রাজা রঘুবংশী হত্যা: মেঘালয় পুলিশে নতুন তথ্য, ষষ্ঠ অভিযুক্তের সন্ধানে তদন্ত

🎧 Listen in Audio
0:00

রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় মেঘালয় পুলিশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। পুলিশ মূল অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশীসহ পাঁচজন অভিযুক্তকে শিলং আদালতে হাজির করেছিল।

ইন্দোর: রাজা রঘুবংশীর হত্যার ঘটনায় চলমান পুলিশ তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে। যে মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন অভিযুক্তকেই সীমাবদ্ধ মনে করা হচ্ছিল, সেখানে এখন ষষ্ঠ জনের প্রবেশ পুরো ঘটনাকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে। এই ‘খুনি হানিমুন’-এর গভীরে কি আরও কোনও লুকিয়ে থাকা মুখ আছে? কি এই পুরো ষড়যন্ত্র আগে থেকে আরও বেশি পরিকল্পিত ছিল? পুলিশ এখন এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

হত্যার গল্প: প্রেম, প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্র

রাজা রঘুবংশী, যার বিয়ে হয়েছিল মাত্র কয়েক সময় আগে, তাঁর হানিমুনের জন্য মেঘালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই হানিমুন খুব তাড়াতাড়ি এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়। পুলিশ এই ঘটনায় রাজার স্ত্রী সোনম রঘুবংশী, তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াहा এবং আরও তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোনম তার স্বামীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

একটি নতুন মিডিয়া রিপোর্ট এবং পুলিশ সূত্র অনুসারে, এই ঘটনায় কেবলমাত্র পাঁচজন নয়, ছয়জন জড়িত থাকতে পারে। যদিও পুলিশ ষষ্ঠ ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেনি, তবে ডিআইজি মারক ইঙ্গিত করে স্বীকার করেছেন যে মামলায় আরও কিছু দিক নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুলিশ সন্দেহ করছে যে হত্যার পরিকল্পনা করার পিছনে আরও একজন মস্তিষ্ক কাজ করছিল, যিনি সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না, কিন্তু পুরো ষড়যন্ত্রটি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন।

ফোন এবং প্রমাণ: প্রযুক্তিগত তদন্তের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছে পুলিশ

ডিআইজি মারক জানিয়েছেন যে সোনম রঘুবংশীর মোবাইল ফোন এখনও পুলিশের হাতে পায়নি। অন্যদিকে, ইন্দোরে ঘটনার দিন পরা পোশাক আরেকজন অভিযুক্তের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে। এই পোশাকগুলি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যার ফলে রক্তের দাগ বা ডিএনএ নমুনা থেকে হত্যার সময়ের পরিস্থিতি স্পষ্ট হতে পারে। এই মামলার আরেকটি আকর্ষণীয় দিক তখন সামনে এসেছে যখন সমস্ত অভিযুক্ত একে অপরকে মাস্টারমাইন্ড বলে দাবি করছে।

সোনম দাবি করছে যে পুরো পরিকল্পনা রাজ কুশওয়াহার ছিল, অন্যদিকে রাজ দাবি করছে যে সোনম তাকে ষড়যন্ত্রে জড়িয়েছে। আরও দুইজন অভিযুক্ত নিজেদেরকে "কেবলমাত্র মাধ্যম" বলে অভিহিত করেছে। এখন পুলিশের পরিকল্পনা হল আদালত থেকে পুলিশ রিমান্ড পাওয়ার পর সমস্ত অভিযুক্তদের आमने-सामने বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা। এই ক্রস-ইন্টারোগেশন থেকে এই বিষয়টির নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে যে হত্যার আসল পরিকল্পনা কে করেছিল এবং কে কোন ভূমিকা পালন করেছিল।

'খুনি হানিমুন': অপরাধের ষড়যন্ত্র নাকি আবেগের খেলা?

এই হত্যাকাণ্ডকে মিডিয়ায় ‘খুনি হানিমুন’ বলা হচ্ছে। সোনম এবং রাজার বিয়ের পর এটি ছিল তাদের হানিমুন ট্রিপ, যা মেঘালয়ের সুন্দর দৃশ্যের মাঝে এক দুঃখজনক ঘটনায় শেষ হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে যে হত্যার পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছিল, এবং হানিমুন ছিল এই ষড়যন্ত্রের আদর্শ আড়াল। মেঘালয় পুলিশ এখন এই মামলাটি মানসিক এবং প্রযুক্তিগত উভয় দিক থেকে তদন্ত করছে। ষষ্ঠ সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা তীব্রতর করা হয়েছে, এবং কল ডিটেইলস, সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট, ব্যাঙ্ক লেনদেনের মতো তথ্যগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a comment