কেদারনাথ ও হেমকুণ্ড সাহেব রোপওয়ে প্রকল্পে ৪০৮১ কোটি টাকা

🎧 Listen in Audio
0:00

উত্তরাখণ্ডে ধর্মীয় পর্যটনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকার কেদারনাথ ও হেমকুণ্ড সাহেব রোপওয়ে প্রকল্পগুলিকে অনুমোদন দিয়েছে। এই দুটি প্রকল্পে মোট প্রায় ৪,০৮১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধ্যক্ষতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কেদারনাথ রোপওয়ে প্রকল্পকে অনুমোদন দিয়েছে, যার মোট ব্যয় ৪,০৮১ কোটি টাকা হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল কেদারনাথ যাওয়া তীর্থযাত্রীদের যাত্রাকে সহজ ও সুগম করা। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, রোপওয়ের নির্মাণের ফলে ভ্রমণের সময় ৬-৭ ঘন্টা থেকে কমে মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে নেমে আসবে।

কেদারনাথ রোপওয়ে: ৩৬ মিনিটে পৌঁছাবেন ভক্তরা

কেদারনাথ ধামে পৌঁছানোর জন্য তীর্থযাত্রীদের আর ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ কঠিন আরোহণের কষ্ট সহ্য করতে হবে না। ৪০৮১.২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে এই রোপওয়ে, যার দৈর্ঘ্য হবে ১২.৯ কিলোমিটার এবং সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথের মধ্যে চালু করা হবে। এর নির্মাণ শেষ হলে, যে যাত্রা ৮-৯ ঘন্টায় সম্পন্ন হতো, তা এখন মাত্র ৩৬ মিনিটে সম্পন্ন হবে। এই রোপওয়ে তৈরি করা হবে ট্রাই-কেবল ডিট্যাচেবল গন্ডোলা (৩এস) প্রযুক্তি দিয়ে, যা পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হবে।

হেমকুণ্ড সাহেব রোপওয়ে: ২১ কিলোমিটারের কঠিন যাত্রা হবে সহজ

হেমকুণ্ড সাহেব, যা শিখদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান, সেখানে পৌঁছানোর যাত্রাও এখন সহজ হতে চলেছে। ২৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে এই রোপওয়ে, যার দৈর্ঘ্য হবে ১২.৪ কিলোমিটার এবং গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুণ্ড সাহেব পর্যন্ত তৈরি করা হবে। এই রোপওয়ে দুটি অংশে নির্মিত হবে, গোবিন্দঘাট থেকে ঘাণ্ডারিয়া (১০.৫৫ কিলোমিটার) পর্যন্ত মোনোকেবল ডিট্যাচেবল গন্ডোলা (এমডিজি) প্রযুক্তি দিয়ে এবং ঘাণ্ডারিয়া থেকে হেমকুণ্ড সাহেব (১.৮৫ কিলোমিটার) পর্যন্ত ট্রাই-কেবল ডিট্যাচেবল গন্ডোলা (৩এস) প্রযুক্তি দিয়ে। এর আগে, তীর্থযাত্রীদের ২১ কিলোমিটারের কঠিন যাত্রা করতে হতো, কিন্তু এখন এই যাত্রা সুগম ও দ্রুত হবে।

পর্যটন পাবে উৎসাহ, স্থানীয়রা পাবে কর্মসংস্থান

এই দুটি রোপওয়ে প্রকল্পের নির্মাণের ফলে ধর্মীয় পর্যটন উৎসাহিত হবে এবং স্থানীয়দের জন্য আতিথেয়তা, ভ্রমণ, খাবার (এফএন্ডবি) এবং পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রতিদিন ১৮,০০০ তীর্থযাত্রী কেদারনাথ রোপওয়ের ব্যবহার করতে পারবে, অন্যদিকে হেমকুণ্ড সাহেব রোপওয়ে প্রতিদিন ১১,০০০ যাত্রীকে ভ্রমণের সুবিধা দেবে।

বর্তমানে কেদারনাথ যাত্রা বছরে ৬-৭ মাসই সম্ভব, কিন্তু রোপওয়ে নির্মাণের পর এটি বছরজুড়ে সুষ্ঠুভাবে চালু থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, রোপওয়ে যাত্রা আরও নিরাপদ, সুবিধাজনক এবং পরিবেশবান্ধব হবে, যার ফলে অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধ্যক্ষতায় অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট বৈঠকে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ রোপওয়ে প্রকল্পকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি উত্তরাখণ্ডে পর্যটনের নতুন যুগের সূচনা করবে এবং তীর্থযাত্রীদের জন্য যাত্রাকে সহজ, নিরাপদ ও আরও সুলভ করে তুলবে।

Leave a comment