অপারেশন সিন্দুর প্রতিনিধিদলে এবার শিবসেনা (UBT)ও যোগ দেবে। প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় প্রতিনিধিদলের অংশ হবেন। উদ্ধব ঠাকরে ও কিরেন রিজিজুর আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লি: অপারেশন সিন্দুর নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে অস্পষ্টতা ছিল, তাতে এখন ঐক্য দেখা যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় শিবসেনা (UBT) নেত্রী ও সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় এখন সেই সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অংশ হবেন, যারা বিদেশে ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থান তুলে ধরবে। কেন্দ্রীয় সংসদীয় কার্যমন্ত্রী কিরেন রিজিজু উদ্ধব ঠাকরে সাথে ফোনে কথা বলার পর এই পরিবর্তন আসে।
এই আলোচনার পর শিবসেনা (UBT) তাদের অবস্থানে নমনীয়তা দেখিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে যে, দলের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় এই প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন।
দল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে – এটি রাজনীতি নয়, জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়
শিবসেনা (UBT) তাদের বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেছে যে এই প্রতিনিধিদল রাজনীতির সাথে জড়িত নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করার চেষ্টা। দলের দাবি, এই উদ্যোগ নিয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে এটি শুধুমাত্র জাতীয় স্বার্থে করা হচ্ছে এবং এই ভিত্তিতেই সরকারকে তাদের সমর্থন দিয়েছে।
পহেলগাম হামলার পর ঐক্যের সময়
শিবসেনা (UBT) আরও বলেছে যে, পহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সকল রাজনৈতিক দল মিলে পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন দিয়েছে। দলটি বলেছে, "আমরা সকলেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সশস্ত্র বাহিনীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করি, এ ব্যাপারে কোনো মতবিরোধ থাকা উচিত নয়।"
তারা এটাও স্বীকার করেছে যে কূটনৈতিক কৌশল ও গোয়েন্দা ব্যবস্থার ব্যর্থতার বিষয়ে তাদের নিজস্ব প্রশ্ন রয়েছে, কিন্তু তারা সেগুলো দেশের ভেতরেই উত্থাপন করবে, বিশ্বব্যাপী ভারতের ইমেজ ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী থাকা জরুরি।
সরকারকে দেওয়া পরামর্শ – প্রতিনিধিদল পরিকল্পনায় আরও স্বচ্ছতা
শিবসেনা (UBT) এই পুরো ঘটনার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে এবং পরামর্শ দিয়েছে যে, এই ধরণের বিদেশী প্রতিনিধিদল নিয়ে দলগুলিকে আগে থেকে আরও স্পষ্ট তথ্য দেওয়া উচিত, যাতে অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি বা প্রতিবাদ এড়ানো যায়। দলটি বলেছে যে তারা জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সর্বদা প্রস্তুত, কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ যদি আরও ভালো হয়, তাহলে আরও বেশি আস্থা তৈরি হয়।
সর্বদলীয় বৈঠকের দাবীও করা হয়েছে
দলটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছে, যাতে পহেলগাম থেকে অপারেশন সিন্দুর পর্যন্ত বিষয়গুলি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করা যায়। তাদের ধারণা, এই ধরণের বৈঠক শুধু দেশে ঐক্যের বার্তা দেবে না, বরং বিশ্বকেও ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী নীতির কথা জানাবে।
টিএমসির অবস্থানও বদলেছে
উল্লেখ্য, সোমবার কিরেন রিজিজু টিএমসি প্রধান মমতা ব্যানার্জির সাথেও কথা বলেছিলেন। এরপর দলটি ডায়মন্ড হারবার থেকে সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জিকে প্রতিনিধিদলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে টিএমসির সাংসদ ইউসুফ পাঠানকে এতে যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।