মোদীজির উদ্বোধন: ভারতের প্রথম আধুনিক ভার্টিক্যাল লিফট সেতু

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রামনবমীর পবিত্র দিবসে আজ তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে সমুদ্রের উপরে নির্মিত দেশের প্রথম আধুনিক ভার্টিক্যাল পাম্বন লিফট সেতুর উদ্বোধন করবেন।

পাম্বন সেতু: পবিত্র রামনবমীর দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে ভারতের প্রথম ও একমাত্র আধুনিক ভার্টিক্যাল লিফট সি ব্রিজ, পাম্বন রেল সেতুর উদ্বোধন করবেন। এই সেতু সমুদ্রীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক অসাধারণ নিদর্শন, যা ভারতের মূল ভূখণ্ডকে চার ধামের একটি, পবিত্র রামেশ্বরম দ্বীপের সাথে যুক্ত করবে।

সমুদ্রের উপরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অসাধারণ নমুনা

প্রায় ₹৫৩৫ কোটি ব্যয়ে নির্মিত এই অত্যাধুনিক পাম্বন সেতু ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো জীর্ণ সেতুর স্থলাভিষিক্ত হবে। এতে ভার্টিক্যাল লিফট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে জাহাজ ও নৌকাগুলি সহজেই চলাচল করার জন্য সেতুর একটি অংশ উপরে তোলা যাবে। এতে রেল ও সমুদ্রপথ পরিবহনের মধ্যে উন্নত সমন্বয় সম্ভব হবে।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেল মন্ত্রণালয় (Ministry of Railways) কর্তৃক অনুমোদিত এই সেতু বর্তমানে ব্রড-গেজ ট্রেনগুলি পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণরূপে সক্ষম এবং সমুদ্রের ঝড়, প্রবল বাতাস এবং লবণাক্ত জলের মতো কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন ট্রেন সেবা এবং জলযানকে সবুজ সংকেত দেখাবেন

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী রামেশ্বরম-তাম্বরাম (চেন্নাই)-এর মধ্যে একটি নতুন ট্রেন সেবা এবং একটি যাত্রী জলযানকে সবুজ সংকেত দেখাবেন। পরে তিনি রামনাথস্বামী মন্দিরে দর্শন ও পূজা করবেন।

তামিলনাড়ুর জন্য ₹৮,৩০০ কোটির বুনিয়াদি প্রকল্প

প্রধানমন্ত্রী তামিলনাড়ুতে ₹৮,৩০০ কোটিরও বেশি রেল ও সড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন। এগুলির মধ্যে রয়েছে:

১. NH-৪০-এর ২৮ কিমি দীর্ঘ ভালাজাপেট-রানীপেট অংশ (চার লেন)
২. NH-৩৩২-এর ২৯ কিমি দীর্ঘ বিলুপ্পুরম-পুদুচেরি অংশ
৩. NH-৩২-এর ৫৭ কিমি দীর্ঘ পুণ্ডিয়ানকুপ্পম-সাত্তানাথপুরম অংশ
৪. NH-৩৬-এর ৪৮ কিমি দীর্ঘ চোলাপুরম-তঞ্জাভুর অংশ

এই মহাসড়কগুলি তীর্থস্থান, পর্যটন স্থান, মেডিকেল কলেজ, বন্দর এবং বাজারের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও, এটি স্থানীয় কৃষক, চর্ম শিল্প এবং ক্ষুদ্র শিল্পের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও উৎসাহিত করবে।

পাম্বন সেতুর কৌশলগত গুরুত্ব

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের মতে, নতুন পাম্বন সেতু (Pamban Bridge) ভারতীয় রেলপথ অবকাঠামোতে একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এটি নিরাপদ, দ্রুত এবং আরও টেকসই রেল পরিবহন নিশ্চিত করবে এবং সরকারের আধুনিকীকরণ ও উপকূলীয় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করবে। পূর্বে ১৯১৪ সালে মিটার গেজ ট্রেনের জন্য নির্মিত এই সেতু ২০০৭ সালে ব্রড গেজের জন্য শক্তিশালী করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এতে মরিচা এবং প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা দেখা দিতে থাকে, যার ফলে এর প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়।

বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিকোণ থেকে পাম্বন সেতু কেন বিশেষ

১. ভারতের প্রথম ভার্টিক্যাল লিফট ডিজাইনের সেতু।
২. রেল ও সমুদ্রপথ পরিবহনের সমন্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
৩. ইউনেস্কো-নামাঙ্কিত ঐতিহ্য স্থানে সহজ প্রবেশাধিকার।
৪. দক্ষিণ ভারতে ইকো-পর্যটন ও তীর্থযাত্রাকে উৎসাহিত করা।

Leave a comment