সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ সংশোধনী আইন: কেন্দ্রীয় সরকার দায়ের করল কেভিয়েট

🎧 Listen in Audio
0:00

২০২৫ সালের ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনকে কেন্দ্র করে বেড়ে উঠা বিতর্ক এবং আদালতে ধারাবাহিকভাবে দায়ের হওয়া মামলার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন: কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ২০২৫ সালের ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলাগুলির বিষয়ে কেভিয়েট দায়ের করেছে। সরকার আদালতের কাছে অনুরোধ করেছে যে এই আইন সংক্রান্ত কোনও মামলায় আদেশ জারি করার আগে তাদেরও শোনার সুযোগ দেওয়া হোক। কেভিয়েট একটি আইনি প্রক্রিয়া, যার অধীনে কোনও পক্ষ আদালতে আবেদন করে নিশ্চিত করার জন্য যে তাদের বিরুদ্ধে তাদের কথা শোনার আগেই কোনও আদেশ জারি করা না হয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে আদালতে নিজেদের পক্ষ তুলে ধরা, যাতে একতরফা কোনও সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা না থাকে।

কেভিয়েট কি এবং কেন তা দায়ের করা হয়েছে?

কেভিয়েট একটি আইনি প্রক্রিয়া, যার অধীনে কোনও পক্ষ আদালতের কাছে অনুরোধ করে যে তাদের বিরুদ্ধে কোনও আদেশ জারির আগে তাদের কথা শোনার সুযোগ দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করে আদালতের কাছে অনুরোধ করেছে যে ওয়াকফ আইন সংক্রান্ত সকল মামলায় সরকারের পক্ষ শোনার আগে কোনও অন্তর্বর্তী বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়।

এখন পর্যন্ত এক ডজনের বেশি মামলা দায়ের হয়েছে

ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫-এর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১২টির বেশি মামলা সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছে। এই মামলাগুলিতে দেশের প্রধান মুসলিম সংগঠন, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড, জমিয়ত উলেমা-এ-হিন্দ, সমস্ত কেরাল জমিয়তুল উলেমা-এর পাশাপাশি কংগ্রেসের সাংসদ মোহাম্মদ জাভেদ এবং AIMIM-এর প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসিও জড়িত। মামলাকারীরা এই সংশোধনীকে মুসলমানদের ধর্মীয়, সামাজিক এবং আইনি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলে অভিহিত করেছেন।

শুনানির তারিখ নিয়ে স্থগিতাদেশ অব্যাহত

সূত্রমতে, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাগুলি ১৫ এপ্রিল ২০২৫-এ শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হতে পারে। তবে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই তথ্য দেখা যায়নি। আইনজীবীদের মতে, চূড়ান্ত তালিকা বুধবার আপডেট হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি (CJI) সোমবার এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে বলেছিলেন যে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে পাঠানো ইমেইল এবং অনুরোধগুলি দেখা হবে এবং মামলার অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হবে। এই বিবৃতি এমন সময়ে এসেছে যখন পুরো দেশে ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠেছে।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫ কি?

সম্প্রতি পাশ হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫-এ ওয়াকফ সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ, অধিগ্রহণ এবং প্রশাসনের বিষয়ে বেশ কিছু নতুন বিধান যোগ করা হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই বিধানগুলি কেবল ওয়াকফ বোর্ডগুলির স্বায়ত্তশাসনকে দুর্বল করে না, বরং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকারও কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে, কেন্দ্রের দাবি এই সংশোধনীটি স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়। এখন সকলের দৃষ্টি ১৫ এপ্রিলের দিকে, যখন এই বিতর্কিত আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রথম বড় শুনানি হতে পারে।

Leave a comment