তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তাঁর বক্তব্য, ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কারণে কর্ণাটকে ৯০,০০০ ছাত্র ফেল করেছে। তহবিল বিতরণেও বৈষম্য হচ্ছে।
তামিলনাড়ু: তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী অমবিল মহেশ পোয়্যমঝি কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি (এনইপি) নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দাবি করেছেন যে, কর্ণাটকে ৯০,০০০ ছাত্র ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কারণে বোর্ডের পরীক্ষায় ফেল করেছে। তিনি বলেন, তৃতীয় ভাষাকে ঐচ্ছিক করা উচিত, বাধ্যতামূলক নয়। এর সাথে, তিনি কেন্দ্রের উপর শিক্ষা তহবিলের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে বলেন যে, তামিলনাড়ু ও কেরালার মতো ভালো ফল করা রাজ্যগুলিকে তহবিল থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
ছাত্রদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ
তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী অমবিল মহেশ পোয়্যমঝি শুক্রবার ছাত্রদের মধ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে নতুন শিক্ষানীতি (এনইপি) নিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের ভাষা নীতি ছাত্রদের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি করছে। এই সময় তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেন যে, কর্ণাটকে ৯০,০০০ এর বেশি ছাত্র বোর্ডের পরীক্ষায় ফেল করেছে এবং এর প্রধান কারণ হল ছাত্রদের উপর জোর করে একটি অতিরিক্ত ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন যে, তৃতীয় ভাষার অধ্যয়ন ছাত্রদের ইচ্ছের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। এটিকে কোনো অবস্থাতেই বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। তিনি বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য জ্ঞান প্রদান করা, ভাষার বোঝা চাপানো নয়।
তৃতীয় ভাষাকে ঐচ্ছিক করার পক্ষে সওয়াল
অমবিল মহেশ পোয়্যমঝি বলেন যে, ভাষা শেখা আবশ্যক, তবে এটি একটি স্বাভাবিক এবং স্বেচ্ছামূলক প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। যদি ছাত্রের উপর অতিরিক্ত ভাষা চাপানো হয়, তবে এটি কেবল তার মনোবল কমায় না, বরং শিক্ষাগত পারফরম্যান্সের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, তামিলনাড়ু সরকার কখনোই এমন কোনো নীতির সমর্থন করবে না, যেখানে ছাত্রদের উপর ভাষার বোঝা চাপানো হবে।
তাঁর মতে, কর্ণাটকের উদাহরণ সামনে রয়েছে, যেখানে ৯০,০০০ ছাত্রের ফেল করা প্রমাণ করে যে, জোর করে চাপানো ভাষা নীতির কী প্রভাব হতে পারে। এই পরিস্থিতি এড়াতে ছাত্রদের মাতৃভাষা বা প্রাথমিক ভাষায় শিক্ষা প্রদান করা সবচেয়ে ভালো হবে।
কেন্দ্রের উপর তহবিল বিতরণে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী কেন্দ্র সরকারের উপর শিক্ষা তহবিল বিতরণের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন যে, তামিলনাড়ু এবং কেরালার মতো রাজ্য, যারা শিক্ষার ক্ষেত্রে ভালো ফল করছে, তাদের কেন্দ্র সরকার উপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন যে, কেন্দ্রের ‘সমগ্র শিক্ষা অভিযান’ প্রকল্পের অধীনে মোট ২০টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কেরালা সমস্ত ২০টি লক্ষ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে, যেখানে তামিলনাড়ু ১৯টি লক্ষ্যে এগিয়ে রয়েছে। তা সত্ত্বেও, এই রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা তহবিল দেওয়া হচ্ছে না।
অমবিল মহেশ প্রশ্ন তোলেন যে, যখন রাজ্য সরকারগুলি একটি কার্যকর শিক্ষা মডেল পেশ করছে, তখন কেন্দ্র সরকার সেই মডেলগুলি গ্রহণ করার পরিবর্তে কেন উপেক্ষা করছে। তিনি বলেন যে, এটি কেবল শিক্ষার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব দেখায় না, বরং কেন্দ্রের অভিপ্রায় নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্ট্যালিনের অবস্থানের সমর্থন
মন্ত্রী এই কথাটি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্ট্যালিন আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তামিলনাড়ু সরকার ছাত্রদের শিক্ষা নিয়ে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাজ্য সরকার শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ শিক্ষাগত খরচ বহন করবে, যাতে কোনো ছাত্রকে পড়া মাঝপথে ছাড়তে না হয়।