মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক বড় পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকারের খাদ্য ও জনসেবা মন্ত্রী ধনঞ্জয় মুণ্ডে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর পদত্যাগপত্র মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীসের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যিনি তা রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছেন।
মুম্বই: মহারাষ্ট্রের খাদ্য ও জনসেবা মন্ত্রী ধনঞ্জয় মুণ্ডে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছেন। এই পদত্যাগ বিড জেলার মাসাজোগ গ্রামের প্রধান সন্তোষ দেশমুখের হত্যাকাণ্ডে মুণ্ডের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বল্মিক কারাডের জড়িত থাকার অভিযোগের পরে এসেছে।
এসআইটি কারাডকে এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীস উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার এবং এনসিপি নেতা প্রফুল্ল প্যাটেলের সাথে আলোচনার পরে মুণ্ডেকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস ধনঞ্জয় মুণ্ডেকে পদত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বল্মিক কারাডের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারাডকে বিড জেলার মাসাজোগ গ্রামের প্রধান সন্তোষ দেশমুখের হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীস মুণ্ডেকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছিলেন।
ধনঞ্জয় মুণ্ডে ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগপত্র জমা না দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) প্রশান্ত যোশীর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তা রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত কারাড
প্রধান সন্তোষ দেশমুখের হত্যা ৯ ডিসেম্বর ২০২৩-এ হয়েছিল। অভিযোগ, তিনি জেলায় একটি শক্তি সংস্থাকে লক্ষ্য করে চলমান জোরপূর্বক টাকা আদায় বন্ধ করতে চেয়েছিলেন, সে কারণেই তাঁর হত্যা করা হয়েছে। রাজ্য অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এই ঘটনায় ২৭ ফেব্রুয়ারী ১২০০-র বেশি পাতার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে। এই অভিযোগপত্রে বল্মিক কারাডকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সিআইডি-র তদন্তের পর তিনটি গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সংগঠিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন (মকোকা) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে প্রধানের হত্যা, অবাদা সংস্থা থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের চেষ্টা এবং সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষীর উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আর একজন পলাতক রয়েছে।
ধনঞ্জয় মুণ্ডের পদত্যাগ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বিড জেলার পারলি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এনসিপি (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) এর বিধায়ক। এর আগে তিনি বিডের সংরক্ষক মন্ত্রীও ছিলেন। এখন তাঁর পদত্যাগের ফলে রাজ্য সরকারের সমীকরণে কী প্রভাব পড়বে তা দেখার বিষয়।
