আবহাওয়ার খবর: দিল্লি-এনসিআর এবং উত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়া হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে। দিনের বেলায় তীব্র রোদ মানুষকে শীত থেকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও, সকাল ও রাতে ঘন কুয়াশা শীতের প্রভাব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, আগামী কয়েকদিনে শীতের প্রকোপ আবারও ফিরে আসতে পারে। দিল্লিতে রোদে তাপমাত্রা বেড়েছে, কিন্তু পাহাড়ে বরফপাত এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনায় শীতের আবার ফিরে আসার আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
কী তীব্র শীতের প্রকোপ শেষ হয়ে গেছে?
জানুয়ারী মাসে দিল্লি-এনসিআর সহ উত্তর ভারতের অনেক অঞ্চলে সূর্যের আলো তীব্র শীত থেকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। বিশেষ করে দিল্লিতে গত দুদিন ধরে তীব্র রোদ দেখা গেছে, যার ফলে মানুষ শীত ও কাঁপুনি থেকে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। তবে, আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে যে আগামী এক থেকে দুই দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আবারও নেমে যেতে পারে। পাহাড়ে বরফপাতের ফলে সমতল অঞ্চলে শীতের প্রকোপ ফিরে আসতে পারে। আইএমডি (ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ)-এর মতে, দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে।
তাপমাত্রা কমার ফলে শীতের প্রভাব বাড়বে
আবহাওয়া দপ্তরের মতে, পাহাড়ে বরফপাতের ফলে উত্তর-পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব ভারতে তাপমাত্রা কমতে পারে। এর ফলে শীতের প্রভাব আরও বাড়তে পারে। বিশেষ করে উত্তর ভারতের অঞ্চলগুলিতে তাপমাত্রা আবারও কমতে পারে। বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে বর্তমানে আবহাওয়া পরিষ্কার, কিন্তু আগামী দিনগুলিতে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে শীতের প্রকোপ ফিরে আসতে পারে। তাই, আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখে আপনার সোয়েটার, জ্যাকেট এবং উষ্ণ কাপড় তৈরি রাখুন, কারণ শীতের প্রকোপ এখনও শেষ হয়নি।
রাজস্থানে স্বস্তি, কিন্তু বৃষ্টির সতর্কতা
রাজস্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মানুষ শীত থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের অনেক অঞ্চলে ভালো রোদ দেখা গেছে, যার ফলে আবহাওয়ায় হালকা উষ্ণতা অনুভূত হয়েছে। তবে, আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ২২ জানুয়ারী থেকে পশ্চিমী বায়ু সক্রিয় হওয়ার ফলে রাজস্থানের কিছু অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে। জয়পুর, বিকানের এবং ভরতপুর অঞ্চলে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অঞ্চলগুলিতে তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে শীতের অনুভূতিও বৃদ্ধি পেতে পারে।
কাশ্মীরে বরফপাত এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি
কাশ্মীরের গুলমর্গ এবং সোনমর্গের মতো পর্যটন স্থানগুলিতে তাজা বরফপাত দেখা গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে তীব্র শীত থেকে স্বস্তি মিলেছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, শ্রীনগর, গুলমর্গ এবং সোনমর্গে বরফপাত এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে শীতের প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে বরফপাতের প্রভাব উপত্যকার তাপমাত্রায় পড়েছে। এই বরফপাত আগামী এক-দুই দিন চলতে পারে।
তামিলনাড়ুতে বৃষ্টি ও ঝড়ের সতর্কতা
দক্ষিণ ভারতেও আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। তামিলনাড়ুর অনেক অঞ্চলে ২২ জানুয়ারী ঝড় এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএমসি) তিরুনেলভেলি, তেনকাশি, তুতুকুডি, দিন্দিগুল এবং কন্যাকুমারী জেলায় বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে। সমুদ্রে মাছ ধরার জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে, কারণ বাতাসের গতি ৩৫-৪৫ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে, যা ঝড়ের অবস্থা তৈরি করতে পারে।
সমুদ্রে ঝড়ের আশঙ্কা
আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে যে দক্ষিণ তামিলনাড়ু উপকূল, কোমোরিন অঞ্চল এবং মান্নার উপসাগরে বাতাসের গতি ৫৫ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তাই, জেলেদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সমুদ্র থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত এবং তীব্র বাতাসের প্রভাব আগামী দুই দিন চলতে পারে।
শীত ও বৃষ্টির প্রভাব
যদি আপনি দিল্লি-এনসিআর অথবা উত্তর ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে বাস করেন, তাহলে আবহাওয়ার এই পরিবর্তনশীলতা মাথায় রেখে আপনার উষ্ণ কাপড়, সোয়েটার এবং জ্যাকেট তৈরি রাখুন। পাহাড়ে বরফপাত এবং বৃষ্টিপাতের প্রভাব সমতল অঞ্চলে পড়তে পারে, তাই উষ্ণ কাপড় ছাড়া বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকুন। কাশ্মীর, রাজস্থান এবং তামিলনাড়ুর অঞ্চলগুলিতেও আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে, যা শীত এবং বৃষ্টিপাতের প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
আগামী কয়েক দিনে আবহাওয়ায় আরও পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে উত্তর ভারতে শীতের প্রত্যাবর্তন এবং বৃষ্টিপাতের সতর্কতা রয়েছে। এই সব পরিবর্তন মাথায় রেখে, আপনার ভ্রমণ এবং দৈনন্দিন কাজের পরিকল্পনা করার সময় আবহাওয়ার তথ্য অবশ্যই দেখে নিন।