পাওড়ি-সত্যাকাল মোটর রাস্তায় বাস দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু, দম্পতি ও মা-ছেলেও রয়েছে এর মধ্যে। প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালায়।
উত্তরাখণ্ড: পাওড়ি-সত্যাকাল মোটর রাস্তায় ভয়াবহ একটি বাস দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একই গ্রামের এক দম্পতি এবং এক মা-ছেলে রয়েছে। বাসটি পাওড়ি থেকে দেলচৌঁরি যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান চালায়। পুলিশ ও প্রশাসনের দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পাওড়ি জেলা প্রশাসক ডা. আশীষ চৌহান পরিস্থিতির সমীক্ষা করেন এবং তৎক্ষণাত রাহত কাজে ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেন।
দুপুর তিনটায় ঘটে দুর্ঘটনা
দুপুর প্রায় তিনটায় পাওড়ি-সত্যাকাল মোটর রাস্তায় ক্যার্ক ও চুলধারের মধ্যবর্তী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাস হঠাৎ করে অজানা কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাড়া ঢালে পড়ে যায়। বাসটি পড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই যাত্রীদের চিৎকার শুনে স্থানীয় গ্রামবাসীরা সাহায্য করার জন্য ছুটে আসে। গ্রামবাসীরা উদ্ধার অভিযান চালায় এবং নিজস্ব গাড়ি দিয়ে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে।
মৃত ও আহতদের অবস্থা
ঘটনায় পাঁচজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়, এবং ২২ জন আহত হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাদের বেস হাসপাতাল, শ্রীনগরে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন আহতের মৃত্যু হয়। মৃতদের নাম নিম্নরূপ:
সূচীতা (২৫), নরেন্দ্রের স্ত্রী, ডোভা গ্রাম। প্রমীলা, প্রকাশের স্ত্রী, কেসুন্দর গ্রাম। প্রিয়ংশু (১৭), প্রকাশের পুত্র, কেসুন্দর গ্রাম। নগেন্দ্র, কেসুন্দর গ্রাম। সুলোচনা, নগেন্দ্রের স্ত্রী, কেসুন্দর গ্রাম। প্রেম সিংহ।
হাসপাতালে অব্যবস্থা
আহতদের জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে অব্যবস্থায় ভুগতে হয়। ছোটো জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত সুবিধা ছিল না। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা দেয়, যা পাওড়ি জেলা প্রশাসকের অভিযোগের পর মেরামত করা হয়। ১০৮ এ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দল দেরিতে পৌঁছায়।
জেলা প্রশাসকের পরিদর্শন
জেলা প্রশাসক ডা. আশীষ চৌহান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতির সমীক্ষা করেন এবং পুলিশ ও প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন। পাওড়ি উপজেলা প্রশাসক দিবান সিংহ রানা ও পাওড়ি থানার থানা ইনচার্জ অমরজিৎ সিংহও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। জেলা হাসপাতালে ব্যবস্থাপনার তদারকি করেন সিডিও গিরিশ গুণবন্ত ও এসডিএম দীপক রামচন্দ্র সেঠ।
বাসের দলিলপত্র বৈধ
পাওড়ি আরটিও দ্বারিকাপ্রসাদ জানান যে দুর্ঘটনাক্রান্ত বাসের দলিলপত্র, পারমিট, ট্যাক্স, ফিটনেস এবং বীমা বৈধ ছিল। প্রাথমিকভাবে, বাসের ভারসাম্যহীনতাকে দুর্ঘটনার কারণ বলা হচ্ছে। বাসটি ৩০ আসনের ছিল এবং অতিরিক্ত ভারাক্রান্ত ছিল না।
স্থানীয়দের সহায়তা
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় নেতা ও গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। এদের মধ্যে রয়েছে আইসিসি সদস্য রাজপাল বিষ্ঠ, সাবেক জেলা পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় ডবরাল, কংগ্রেস জেলা সভাপতি বিনোদ নেগি এবং আরও অনেকে।
রাহত ও উদ্ধার কাজ
উদ্ধার অভিযানে পাঁচটি ১০৮ এ্যাম্বুলেন্স এবং চারটি অন্যান্য গাড়ি মোতায়েন করা হয়। প্রশাসন জেলা হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে।
প্রশাসন সকল নাগরিককে সতর্কতা অবলম্বন করার এবং মোটর রাস্তায় সাবধানে ভ্রমণ করার আবেদন জানিয়েছে। একইসাথে আহতদের দ্রুত সুস্থ হওয়ার কামনা করা হয়েছে।