একটি অতি- massif কৃষ্ণগহ্বর গ্যাস निगलানোর পর আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে তা নির্গত করেছে, যা তারা তৈরির প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে।
কৃষ্ণগহ্বর: বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি অভাবনীয় মহাজাগতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা কৃষ্ণগহ্বরের রহস্যময় শক্তিকে উন্মোচন করার পাশাপাশি গ্যালাক্সির বিবর্তনে এর গভীর প্রভাবও প্রকাশ করে। এই ঘটনাটি ১.২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত সেফার্ট গ্যালাক্সির PG1211+143 নামক একটি অতি- massif কৃষ্ণগহ্বরের সাথে সম্পর্কিত, যার ভর সূর্যের চেয়ে ৪ কোটি গুণ বেশি।
এই বিশাল কৃষ্ণগহ্বরটি সম্প্রতি এত দ্রুত গ্যাস শোষণ করেছে যে, এরপর এটি আলোর গতির প্রায় ২৭% - অর্থাৎ প্রায় ১৮ কোটি মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে পদার্থ নির্গত করেছে। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত বিরল এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যবেক্ষণ।
কৃষ্ণগহ্বর গ্যাস গ্রহণ করে দ্রুত তা নির্গত করলো
সাধারণত, কৃষ্ণগহ্বর সবকিছুকে নিজের দিকে টেনে নেয় - এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু PG1211+143 বিপরীত আচরণ দেখিয়েছে। ইএসএ-এর এক্সএমএম-নিউটন এক্স-রে টেলিস্কোপ থেকে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই কৃষ্ণগহ্বরটি মাত্র ৫ সপ্তাহের মধ্যে ১০টি পৃথিবীর সমান গ্যাস শোষণ করেছে এবং তারপর তার একটি বড় অংশ অত্যন্ত দ্রুত নির্গত করেছে।
বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়ায় আরও দেখেছেন যে, গ্যাস ভেতরে প্রবেশ করার এবং পরে নির্গত হওয়ার মধ্যে কয়েক দিন সময় লেগেছে। এই সময়কালে গ্যাসটি লক্ষ লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত গরম হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে অতিরিক্ত বিকিরণ চাপ সৃষ্টি হয়েছে এবং বাইরের গ্যাসকে দ্রুত ধাক্কা দিয়েছে।
তারার জন্মকে প্রভাবিত
এই তীব্র বহিঃপ্রবাহের প্রভাব শুধুমাত্র কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর ফলে आसपासের শীতল গ্যাসীয় মেঘ, যা সাধারণত তারা তৈরির জন্য প্রয়োজন, সেগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। অর্থাৎ, তারা তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যখন কোনো গ্যালাক্সি এই ধরনের কার্যকলাপের সম্মুখীন হয়, তখন সেটি তারা তৈরির অবস্থা থেকে শান্ত অবস্থায় চলে যায়, যেখানে নতুন তারা তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় বা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। এটিকে বিজ্ঞানীরা ‘ফিডব্যাক লুপ’ বলেন - একটি প্রক্রিয়া যেখানে কৃষ্ণগহ্বর তার নিজের গ্যালাক্সির বিবর্তনকে প্রভাবিত করে।
মহাবিশ্বের জীবনচক্র বুঝতে সুযোগ
যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক প্রতিবেদনে এই আবিষ্কার প্রকাশিত হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনাটি क्वाসার এবং এজিএন (Active Galactic Nucleus)-এর মতো বিশাল গঠনগুলোর কার্যকারিতা বুঝতে সহায়ক হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বিস্ফোরক বহিঃপ্রবাহ পুরো মহাবিশ্বে সাধারণ হতে পারে এবং গ্যালাক্সির জীবনচক্রকে আকার দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদিও এই প্রক্রিয়া কতবার ঘটে এবং এর সামগ্রিক প্রভাব কতটা, তা জানার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
কৃষ্ণগহ্বর বড় হলেও বেশি কিছু খায় না
এই গবেষণায় জড়িত প্রধান বিজ্ঞানী ড. কেন পাউন্ডস বলেন যে, PG1211+143 কৃষ্ণগহ্বর আকারে অনেক বড় হলেও এটি তুলনামূলকভাবে কম পরিমাণে পদার্থ গ্রহণ করে। তবুও, এই কম গ্রহণও এত শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, যা পুরো গ্যালাক্সিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম।
आगे কী?
এই আবিষ্কার কৃষ্ণগহ্বরের আচরণ বোঝার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন আরও বেশি সক্রিয় গ্যালাক্সিগুলোর ওপর নজর রাখছেন, যাতে এই ধরনের ঘটনাগুলো কতবার ঘটে এবং এটি মহাবিশ্বের গঠন ওপর কতটা প্রভাব ফেলে, তা জানা যায়।
এছাড়াও, আমাদের নিজেদের গ্যালাক্সি ‘মিল্কি ওয়ে’-তে অতীতে এমন কোনো পর্যায় ছিল কিনা অথবা ভবিষ্যতে আসতে পারে কিনা, সে বিষয়েও ধারণা পাওয়া যাবে।