিটনেসে সাহায্য করে। তবে, কোনও নতুন ফিটনেস প্রোগ্রাম শুরু করার আগে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া জরুরি, বিশেষ করে যাদের ইতিমধ্যে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস অথবা গাঠগতিক মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ আছে।

ব্যায়াম শুধুমাত্র একটি ফিটনেস লক্ষ্য নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য বিনিয়োগ। এর শুরু করা যায় যে কোনো বয়সে এবং ছোট ছোট পদক্ষেপে বড় পরিবর্তন আনা যায়। চাই ওজন নিয়ন্ত্রণ হোক বা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি— ব্যায়াম সকল দিক থেকেই উপকারী।

Leave a comment