ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও অর্থনীতিতে প্রচণ্ড অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ব্যবসা যুদ্ধের কারণে। এর ফলে অনেক দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বেড়েছে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলেও ব্যাঘাত ঘটেছে।
US News: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি বিশ্বব্যাপী ব্যবসাকে যেভাবে প্রভাবিত করেছে, তা কেবলমাত্র আমেরিকান বাজারকেই নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনীতিকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। ট্রাম্পের "লেটস মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন" স্লোগানের সাথে শুরু হওয়া ব্যবসা যুদ্ধ কি আসলে তাঁর কৌশলের অংশ ছিল, নাকি এটি কেবলমাত্র একটি নেতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে?
১৫ এপ্রিল ২০১৮ সালে চীনের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া ব্যবসা যুদ্ধ ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য অনেক দিক থেকে চ্যালেঞ্জিং ছিল। চীনের উপর প্রচুর ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকান শিল্পকে উন্নীত করা এবং চীন থেকে প্রযুক্তিগত চুরি বন্ধ করা। কিন্তু, এই ট্যারিফ কি আসলে আমেরিকার অর্থনীতির জন্য উপকারী প্রমাণিত হয়েছে?
অর্থনীতিতে প্রভাব
ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর সমানভাবে ট্যারিফ আরোপ করেছিলেন, যার ফলে ব্যবসায় অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় পণ্য থেকে শুরু করে ইউরোপীয় কোম্পানি পর্যন্ত সবাই তাদের ক্ষতি অনুভব করেছে। ভারতীয় বাজারের কথা বললে, এখানকার অনেক পণ্যের উপর প্রচুর শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানির পথ কঠিন হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক তথ্য দেখায় যে, আমেরিকার ট্যারিফ নীতির কারণে ভারত প্রায় তিনগুণ বেশি মূলধনের ক্ষতি করেছে।
সমর্থন ও বিরোধিতা
ট্রাম্পের সমর্থকরা তাকে 'আর্ট অফ ডিল' এর দক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করেন, অন্যদিকে বিরোধীরা তাঁর উপহাস করে বলেন যে 'বাঁদরের হাতে উস্তরা'র মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকান শেয়ার বাজারে উত্থান-পতনের ধারা শুরু হয়েছে। কখনো বাজার আকাশে উঠেছে, কখনো নীচে নেমেছে। তবুও ট্রাম্পের পরিকল্পনা তাকে পিছিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে এবং তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
নিরাশা ও জটিলতা
ট্রাম্পের ব্যবসা যুদ্ধ কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না, বরং এটি একটি 'বড় খেলা' হয়ে উঠেছিল। আসলে, তিনি কেবলমাত্র চীন ও অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সামরিক অভিযান শুরু করেননি, বরং এই পুরো বিবাদ বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। ট্রাম্পের কাজের ধরণ বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যার ফলে বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারী ও সরকারের কাছে সমস্যা বেড়েছে।
ভারতের জন্য সুযোগ
বর্তমানে, মার্কিন-চীন ব্যবসা যুদ্ধ ভারতের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে। যেহেতু অনেক বহুজাতিক কোম্পানি এখন চীন থেকে তাদের উৎপাদন সরিয়ে নতুন স্থানে বিনিয়োগ করছে, ভারতের কাছে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ এসেছে। তবে, এই সুযোগ কেবলমাত্র একটি স্লোগান হিসেবেই থেকে যাবে না। আমাদের কেবলমাত্র প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজন নয়, বরং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে।