ভারত সরকার মে ২০২৫ সালে ১৩টি শহরে চিপযুক্ত ই-পাসপোর্ট চালু করেছে, যা দেশের পাসপোর্ট ব্যবস্থাকে ডিজিটাল ও সুরক্ষিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্যোগ ‘পাসপোর্ট সেবা কর্মসূচী ২.0’ এর অধীনে চালু করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে আরও নিরাপদ ও সুবিধাজনক করা।
কোন কোন শহরে চালু হয়েছে?
বর্তমানে ই-পাসপোর্ট নিম্নলিখিত ১৩টি শহরে জারি করা হচ্ছে:
- দিল্লি
- চেন্নাই
- হায়দ্রাবাদ
- নাগপুর
- ভুবনেশ্বর
- গোয়া
- জম্মু
- শিমলা
- রায়পুর
- অমৃতসর
- জয়পুর
- সুরাট
- রাঞ্চি
সরকারের পরিকল্পনা ২০২৫ সালের মধ্যভাগের মধ্যে এই সুবিধা সারা দেশে চালু করা।
ই-পাসপোর্টের বৈশিষ্ট্য
- RFID চিপ ও অ্যান্টেনা: পাসপোর্টের কভারে একটি RFID চিপ ও অ্যান্টেনা এম্বেডেড থাকে, যা ধারকের ব্যক্তিগত ও বায়োমেট্রিক তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করে।
- সুরক্ষা প্রোটোকল: ই-পাসপোর্টে বেসিক অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (BAC), প্যাসিভ অথেনটিকেশন (PA), এবং এক্সটেন্ডেড অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (EAC) যেসব আন্তর্জাতিক সুরক্ষা মান অনুসরণ করা হয়েছে, যা ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
- বায়োমেট্রিক ডেটা: পাসপোর্টে ধারকের ছবি, আঙ্গুলের ছাপ, জন্ম তারিখ, এবং পাসপোর্ট নম্বর ইত্যাদি তথ্য এনক্রিপ্টেড ফরম্যাটে সংরক্ষিত থাকে।
- ইলেকট্রনিক পরিচয়: ই-পাসপোর্টের কভারে একটি ছোট সোনালী চিপ প্রতীক থাকে, যার মাধ্যমে এর পরিচয় করা যায়।
যাত্রীদের জন্য সুবিধা
- দ্রুত ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া: ই-পাসপোর্ট ধারকদের ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে, যার ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হবে না।
- উচ্চ সুরক্ষা: এনক্রিপ্টেড ডেটা ও বায়োমেট্রিক তথ্যের কারণে পাসপোর্ট নকল বা ছিনতাইয়ের সম্ভাবনা কমে যায়।
- আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ: ই-পাসপোর্ট ICAO (International Civil Aviation Organization) এর মান অনুসরণ করে, যার ফলে এটি আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশেও বৈধ।
আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইন আবেদন: ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ঐতিহ্যগত পাসপোর্টের মতোই। আবেদনকারীকে পাসপোর্ট সেবা পোর্টালে গিয়ে আবেদন করতে হবে এবং নিকটতম পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে বায়োমেট্রিক ডেটা প্রদান করতে হবে।
নির্মাণ: সকল ই-পাসপোর্ট নাসিক অবস্থিত ইন্ডিয়া সিকিউরিটি প্রেসে তৈরি করা হয়, যা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অধীনে।
বর্তমান পাসপোর্ট ধারীদের জন্য তথ্য
- বর্তমান পাসপোর্টের বৈধতা: বর্তমান ঐতিহ্যগত পাসপোর্ট তার বৈধতা সময়কাল পর্যন্ত বৈধ থাকবে।
- ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন: যদি বর্তমান পাসপোর্ট ধারী ই-পাসপোর্ট পেতে চান, তাহলে তারা পাসপোর্ট সেবা পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
ই-পাসপোর্টের চালু ভারতের ডিজিটাল রূপান্তরের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধুমাত্র যাত্রীদের জন্য ভ্রমণকে আরও নিরাপদ ও সুবিধাজনক করে না, বরং দেশকেও বিশ্বমানের সাথে তাল মিলিয়ে নেয়।