ইসরায়েলি হামলায় ইরানের গোয়েন্দা প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মৃত্যু, খামেনেই বঙ্কারে

🎧 Listen in Audio
0:00

ইসরায়েলের হামলায় ইরানের গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তাঁর ডেপুটির মৃত্যু হয়েছে। সুপ্রিম লিডার খামেনেইকে বঙ্কারে আশ্রয় নিতে হয়েছে। ইরানের গোয়েন্দা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েল-ইরান: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ইরানের গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তাঁর ডেপুটি হাসান মোহাকিক এই হামলায় নিহত হয়েছেন।

ইরানি গোয়েন্দা ব্যবস্থাকে ভয়াবহ আঘাত

আইআরজিসি-সম্পর্কিত ইরানি সরকারি সংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, তেহরানে এই হামলায় আরেকজন উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসিন বাঘেরিও নিহত হয়েছেন। এই হামলা ইরানের সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যবস্থাকে গভীর আঘাত করেছে। বিশেষ করে আইআরজিসি-র মতো শক্তিশালী সামরিক ইউনিটের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মৃত্যু দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।

খামেনেইকে আন্ডারগ্রাউন্ড বঙ্কারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে

ইসরায়েলি হামলার পর সবচেয়ে বড় খবর হলো, ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইকে রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব অংশে লভিজানে অবস্থিত একটি আন্ডারগ্রাউন্ড বঙ্কারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। টাইমস অফ ইসরায়েলের মতে, খামেনেই তাঁর সম্পূর্ণ পরিবারসহ সেখানে অবস্থান করছেন। এটি সেই বঙ্কারই যেখানে ২০২৪ সালের এপ্রিল ও অক্টোবর মাসেও ইসরায়েলি হামলার সময় খামেনেই আশ্রয় নিয়েছিলেন।

প্রথম রাতে কেন খামেনেইকে লক্ষ্য করা হয়নি?

ইসরায়েলের পরিকল্পনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অভিযানের প্রথম রাতে খামেনেইকে লক্ষ্য করেনি। উদ্দেশ্য ছিল ইরানকে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ (ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট) পরিকল্পনা ত্যাগ করার শেষ সুযোগ দেওয়া। এই কৌশল ইঙ্গিত করে যে ইসরায়েল এখনও ইরানকে খোলাখুলিভাবে পারমাণবিক শক্তি হতে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টায় শেষ সুযোগ দিতে চায়।

অস্ত্র নির্মাণ ইউনিটগুলিতে হামলা

ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা ইরানে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল ইরানি অস্ত্র নির্মাণ ক্ষমতা ধ্বংস করা। এই অভিযানে আইআরজিসি, তার কুদস ফোর্স এবং ইরানি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইডিএফ-এর মতে, অস্ত্র নির্মাণ সংক্রান্ত অনেক কারখানাকে লক্ষ্য করে তাদের সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।

ইরানের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা

যদিও ইরান এখনও পর্যন্ত কোনও প্রত্যক্ষ প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়নি, তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী দিনগুলিতে ইরানি নেতৃত্ব কোনও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। খামেনেই-র মতো ক্ষমতাশালী নেতাকে বঙ্কারে স্থানান্তর করার ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে ইরান আরও হামলার আশঙ্কা করছে এবং উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে।

Leave a comment