উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া উপায়: তাৎক্ষণিক উপশমের সহজ টিপস

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া উপায়: তাৎক্ষণিক উপশমের সহজ টিপস
সর্বশেষ আপডেট: 6 ঘণ্টা আগে

আজকের দ্রুতগতির জীবনযাত্রায় উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেবল হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে না, বরং স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কিডনি ফেইলিওর-এর মতো মারাত্মক রোগের কারণও হতে পারে। অনেক মানুষ এই রোগ সম্পর্কে অবগত থাকেন না এবং লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, যদি হঠাৎ করে আপনার রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং ওষুধ দ্রুত পাওয়া না যায়, তবে কিছু ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপায় দ্রুত উপশম দিতে পারে।

গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস—90 সেকেন্ডে স্নায়ুগুলোকে বিশ্রাম দিন

  • আরাম করে বসুন অথবা শুয়ে থাকুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিন।
  • ফুসফুসে বাতাস भरने के পরে দুই সেকেন্ড ধরে রাখুন।
  • এরপর ছয় সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন।
    5-6টি চক্র পুনরাবৃত্তি করুন। গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস parasympathetic স্নায়ু তন্ত্রকে সক্রিয় করে, ধমনীগুলোর চাপ কমিয়ে দেয় এবং সিস্টোলিক রিডিং সাধারণত 5-8 মিমি পারদ পর্যন্ত নেমে আসতে পারে।

মাথা ও পায়ে ঠান্ডা জল ঢালুন

ঠান্ডা (অতিরিক্ত ঠান্ডা নয়) জল মাথা এবং পায়ের তালুতে ঢালুন। ত্বকের উপরের রক্তনালীগুলো সংকুচিত হবে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ রক্ত প্রবাহ মস্তিষ্ক এবং হৃদপিণ্ড থেকে দূরে সরে যাবে—तत्काल উপশম অনুভব করবেন। এই উপায়টি বিশেষ করে গরম, তাপপ্রবাহ বা মানসিক চাপের কারণে বেড়ে যাওয়া রক্তচাপের জন্য কার্যকরী।

ধীরে ধীরে জল পান করুন

পুরো গ্লাস একসাথে গোগ্রাসে না, বরং চুমুতে চুমুতে পান করুন। জল পেটে পৌঁছানোর সাথে সাথে কিডনি ফিল্টার করার প্রক্রিয়া দ্রুত করে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলস্বরূপ, প্রায় 20-25 মিনিটের মধ্যে রক্তচাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।

লেবু জল—কোনো চিনি বা লবণ ছাড়া

একটি গ্লাসে হালকা গরম জল নিন, এবং তাতে অর্ধেকটা লেবু निचोড়ুন—बस! কোনো চিনি বা লবণ মেশাবেন না। লেবুতে থাকা পটাশিয়াম এবং বায়ো-ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তনালীগুলোকে শিথিল করে এবং সোডিয়াম-পরিশোধনে সাহায্য করে। স্বাদ बढ़ाने के लिए আপনি পুদিনার পাতা যোগ করতে পারেন।

রসুন ও तुलसी—আয়ুর্বেদিক অলৌকিকতা

  • 2-3টি তুলসির পাতা ভালোভাবে চিবিয়ে খান। তুলসিতে Eugenol নামক উপাদান আছে যা ধমনীর পথ সংকীর্ণ করে দেয়।
  • একসাথে একটি কাঁচা রসুন কোয়া চিবিয়ে খান; রসুনের Allicin নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে, যা রক্তনালীকে প্রসারিত করে। लगातार তিন-চার দিন এই মিশ্রণটি গ্রহণ করুন, সকালে ও সন্ধ্যায় রক্তচাপ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

পিঠের উপর শুয়ে পা উঁচু করে রাখুন

সোফা বা মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পদের নিচে দুই-তিনটি বালিশ রাখুন। পায়ের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যায়, হৃদপিণ্ডের উপর চাপ হ্রাস পায় এবং রক্তচাপ 5-10 পয়েন্ট পর্যন্ত নেমে আসতে পারে। এই অবস্থান মাথা ঘোরা বা মাথাভারী লাগলে তাৎক্ষণিকভাবে উপশম দেয়।

প্রানায়াম ও যোগ—দীর্ঘমেয়াদী সমাধান

যদি পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়, তবে অনুলোম-ভिलोম বা ব্রামারি করুন। শুধু 5-10 মিনিটের এই ধীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম হৃদস্পন্দনকে স্থিতিশীল করে, স্ট্রেস হরমোন (কর্টিসল) কমিয়ে এবং ডায়াস্টোলিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

কিছু জরুরি সতর্কতা

  • অতিরিক্ত লবণাক্ত, ভাজা বা প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন।
  • প্রতিদিন অন্তত 30 মিনিট হাঁটুন।
  • রাতে 7-8 ঘণ্টা ঘুমান।
  • নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করান।

কখন দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান?

  • অতিরিক্ত মাথা ব্যথা এবং ঝাপসা দৃষ্টি
  • বুকে চাপ অনুভব করা বা হাত ও মুখের অসাড়তা
  • রক্তচাপ 180/110 মিমি Hg-এর বেশি

এই ‘লাল ফ্ল্যাগ’ সংকেতগুলো। ঘরোয়া উপায়ের পাশাপাশি দ্রুত হাসপাতালে যান।

উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে, তবে সঠিক তথ্য এবং উপায়ে এটি নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব। উপরে উল্লেখিত ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপায়গুলো তাৎক্ষণিকভাবে উপশম দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তবে, যদি সমস্যাটি बार बार হতে থাকে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন।

Leave a comment