রাজস্থানের কোটা শহর থেকে আরেকটি মর্মান্তিক সংবাদ এসেছে। এখানে NEET (NEET) পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন একজন ১৮ বছরের ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। ওই ছাত্র বিহারের ছাপরা জেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং গত এক বছর ধরে কোটায় থেকে মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এই ঘটনা আবারও কোটায় কোচিং করছে এমন ছাত্রদের মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আসুন এই সংবাদটি সহজ এবং বোধগম্য ভাষায় সম্পূর্ণরূপে জেনে নেই। কোটায় আরেকজন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে। ছাত্রটি তার রুমে পঙ্খার সাথে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এবং একটি সুইসাইড নোটে পরিবার এবং মানুষদের কাছে আবেদন করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
ঘটনা কোথায় এবং কখন ঘটেছে?
এই মর্মান্তিক ঘটনা কোটা শহরের কুনহাড়ি এলাকায় অবস্থিত একটি হস্টেলে ঘটেছে। কোটা সারা দেশে ‘কোচিং হাব’ নামে পরিচিত, যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ছাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিকেলের প্রস্তুতির জন্য আসে। যে ছাত্র আত্মহত্যা করেছে, সেও NEET-এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং সম্প্রতি সে পরীক্ষাও দিয়েছে।
রবিবার সকালে ঘটনার খবর পাওয়া যায় যখন ছাত্রের রুম থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দরজা বন্ধ ছিল এবং ভিতর থেকে কোনো আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল না। হস্টেল কর্মী ও পুলিশ যখন দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে, তখন দেখা যায় ছাত্রটি পঙ্খার সাথে ঝুলছে।
ছাত্রটি তার সুইসাইড নোটে কী লিখেছিল?
সুইসাইড নোটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল ছাত্রটি স্পষ্টভাবে লিখেছিল যে তার মৃত্যুর জন্য NEET পরীক্ষা বা অন্য কাউকে দোষ দেওয়া উচিত নয়। সে বলেছিল সে নিজের ইচ্ছায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এছাড়াও ছাত্রটি অনুরোধ করেছিল যে তার নাম, ছবি এবং পরিবারের তথ্য মিডিয়ায় প্রকাশ করা হবে না। এর থেকে স্পষ্ট হয় যে সে চাইত না তার মৃত্যুকে কেউ ‘নিউজ আইটেম’ করে তুলুক।
ঘটনার কীভাবে খবর পাওয়া গেল?
জানা গেছে, আত্মহত্যা করার আগে ছাত্রটি তার বোনকে একটি মেসেজ পাঠিয়েছিল। সেই মেসেজ পড়ে বোনের কিছু সন্দেহ হয়। তারপর সে অবিলম্বে হস্টেল কর্তৃপক্ষকে ফোন করে জানায়।
এরপর হস্টেল কর্মীরা ছাত্রের রুমের দরজায় ধাক্কা দেয়, কিন্তু ভিতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
চিন্তা বেড়ে গেলে পুলিশকে ডাকা হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে ছাত্রটি মৃত। দৃশ্যটি ছিল বেশ দুঃখজনক এবং সবাইকে শক দিয়েছিল।
ছাত্রটির আগে আচরণ কেমন ছিল?
পুলিশ ও হস্টেল কর্মীদের মতে, আত্মহত্যার এক রাত আগে ছাত্রটির আচরণ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল। সে বন্ধুদের সাথে খেয়েছে এবং কথা বলেছে, যার ফলে কারোর কাছেই এমন ধারণা হয়নি যে সে এত গুরুতর অবস্থায় আছে। এটি দেখায় যে অনেক সময় ছাত্ররা তাদের মানসিক অবস্থা লুকিয়ে রাখে।
পুলিশের তদন্ত চলছে
পুলিশ ছাত্রের মোবাইল, চ্যাট এবং হস্টেলে পাওয়া নথিপত্রের তদন্ত শুরু করেছে। তারা জানার চেষ্টা করছে আর কোনো কারণ আছে কি না, যার জন্য ছাত্রটি মানসিকভাবে বিরক্ত ছিল।
পুলিশের দাবি, সুইসাইড নোটে যে কথাগুলো লেখা আছে, সেগুলো সঠিক হতে পারে, তবে তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।
কোটায় আত্মহত্যার ঘটনার বৃদ্ধি – একটি গুরুতর উদ্বেগ
কোটায় প্রতি বছর ছাত্রদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। ২০২৩ সালে এখানে ২৬ জন ছাত্র আত্মহত্যা করেছিল এবং ২০২৪ সালেও এই সংখ্যা কমেনি।
এই ঘটনাগুলির পিছনে সাধারণত মানসিক চাপ, একাকীত্ব, বাড়ি থেকে দূরে থাকার কষ্ট এবং বাবা-মায়ের প্রত্যাশার বোঝা দেখা যায়।
যদিও এই ঘটনায় ছাত্রটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তার আত্মহত্যার কারণ পরীক্ষা নয়, তবুও এই ঘটনা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে যে আসলে কেন বাচ্চারা এত চাপ অনুভব করে যে তাদের আত্মহত্যা করতে হয়?