সুরজেওয়ালা: বিজেপির ‘ডিএনএ’তেই জাতিগত জনগণনার বিরোধীতা

🎧 Listen in Audio
0:00

৫ই মে ২০২৫-এ একটি সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা জাতিগত জনগণনার প্রতি কংগ্রেসের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর ডিএনএই জাতিগত জনগণনার বিরোধী এবং বিজেপি ও আরএসএস এই বিষয়টিকে শুরু থেকেই নাকচ করে এসেছে।

সুরজেওয়ালা জাতিগত জনগণনা সম্পর্কে: ৫ই মে ২০২৫-এ একটি সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) সবসময় জাতিগত জনগণনার বিরোধিতা করেছে, শুধুমাত্র জনসমক্ষে নয়, আদালতেও এই বিষয়ের বিরোধিতা করেছে। সুরজেওয়ালা আরও বলেন, কংগ্রেস ২০১১ সালে জাতিগত জনগণনা শুরু করেছিল, কিন্তু বিজেপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তা বাতিল করে দিয়েছে।

সুরজেওয়ালার অভিযোগ: বিজেপির ডিএনএ জাতিগত জনগণনার বিরোধী

সংবাদ সম্মেলনের সময় কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, "বিজেপি ও আরএসএস-এর ডিএনএ জাতিগত জনগণনার বিরোধী। ২০১১ সালে কংগ্রেস জাতিগত জনগণনা শুরু করেছিল এবং ২০১৫ সালে এর প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সেই প্রতিবেদন বাতিল করে দিয়েছে।" সুরজেওয়ালা আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপি শুধুমাত্র এই বিষয়ের বিরোধিতা করেনি, বরং আদালতেও মামলা করে জাতিগত জনগণনা বন্ধ করার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে যখন কংগ্রেস জাতিগত জনগণনা শুরু করেছিল, তখন বিজেপি ও আরএসএস এর বিরোধিতা করেছিল। এখন ২০২৫ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর হয়ে গেলে, বিজেপিকে দলিত ও বঞ্চিত শ্রেণীর সামনে নতি স্বীকার করতে হয়েছে।

'জাতিগত জনগণনার মাধ্যমে সমান অধিকারের স্বীকৃতি পাওয়া যাবে'

কংগ্রেস নেতা জাতিগত জনগণনার গুরুত্বের উপরও জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতিগত জনগণনার মাধ্যমে নিশ্চিত করা যাবে যে, সমস্ত সম্প্রদায় সমান অধিকার পাবে। যদি আমরা সমাজে সমতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই, তাহলে জাতিগত জনগণনা অপরিহার্য। সুরজেওয়ালা আরও বলেন, কংগ্রেস সবসময় এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং এর সমর্থন করেছে।

তিনি বিজেপির উপর অভিযোগ করেন যে, জনগণনাকে বাতিল করে দিয়ে পার্টি সমাজে অসমতা বৃদ্ধি করেছে। কংগ্রেসের ধারণা, আমাদের যতটা অংশগ্রহণ আছে, ততটাই আমাদের অংশগ্রহণ থাকা উচিত। এবং তার জন্য জাতিগত জনগণনা অপরিহার্য। সুরজেওয়ালা দাবি করেন যে, বিজেপির সবসময়ই লক্ষ্য ছিল জাতিভিত্তিক তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ না করা, কারণ এতে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা প্রভাবিত হতে পারে।

প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সমর্থন

কংগ্রেস মহাসচিব প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও জাতিগত জনগণনার সমর্থনে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমার ভাই রাহুল গান্ধী এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন এবং ক্রমাগত এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। যেখানে বিজেপি এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী আরও বলেন, বিজেপি সংসদে এই বিষয়ে রাহুল গান্ধীর উপহাস করেছিল, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে।

প্রিয়ঙ্কা বলেন, দেশব্যাপী জনগণের চাপের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারকে জাতিগত জনগণনা স্বচ্ছভাবে করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমি আশা করি, সরকার এই কাজটি সঠিকভাবে করবে এবং সমস্ত সম্প্রদায়ের তথ্য সঠিকভাবে সংগ্রহ করবে।

বিজেপির বিরোধিতা ও সরকারের নমনীয়তা

এই ঘটনা তখন ঘটেছে যখন কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, পরবর্তী জনগণনায় জাতিগত জনগণনা স্বচ্ছভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই ঘোষণা তখন আসে যখন কংগ্রেস এই বিষয়টি জোরেশোরে তুলে ধরেছিল এবং রাহুল গান্ধী এটিকে একটি জাতীয় বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। কংগ্রেস নেতাদের দাবি, জাতিগত জনগণনা সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা যথাযথ অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে।

তবে, বিজেপি ও আরএসএস সবসময় এই বিষয়ের বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, জাতিভিত্তিক জনগণনার ফলে সমাজে আরও বেশি বিভাজন হবে এবং এর ফলে সামাজিক বুনিয়াদে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিজেপির মতে, জনগণনার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র জনসংখ্যার হিসাব করা উচিত, জাতির ভিত্তিতে বিভাজন করা নয়।

Leave a comment