রাজস্থানে দুর্নীতি দমনের উদ্দেশ্যে গঠিত অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরো (ACB) নিজেই প্রশ্নের মুখে এসে পড়েছে, যখন জয়পুরে তাদেরই এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার গাড়ি থেকে ৯.৩৫ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ACB-র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (Additional SP) জগরাম মীনার ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে পাওয়া যায়, যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ACB সদর দফতরের স্পেশাল ইউনিট-II গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শিবদাসপুরা টোল প্লাজার কাছে মীনার গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালায়।
তল্লাশির সময় গাড়ির সিটের নিচে লুকানো অবস্থায় নগদ টাকা পাওয়া যায়, যা সঙ্গে সঙ্গে জব্দ করা হয়। বর্তমানে মীনাকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং এই টাকার উৎস ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে ACB-র একটি আলাদা দল তদন্তে নেমেছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এবং এর প্রকাশ পাওয়ার পর ACB-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জিরো টলারেন্স নীতির কষ্টিপাথরে ACB
ACB সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দীপ রাঠোর এই অভিযানকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংস্থার 'জিরো টলারেন্স' নীতির অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, কর্মকর্তা যত উঁচু পদমর্যাদারই হোক না কেন, কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাঠোর আরও বলেন, ACB-র মূল লক্ষ্য হল দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং কোনো কর্মকর্তা যদি নিজেই সন্দেহের তালিকায় আসেন, তবে সংস্থাটি তার তদন্তে কোনো প্রকার শৈথিল্য দেখাবে না। তিনি আশ্বাস দেন, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মীনাকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ
ACB কর্মকর্তা জগরাম মীনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এজেন্সি অফিসে ডাকা হয়েছে, যেখানে তাঁর কাছে নগদ টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত মীনার তরফ থেকে কোনো সুস্পষ্ট জবাব পাওয়া যায়নি এবং তিনি মিডিয়া থেকে দূরে থাকছেন।
সূত্রের খবর, মীনা বর্তমানে কোনো মন্তব্য করা এড়িয়ে চলছেন। ACB কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া টাকার লেনদেন সংক্রান্ত নথিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে জানা যায় এই অর্থ কোনো ডিলের অংশ ছিল কিনা।
সংস্থার ভাবমূর্তিতে সংকট
একদিকে, যখন ACB দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছিল, ঠিক তখনই তাদেরই এক কর্মকর্তার গাড়ি থেকে নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় সংস্থার ভাবমূর্তিতে গভীর আঘাত লেগেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলছে এবং মানুষ প্রশ্ন তুলছে যে, যখন দুর্নীতি দমন সংস্থার কর্মকর্তারাই দুর্নীতিতে জড়িত পাওয়া যাবে, তখন সাধারণ মানুষ কার উপর ভরসা করবে।
বর্তমানে, পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। সংস্থাটি আশ্বাস দিয়েছে যে কোনো দোষীকে রেহাই দেওয়া হবে না এবং তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর জগরাম মীনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
