উত্তরাখণ্ডে যোগ নীতি ঘোষণা: মুখ্যমন্ত্রীর ৮০০ জনের সাথে যোগাভ্যাস

🎧 Listen in Audio
0:00

উত্তরাখণ্ডের কর্ণপ্রয়াগের ভরাড়ীসাইন এ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে একটি বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ৮০০-রও অধিক লোকের সাথে সম্মিলিত যোগাভ্যাস করেন।

উত্তরাখণ্ড: আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের প্রথম ‘যোগ নীতি’ ঘোষণা করে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কর্ণপ্রয়াগের ভরাড়ীসাইন বিধানসভা প্রাঙ্গণে আয়োজিত রাজ্য-স্তরীয় যোগ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী ৮০০-রও অধিক লোকের সাথে যোগাভ্যাস করে এই নীতির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন।

যখন পুরো বিশ্ব ১১তম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে ভারতের দিকে তাকিয়ে ছিল, তখন দেবভূমি উত্তরাখণ্ড প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার এমন এক সংমিশ্রণ উপস্থাপন করে যা ভারতের যোগ-দর্শনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ধন সিং রাওয়াত, স্থানীয় বিধায়ক অনিল নৌটিয়াল, বিখ্যাত যোগ গুরু ভারত ভূষণ এবং বিশ্বের অনেক দেশের রাজনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরাখণ্ডের যোগ নীতি: একটি সমগ্র দৃষ্টিভঙ্গি

মুখ্যমন্ত্রী ধামী কর্তৃক প্রণীত ‘উত্তরাখণ্ড যোগ নীতি ২০২৫’ রাজ্যকে যোগের বিশ্ব কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। এই নীতির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র যোগকে উৎসাহিত করা নয়, বরং শিক্ষা, পর্যটন, কর্মসংস্থান এবং স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত করে সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, নীতি অনুযায়ী:

  • সরকারি স্কুল এবং কলেজে যোগ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে।
  • রাজ্যে প্রশিক্ষিত যোগ শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে।
  • পর্যটন বিভাগ যোগ পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ প্যাকেজ তৈরি করবে।
  • ঐতিহ্যবাহী যোগ আশ্রমগুলিকে নিবন্ধন করে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
  • যোগ সম্পর্কিত স্টার্টআপ এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

রাজনীতিকরা উত্তরাখণ্ডের প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের রাজনীতিকরা মুখ্যমন্ত্রী এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের এই প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন যে, যোগ একটি বিশ্বব্যাপী ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে এবং উত্তরাখণ্ড, যা যোগের ভূমি, এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ এবং প্রসারিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্রিটেন, জাপান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশের প্রতিনিধিরা যোগ সেশনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের নিজ নিজ ভাষায় যোগের প্রভাব সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন।

যোগ সেশনের পর মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্ব টুইটার) এ তাঁর মতামত ব্যক্ত করে লিখেছেন: যোগ ভারতের প্রাচীনতম এবং গৌরবময় ঐতিহ্যের অমূল্য উপহার। এটি শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী করে না, বরং মানসিক ভারসাম্য এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বে যোগ আজ বিশ্বের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

তিনি এও আবেদন করেছেন যে, প্রতিটি নাগরিককে যোগকে তাদের দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে একটি সুস্থ, সচেতন এবং ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠন সম্ভব হয়।

শিশু এবং যুবকদের মধ্যে যোগের প্রতি উৎসাহ দেখা গেছে

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বিশেষ দিক ছিল যুবক এবং শিশুদের অংশগ্রহণ। মুখ্যমন্ত্রী শিশুদের সাথে কথা বলে তাদের উৎসাহের প্রশংসা করেন। অনেক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে যোগ করতে দেখা গেছে, যা অনুষ্ঠানটিকে সাংস্কৃতিক রঙেও সমৃদ্ধ করেছে। রাজ্য সরকারের এই নীতি দ্বারা শুধু সাধারণ জনগণই উপকৃত হবে না, বরং এটি উত্তরাখণ্ডের যোগ পর্যটনকেও নতুন পরিচয় দেবে।

ঋষিকেশ, হরিদ্বার, উত্তরকাশী এবং বদ্রীনাথের মতো তীর্থস্থানগুলি এখন যোগ গ্রাম এবং আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে উন্নত করা হবে। এতে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য পর্যটনকেই উৎসাহিত করা হবে না, বরং কর্মসংস্থান এবং স্থানীয় অর্থনীতিকেও উন্নত করা হবে।

Leave a comment