কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে মোদী সরকারের উপর তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পুলওয়ামা সন্ত্রাসবাদী হামলার আগেই গোপনীয় তথ্য পেয়েছিলেন, তারপরেও তিনি সাধারণ মানুষ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।
রাজনীতি: কর্ণাটকে অনুষ্ঠিত 'সমর্পণ সংকল্প র্যালিতে' খড়গে বলেন, হামলার তিন দিন আগেই মোদী গোপনীয় প্রতিবেদন পেয়েছিলেন। এর জন্যই তিনি তার কাশ্মীর সফর বাতিল করেছিলেন। কংগ্রেস নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি প্রধানমন্ত্রীর নিজের নিরাপত্তার চিন্তা ছিল, তাহলে অন্যান্য নাগরিক ও জওয়ানদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কেন নেওয়া হয়নি?
“যদি বিপদ ছিল, তাহলে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করা হয়নি কেন?” – খড়গে
খড়গে র্যালিতে দাবি করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের হামলার আগে থেকেই খবর ছিল। তিনি বলেন, যখন গোপনীয় প্রতিবেদন থেকে হামলার আশঙ্কা ছিল, তখন আপনি আপনার নিরাপত্তার জন্য সফর বাতিল করেছেন, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীকেও সতর্ক করা হয়নি, এবং স্থানীয় পুলিশকেও নয়। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কি শুধুমাত্র নিজের নিরাপত্তা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ?
অপারেশন সিন্দুরকে ‘ছোট যুদ্ধ’ বলে রাজনৈতিক ঝড় তুলেছেন
মল্লিকার্জুন খড়গে ‘অপারেশন সিন্দুর’ কে "খুব ছোট যুদ্ধ" বলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। সরকার যখন এটিকে একটি বড় সামরিক সাফল্য হিসেবে প্রচার করছে, তখনই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন।
কংগ্রেস নেতা বলেন, “আমরা সকলেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, কিন্তু সরকারকে মানুষের নিরাপত্তার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা উচিত ছিল। হামলা হওয়ার পরে অপারেশন করা সমাধান নয়। প্রতিরোধই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
অপারেশন সিন্দুর: ভারতের পাল্টা-কার্যক্রম
উল্লেখ্য, পুলওয়ামা হামলার পর ৭ মে ভারতীয় সেনা ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর আওতায় পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) -এ ৯ টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। ভারতীয় সেনার এই অভিযানে ১০০ এর বেশি সন্ত্রাসীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
সেনার এই কার্যক্রমের পর পাকিস্তান উত্তেজিত হয়ে ভারতের উপর ৪০০-এর বেশি ড্রোন আক্রমণ চালিয়েছে, যা ভারতীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস করেছে। এর জবাবে ভারতও পাকিস্তানের কয়েকটি সামরিক এয়ারবেসকে লক্ষ্য করেছে।
রাজনৈতিক বক্তব্য নাকি দায়িত্বের দাবি?
খড়গের এই বক্তব্যকে কেউ কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে মনে করছেন। বিরোধীদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার শুধুমাত্র জনসংযোগ এবং যুদ্ধোত্তর জয় দেখানোতে ব্যস্ত, হামলা রোধ করার তাদের কৌশল দুর্বল ছিল।
কংগ্রেস এও দাবি করেছে যে, হামলা এবং গোপনীয় তথ্য উপেক্ষা করা নিয়ে একটি সংসদীয় তদন্ত করা উচিত এবং সংসদে এ ব্যাপারে উন্মুক্ত আলোচনা হওয়া উচিত।
“দেশের নিরাপত্তাই প্রথম”: কংগ্রেসের স্পষ্ট বক্তব্য
খড়গে তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করেছেন যে, কংগ্রেস দেশের সাথে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রয়েছে। কিন্তু তিনি একই সাথে বলেছেন যে, প্রশ্ন তোলা গণতন্ত্রের দায়িত্ব।
তিনি বলেছেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে উত্তর চাইবো কেন বিপদের খবর থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের জীবনের চিন্তা করা হয়নি। এটা রাজনীতি নয়, দায়িত্ববোধের দাবি।”