পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞদের দাবি: ২০৩৪ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন মোদী

🎧 Listen in Audio
0:00

পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এদিকে, পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা একটি বিতর্কিত দাবি করেছেন যে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই থাকবেন। পাকিস্তানের সাবেক হাই কমিশনার আবদুল বাসিত এবং বিশেষজ্ঞ কামর চীমা এই দাবি করেছেন।

নয়াদিল্লি: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি বেড়ে যাওয়া উত্তেজনার মধ্যে, পাকিস্তানের কিছু প্রভাবশালী বিশেষজ্ঞ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীতি ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক হাই কমিশনার আবদুল বাসিত এবং বিশেষজ্ঞ কামর চীমা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একজন প্রভাবশালী ও স্থিতিশীল নেতা হিসেবে চিত্রিত করেছেন, যাঁর নেতৃত্ব আগামী বছরগুলিতে দেশের জন্য উপকারী হবে। এই বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত কেউ নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বকে ভারতে সরিয়ে দিতে পারবে না।

বাসিতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা

পাকিস্তানের সাবেক হাই কমিশনার আবদুল বাসিত, যিনি সাধারণত ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্যের জন্য পরিচিত, এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছেন। তিনি মোদীর "মন কি বাত" রেডিও অনুষ্ঠানের সাম্প্রতিক পর্বের প্রশংসা করে বলেছেন যে মোদীর বক্তৃতাগুলি প্রভাবশালী। তিনি জানিয়েছেন যে মোদীর জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাঁর শক্তি তাঁকে ভারতীয় রাজনীতিতে একটি স্থায়িত্ব প্রদান করেছে।

বাসিত বলেছেন, "যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে নরেন্দ্র মোদী কতক্ষণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন, তাহলে আমার উত্তর হবে যে পরবর্তী নির্বাচন ২০২৯ সালে হবে এবং আমার কোনো চ্যালেঞ্জ দেখা যায় না। তিনি এখনও পুরো শক্তি নিয়ে রাজনীতি করছেন এবং বিরোধীদের তাঁকে চ্যালেঞ্জ করার কোনো প্রভাবশালী নেতা নেই।"

রাহুল গান্ধী সম্পর্কে মন্তব্য

আবদুল বাসিত বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন, যাঁর সম্পর্কে তাঁর মতামত যে রাহুল গান্ধীর মধ্যে সেই ধরণের নেতৃত্বের গুণাবলী নেই, যা একজন প্রধান নেতার মধ্যে থাকা উচিত। তিনি আরও বলেছেন যে কংগ্রেস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দল, যেমন নীতিশ কুমার, মমতা ব্যানার্জি এবং সমাজবাদী পার্টি, জাতীয় পর্যায়ে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-কে চ্যালেঞ্জ করার অবস্থানে নেই।

২০৩৪ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর আধিপত্য

কামর চীমা, যিনি একজন প্রধান পাকিস্তানি কৌশলগত বিশেষজ্ঞ, তিনিও মোদীর নেতৃত্ব সম্পর্কে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন এবং দাবি করেছেন যে নরেন্দ্র মোদী ২০৩৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। চীমা পাকিস্তান সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন যে তাদের ভারত এবং মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হবে, কারণ মোদী ভারতের প্রতি একটি স্পষ্ট এবং দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেছেন, "পাকিস্তান সরকার মোদীকে বোঝার জন্য অনেক সময় নষ্ট করেছে। মোদী ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং তিনি একবারই পাকিস্তান সফর করেছেন। এখন পাকিস্তানকে বুঝতে হবে যে মোদী কোনওভাবেই পাকিস্তানের সাথে কোনো আলোচনার ইচ্ছুক নন।"

পাকিস্তান সরকারের উপর আক্রমণ

কামর চীমা পাকিস্তান সরকারকেও সমালোচনা করেছেন, বিশেষ করে ইমরান খান ও শেখ হাসিনার সরকারের নীতিগুলিকে। তিনি বলেছেন যে পাকিস্তান সরকার সর্বদা ভারতের বিরুদ্ধে একটি "অনুরোধ মোড" গ্রহণ করেছে, যখন ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অবস্থান দৃঢ়ভাবে রেখেছে। তিনি আরও বলেছেন যে ভারত অনেক দেশ থেকে সমর্থন পেয়েছে, যখন পাকিস্তান কেবলমাত্র কিছু দেশ থেকেই সমর্থন সংগ্রহে সফল হয়েছে।

চীমা পাকিস্তানকে পরামর্শ দিয়েছেন যে তাদের তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে এবং মোদীর অবস্থান বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। তিনি বলেছেন, "যদি পাকিস্তান তাদের নীতি পরিবর্তন না করে, তাহলে আগামী নয় বছরে তাদের আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে। নরেন্দ্র মোদীর কাছে সেই ক্ষমতা রয়েছে যা তাকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখবে।"

ভারতের আন্তর্জাতিক অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য

কামর চীমা আরও বলেছেন যে ভারতের এখন একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে, যার মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আমেরিকা এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ রয়েছে। পাকিস্তানকে বুঝতে হবে যে ভারত তার কূটনৈতিক অবস্থান খুব দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানকে তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে, বিশেষ করে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং চীন যে মতো প্রধান দেশগুলির সাথে আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেছেন, "পাকিস্তানকে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করার প্রয়োজন, নয়তো বিশ্বে তাদের অবস্থান দুর্বল হতে থাকবে।"

আবদুল বাসিতের মোদীর সমর্থনে বক্তব্য

আবদুল বাসিত বলেছেন, "নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখা যায় না। তিনি কেবলমাত্র একজন শক্তিশালী নেতা নন, বরং তিনি দেশের নীতি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছেন। তাঁর প্রভাব ভারতীয় রাজনীতিতে গভীর, এবং আমার মনে হয় ২০২৯ সালের পরেও তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন।"

Leave a comment