রাজস্থানের কোটপুতলি থেকে একটি হৃদয়বিদারক খবর আসছে। ২৩শে ডিসেম্বর কোটপুতলির একটি বোরওয়েলে পড়ে যাওয়া তিন বছরের চেতনা এখন ৬৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ভিতরে আটকে আছে। উদ্ধারকাজে নিযুক্ত জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) দল ক্রমাগত খনন করে চলেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত মেয়েটিকে নিরাপদে বাইরে আনা সম্ভব হয়নি।
এনডিআরএফ দলের অসুবিধা
রেসকিউ অপারেশনের একটি নতুন আপডেটে এনডিআরএফ-এর ইনচার্জ যোগেশ কুমার মীনা জানিয়েছেন যে, বোরওয়েলে পাইলিং মেশিন দিয়ে খনন করা হচ্ছে, যা এখন পর্যন্ত ১৬০ ফুট পর্যন্ত পৌঁছেছে। দলের মতে, খনন করার সময় ১৫৫ ফুটে পৌঁছানোর পর পাথর পাওয়া যায়, যার কারণে মেশিন পরিবর্তন করতে হয়েছে। এরপর ম্যানুয়ালি খনন করার প্রয়োজন হয়েছে।
এনডিআরএফ দল এখন পর্যন্ত ১৬০ ফুট পর্যন্ত খনন করেছে এবং আশা করা হচ্ছে যে আগামী ৮-৯ ঘণ্টার মধ্যে খনন কাজ শেষ হবে। দলের লক্ষ্য ১৭০ ফুট পর্যন্ত খনন করা, যাতে মেয়েটিকে বাঁচানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
৭০০ ফুট গভীর বোরওয়েলে আটকে চেতনা
জানা গেছে, চেতনা যে বোরওয়েলে আটকে আছে, তার গভীরতা ৭০০ ফুট পর্যন্ত। উদ্ধার কাজের জন্য উত্তরাখণ্ডে টানেল দুর্ঘটনায় সফল উদ্ধার অভিযান চালানো র্যাট মাইনার্সের দলও এখানে এসেছে। র্যাট মাইনার্স দল বোরওয়েল পর্যন্ত অনুভূমিকভাবে খনন করে টানেল তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
এই মুহূর্তে চেতনা ১২০ ফুট গভীরে আটকে আছে এবং উদ্ধারকাজে নিযুক্ত দল ১৫০ ফুট পর্যন্ত খনন করে টানেল তৈরির চেষ্টা করছে।
উদ্ধার কাজের সময় বাধা
উদ্ধার অভিযানের সময় বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। ২৫শে ডিসেম্বর রাতে খনন করার সময় চেতনার চারপাশের মাটি ধসে পড়তে শুরু করে, যার কারণে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা উদ্ধার কাজ বন্ধ রাখতে হয়।
এরপর থেকে মেয়েটির নড়াচড়ার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি, যা অভিভাবকদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্য এবং উদ্ধারকারী দল উভয়ই গভীর উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন।
পরিবারের উদ্বেগ এবং আশা
চেতনার পরিবারের অবস্থা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তার বাবা-মা, যারা ক্রমাগত তাদের মেয়ের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছেন। চেতনার মা-ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কারণ তিনি তার মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে খুব চিন্তিত।
বাবা-মায়ের বক্তব্য, তাদের মেয়ে ছাড়া আর কিছুই নেই, এবং তারা শুধু তাদের মেয়েকে নিরাপদে ঘরে ফিরতে দেখতে চান।
শেষ আশা উদ্ধারকারী দলের প্রচেষ্টা
এখন পর্যন্ত এনডিআরএফ এবং র্যাট মাইনার্স দলের প্রচেষ্টায় কোনো ত্রুটি নেই, এবং পুরো প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল এই উদ্ধার কাজ সফল করার জন্য সম্ভাব্য সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উদ্ধার অভিযানে আসা অসুবিধা সত্ত্বেও, উদ্ধারকাজে নিযুক্ত কর্মীরা তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে মেয়েটিকে দ্রুত নিরাপদে বাইরে আনা যায়।
শেষ আশা, উদ্ধার অভিযান কি সফল হবে?
যদিও উদ্ধারকাজে অনেক অসুবিধা এসেছে, তবুও সকলের আশা এই অপারেশনের শেষ পর্যায়ে চেতনাকে নিরাপদে বাইরে আনা সম্ভব হবে। এনডিআরএফ এবং র্যাট মাইনার্সের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ৮-৯ ঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করবে, যাতে মেয়েটিকে নিরাপদে বাইরে আনা যায়।
উদ্ধার অভিযানের সফল ফলাফলের আশায়, কোটপুতলি এবং আশেপাশের এলাকার মানুষও তাদের প্রার্থনা পাঠাচ্ছেন, যাতে চেতনার কোনো গুরুতর আঘাত না লাগে এবং সে যেন তার বাবা-মায়ের কাছে নিরাপদে ফিরে আসতে পারে।
কোটপুতলিতে চলমান এই উদ্ধার অভিযানের দিকে সকলের নজর রয়েছে। একদিকে যেমন দল তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সবাই এই উদ্ধার কাজের সাফল্যের জন্য অপেক্ষা করছে।