সচিন পাইলটের তীব্র সমালোচনা: রাজস্থান সরকার ‘ধোঁয়া ছাড়া মেশিন’

🎧 Listen in Audio
0:00

রাজস্থানের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এবার কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

টঙ্ক: রাজস্থানে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট পুনরায় সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করেছেন। টঙ্ক জেলার সফরকালে পাইলট কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়কেই আক্রমণ করে বলেন, এটি ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নয়, বরং ধোঁয়া ছাড়া মেশিন। কাজ কিছুই নেই, দেখাদেখি অনেক। তার এই বক্তব্যের ফলে রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং তিনি জনগণের কাছে তাঁর দলের শক্তিশালী চিত্র তৈরির চেষ্টা করছেন।

সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ

পাইলট বলেন, রাজ্য সরকার কেবলমাত্র প্রচারে ব্যস্ত, স্থলস্তরে কোনো ठोस কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, এই সরকার কেবল ধোঁয়া ছাড়ছে, কাজের নামে মাটিতে কিছু দেখা যায় না। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতির কোনো হিসাব নেই। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, এই সরকার ডাবল ইঞ্জিন নয়, ডাবল মুখোশ। একটি দিল্লিতে এবং একটি রাজস্থানে, উভয়ই জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য ব্যস্ত।

দিল্লির নেতাদের খুশি করতে ব্যস্ত রাজ্য সরকার

রাজ্য সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাইলট বলেন, “রাজস্থান সরকার দিল্লির নেতাদের খুশি করতে ব্যস্ত। সাধারণ জনগণের সমস্যা সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে নেই। সরকারি যন্ত্রপাতি কেবলমাত্র ক্ষমতা ধরে রাখা এবং সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।” তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের বহু জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে অথবা অর্ধেক পথে ছেড়ে দিয়েছে, যার ফলে গ্রামীণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সরাসরি ক্ষতি হচ্ছে।

অবাধ অফিসারশাহীর প্রতি ক্ষোভ

সচিন পাইলট রাজ্যের অফিসারশাহীর উপরও কঠোর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, আজকের অবস্থা এমন যে, অফিসাররা ইচ্ছামতো কাজ করছে। মন্ত্রীদের কথা শোনা হচ্ছে না, জনপ্রতিনিধিদের কথাও শোনা হচ্ছে না। অফিসারশাহী অবাধ হয়ে উঠেছে এবং জনগণের সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। পাইলট সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি সরকার প্রশাসনকে জবাবদিহি করে না তোলে, তাহলে আগামী সময়ে তার ভারী মূল্য দিতে হবে।

পাকিস্তান ও চীন নিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ

পাইলট সীমান্ত পারের গুলিবর্ষণ এবং পাকিস্তানের কর্মকাণ্ড নিয়ে কেন্দ্র সরকারের কৌশল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির কথা বলা হচ্ছে এবং কয়েক ঘন্টা পরেই গুলিবর্ষণ শুরু হচ্ছে। এই দ্বিমুখী আচরণ কতদিন সহ্য করা হবে? তিনি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা বলে উল্লেখ করে বলেন, এখন চীন ও তুরস্কের মতো দেশও তার সমর্থন করছে, যা উদ্বেগের বিষয়। আমাদের কেবলমাত্র সীমান্তে নয়, কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকেও সতর্ক থাকার প্রয়োজন।

ভারত-পাকিস্তান তুলনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

ভারত ও পাকিস্তানের তুলনা নিয়ে পাইলট স্পষ্ট করে বলেছেন, আমাদের অর্থনীতি, সামরিক শক্তি এবং বিশ্বব্যাপী মর্যাদা পাকিস্তানের চেয়ে ১১ গুণ বেশি। তারপরও বারবার সেই দেশের সাথে তুলনা করা আমাদের কৌশলের দুর্বলতা প্রমাণ করে। আমাদের নীতিতে স্পষ্টতা এবং আত্মবিশ্বাস দেখানো উচিত। তাঁর সফরকালে সচিন পাইলট টঙ্ক বিধানসভা ক্ষেত্রের ১০টি গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি গ্রামবাসীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তাঁদের সমস্যা শুনেছেন। বিদ্যুৎ সংকট, পানীয় জলের অভাব, সড়ক মেরামত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার অভাব ইত্যাদি সমস্যা সামনে এসেছে।

পাইলট ঘটনাস্থলে উপস্থিত কর্মকর্তাদের এই সমস্যাগুলিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনগণকে আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি তাদের কথা তুলতে থাকবেন। তিনি বলেছেন, পরবর্তী নির্বাচনে জনগণ সত্য বুঝতে পারবে এবং কংগ্রেসকে আবার সুযোগ দেবে।

Leave a comment