যোগী আদিত্যনাথের কঠোর নির্দেশ: ট্যাক্স ফাঁকিকে ‘জাতীয় অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত

যোগী আদিত্যনাথের কঠোর নির্দেশ: ট্যাক্স ফাঁকিকে ‘জাতীয় অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত
🎧 Listen in Audio
0:00

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য কর বিভাগের পর্যালোচনা বৈঠকে ট্যাক্স ফাঁকি ‘জাতীয় অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে তা রোধের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

লখনউ: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আরও একবার তাঁর কঠোর প্রশাসনিক ভাবমূর্তি সুদৃঢ় করেছেন। লখনউ-এ आयोजিত রাজ্য কর বিভাগের পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি ট্যাক্স ফাঁকিকে “জাতীয় অপরাধ” বলে অভিহিত করেছেন এবং জাল কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্যাক্স ফাঁকি কেবল আইনের লঙ্ঘন নয়, এটি রাজ্যের অর্থনীতি এবং উন্নয়ন কাজের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাও।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজস্ব কেবল সংখ্যার খেলা নয়, বরং উত্তরপ্রদেশের ভবিষ্যতের ভিত্তি। এই টাকা গরিবদের জন্য পরিকল্পনা, রাস্তাঘাট, স্কুল এবং হাসপাতালে ব্যয় হয়। এই অবস্থায় যারা ট্যাক্স ফাঁকি করে তারা আসলে রাজ্যের উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।

জাল কোম্পানির কোনও ভালো নেই

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বৈঠকে বিশেষ করে শেল কোম্পানি (Shell Companies)-এর কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই কোম্পানিগুলো ট্যাক্স ব্যবস্থাকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি হয় এবং এদের কোনও বাস্তব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তিনি বলেছেন, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিকে চিহ্নিত করা উচিত এবং তাদের উপর বুলডোজারের মতো অভিযান চালানো উচিত।

তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, এখন কেবল কাগজপত্রই নয়, ভৌত যাচাই (Physical Verification)ই নতুন মানদণ্ড হবে। নতুন নিবন্ধিত কোম্পানির মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যাতে জালিয়াতি রোধ করা যায়।

ট্যাক্স আদায়ের অবস্থা এবং লক্ষ্য

রাজ্যের ট্যাক্স কর্মকর্তারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, এপ্রিল এবং মে ২০২৫-এ জিএসটি এবং ভ্যাট থেকে মোট ১৮,১৬১.৫৯ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। এটি চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬)-এর নির্ধারিত ১,৭৫,৭২৫ কোটি টাকার লক্ষ্যের দিকে একটি ইতিবাচক শুরু বলে মনে করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কিন্তু এটাও সতর্ক করেছেন যে, আগামী পথ সহজ নয়। তিনি কর্মকর্তাদের বলেছেন, "এখন সময় এসেছে আমাদের কেঁদে কসে ওঠা এবং লক্ষ্য ১০০% অর্জন করা।"

কোন কোন অঞ্চল উজ্জ্বল এবং কোন কোন অঞ্চল পিছিয়ে রয়েছে?

মুখ্যমন্ত্রী লখনউর উভয় অঞ্চল, গৌতম বুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ, আগ্রা, অযোধ্যা, মেহরৌণ, বারেলি, ঝাঁসি এবং সাহারানপুরের মতো জেলার প্রশংসা করেছেন যারা ৬০% বা তার বেশি ট্যাক্স আদায় করেছে। অন্যদিকে, বারাণসী-১, প্রয়াগরাজ, কানপুর-২, ইটাওয়া, আলীগড় এবং মুরাদাবাদ অঞ্চলের কর্মসম্পাদনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, যাদের ট্যাক্স আদায় ৫০% এর কম হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এসব অঞ্চলের কর্মকর্তাদের কাছে বিশেষ পর্যালোচনা প্রতিবেদন চেয়েছেন এবং আদায় বৃদ্ধির জন্য সুসংহত কর্মপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী কী বলেছেন?

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কিছু কঠোর কিন্তু স্পষ্ট কথা বলেছেন:

  • যেসব ব্যবসায়ী ট্যাক্স ব্যবস্থার সততা নিয়ে মজা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন, কিন্তু জালিয়াতিকারীদের ক্ষমা করা যাবে না।
  • প্রতিটি অঞ্চলে একটি অভিযান দল গঠন করা হবে যা সন্দেহজনক ফার্মগুলির তদন্ত করবে।
  • সৎ করদাতাদের প্রতিটি পর্যায়ে সুরক্ষা এবং সম্মান পাবে।

আগামী কৌশল

মুখ্যমন্ত্রী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, ক্ষেত্র পর্যায়ে কাজ দ্রুত করা উচিত। এজন্য তিনি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছেন:

  • ক্ষেত্র ভ্রমণ বৃদ্ধি করুন: অতিরিক্ত আয়ুক্ত, যুগ্ম আয়ুক্ত এবং উপ-আয়ুক্ত নিজেই ব্যবসায়ীদের সাথে দেখা করবেন, ট্যাক্স সম্পর্কে সচেতনতা ছড়াবেন এবং তাদের সমস্যাও শুনবেন।
  • প্রযুক্তিগত নজরদারি বৃদ্ধি করুন: ট্যাক্স ফাঁকি রোধের জন্য ডেটা বিশ্লেষণ, AI এবং রিয়েল টাইম মনিটরিং-এর মতো প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
  • বিশেষ অভিযান শুরু করুন: কম কর্মসম্পাদনকারী অঞ্চলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ট্যাক্স আদায়ের নতুন সুযোগ খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে।

Leave a comment